লাইনে বিদ্যুৎ, ছিটকে পড়ে মৃত্যু ঠিকা-কর্মীর
হরমপুরের একটি বাড়িতে মিটার বদলের সময়ে বাইরের হাই ভোল্টেজ লাইন থেকে তার টানছিলেন ঠিকাদার সংস্থার এক কর্মী। কিন্তু সে লাইনে বিদ্যুৎ যে বন্ধ করা হয়নি তা বোধহয় অনুমানই করতে পারেননি তিনি। সোমবার দুপুরে আচমকা ৪৪০ ভোল্টের সেই তারে হাত লেগে যাওয়ায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট প্রায় ২১ ফুট উঁচু খুঁটি থেকে রাস্তায় ছিটকে পড়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি।
বিদ্যুৎ বন্টন দফতরের নয়, প্রদীপ ওঁরাও (৩৬) নামে ওই যুবক স্থানীয় একটি ঠিকাদার সংস্থার হয়ে কাজ করতেন। এ দিন অবশ্য বিদ্যুৎ দফতরের হয়েই কাজ করছিলেন তিনি। তাঁর সঙ্গে বিদ্যুৎ বন্টন দফতরের ৪ জন সরকারি কর্মীও ছিলেন। কিন্তু সরকারি কর্মীদের উপস্থিতি সত্ত্বেও ওই লাইনে বিদ্যুৎ বন্ধ করা হল না কেন?
বিদ্যুৎ বন্টন দফতরের সুপারিন্টেন্ডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার সিদ্ধার্থ রায় বলেন, “কেন ওই লাইনে বিদ্যুৎ ছিল তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তবে প্রাথমিক তদন্তে অনুমান, যে ট্রান্সফর্মারের আইসোলেটর বন্ধ করা দরকার ছিল, তা করা হয়নি বলেই ওই দুর্ঘটনা। ট্রান্সফর্মার বন্ধ করার ক্ষেত্রে বিদ্যুৎ দফতরের কর্মীদের কোনও গাফিলতি রয়েছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ওই ৪ কর্মীকে ইতিমধ্যেই সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়েছে।”
ছবি: গৌতম প্রামাণিক।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এ দিন দুপুর দেড়টা নাগাদ গোরাবাজার টাউন ক্লাবের কাছে কেপি চট্টরাজ রোডের একটি বাড়ির বিদ্যুতের মিটার বদলানো হচ্ছিল। বিদ্যুৎ দফতরের ৪ কর্মীর সঙ্গে সেখানে ছিলেন ঠিকাদার সংস্থার কর্মী প্রদীপবাবু। বিদ্যুতের খুঁটিতে উঠে কাজ করছিলেন প্রদীপবাবুই। কিন্তু সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে কোমরে সেফ্টি বেল্ট, মাথায় হেলমেট কিংবা হাতে গ্লাভস, কিছুই ব্যবহার করেননি প্রদীপবাবু। সেই সঙ্গে বিদ্যুতের যে লাইনে কাজ হচ্ছিল, সেই লাইনের বিদ্যুৎ সরবরাহ বিছিন্ন করতে ট্রান্সফর্মারের আইসোলেটর বন্ধ করাও জরুরি ছিল। এর কোনওটাই যে করা হয়নি তা বিদ্যুৎ বন্টন দফতরের কর্মীদের কথাতেই স্পষ্ট।
প্রত্যক্ষদর্শী লতিফা খাতুন বলেন, “হঠাৎ একটা জলভর্তি বোতল ফাটার মতো আওয়াজ আর চিৎকার শুনে বাইরে বেরিয়ে দেখি, এক জন কর্মী বিদ্যুতের খুঁটিতে ঝুলছে, তাঁর একটি হাত বিদ্যুতের তারে ছুঁয়ে আছে। অন্য কর্মীরা ঘটনাস্থল থেকে কিছুটা দূরে থতমত খেয়ে দাঁড়িয়ে। এক জন ছুটছেন ট্রান্সফর্মার বন্ধ করার জন্য। কিছুক্ষণের মধ্যেই ওই কর্মী বিদ্যুতের খুঁটি থেকে নিচে রাস্তার উপরে সজোরে আছড়ে পড়লেন। তাঁর মাথা ফেটে যায়। ওই বিদ্যুৎ কর্মীদের গাফিলতিতেই সকলের চোখের সামনে ওই দুর্ঘটনা ঘটে গেল।”
ওই ঠিকাদার সংস্থার তরফে অভিজিৎ পাল বলেন, “সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে যে সমস্ত উপকরণ থাকা দরকার, আমাদের তরফে সমস্তই সরবরাহ করা হয়েছে। সঠিক ভাবে তা ব্যবহারের জন্য আমাদের সমস্ত কর্মীকেই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কেউ যদি ওই নির্দেশ উপেক্ষা করেন, তাহলে আমাদের করণীয় কিছু নেই।” আর গোরাবাজার কাস্টমার কেয়ার সেন্টারের ম্যানেজার তথা বিদ্যুৎ বন্টন অ্যাসিন্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার সিদ্ধনাথ রায় বলেন, “ওই ঘটনা জানিয়ে বিদ্যুৎ দফতরের তরফে বহরমপুর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.