নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের শর্তে বিহারের তিন শহরে ১০ শতাংশ হারে বিদ্যুতের দাম বাড়ছে।
বিহার বিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রণ কমিশন রাজ্য বিদ্যুৎ পর্ষদকে জানিয়ে দিয়েছিল, একটি শর্তে তারা বিদ্যুতের মাসুল বাড়াতে দিতে রাজি। তা হল, যেখানে যেখানে পর্ষদ ২৪ ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারবে, শুধু সেখানেই দাম বাড়ানো যাবে। সেই মতো পটনা, বুদ্ধগয়া ও রাজগীরকে বেছে নিয়েছে বিহার বিদ্যুৎ পর্ষদ। ২৪ ঘণ্টা নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ দেওয়ার শর্তে ১ ডিসেম্বর থেকে ওই তিন শহরে ১০ শতাংশ হারে মাসুল দাম বাড়ানোর বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে বিহার বিদ্যুৎ পর্ষদ।
ওই তিন শহরে বিদ্যুতের মাসুল সংগ্রহ আশানুরূপ। বিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের নির্দেশ মেনে তাই ওই তিন শহরের বিদ্যুৎ মাসুল বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে রাজ্য বিদ্যুৎ পর্ষদ সূত্রের খবর। মাসুল বৃদ্ধির ফলে ওই তিন শহর থেকে আগামী আর্থিক বছরে অতিরিক্ত ৮ কোটি টাকা সংগ্রহ করা যাবে বলে মনে করছেন পর্ষদ কর্তারা। উল্লেখ্য, গত অর্থ বর্ষে গোটা বিহারে ইউনিট প্রতি ৫ পয়সা মাসুল বাড়ানো হয়েছিল।
বিহার বিদ্যুৎ পর্ষদ সূত্রের খবর, রাজ্য বিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের কাছে এ বার তারা যে প্রস্তাব পাঠিয়েছিল তাতে বলা হয়, রাজধানী পটনা এবং রাজ্যের অন্য জায়গার জন্য পৃথক বিদ্যুৎ মাসুল ঠিক করা হোক। কিন্তু কমিশন সেই প্রস্তাব খারিজ করে দেয়।
তারা জানিয়ে দেয়, শহর এবং গ্রামীণ এলাকার জন্য আলাদা বিদুৎ মাসুল করা যেতে পারে। কিন্তু পটনার জন্য আলাদা করে কিছু করা যাবে না।
সেই শর্ত মেনে নেয় বিহার বিদ্যুৎ পর্ষদ। এর পরে মাসুল বৃদ্ধি নিয়ে কমিশন তাদের নির্দেশিকা জারি করে। তাতে বলা হয়, যেখানে যেখানে মাসুল বৃদ্ধি করা হবে সেখানে ২৪ ঘণ্টা বিদ্যুৎ দিতে হবে। ওই সব এলাকায় ১০ শতাংশ হারে বিদ্যুৎ মাসুল বাড়ানোরও সুপারিশ করে কমিশন। কোন কোন এলাকায় নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ দেওয়া সম্ভব তা খতিয়ে দেখতে বৈঠকে বসে পর্ষদ। তারা ঠিক করে তিন শহরেই নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ দেওয়ার পরিকাঠামো তারা তৈরি করতে পারবে।
২৪ ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ করা কি আদৌ সম্ভব? বিহার বিদ্যুৎ পর্ষদের চেয়ারম্যান পি কে রায় বলেন, “চার মাস ধরে আমরা এর প্রস্তুতি নিচ্ছি। এর জন্য ইঞ্জিনিয়ার, লাইনম্যানদের সমস্ত শূন্য পদ পূরণের কাজ চলছে। খারাপ তার বদলে ফেলা হচ্ছে। কোথাও কোনও সমস্যা হলে দ্রুত যাতে পর্ষদের লোক পৌঁছে যায়, সেই ব্যবস্থাও রাখা হচ্ছে।” তবে কোনও প্রাকৃতিক বিপর্যয় বা অন্য কোনও যান্ত্রিক কারণে যদি বিদ্যুৎ সরবরাহে বিঘ্ন ঘটে, সেটা ব্যতিক্রমী ঘটনা হিসেবে গণ্য হবে বলে চেয়ারম্যান মন্তব্য করেন।
বিদ্যুতের মাসুল বৃদ্ধির ব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার বলেন, “এটা বিদুৎ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের বিষয়। কমিশন বিদ্যুতের মাসুল বাড়ানোর জন্য সরকারকে সুপারিশ করেছে। সরকার সেই সুপারিশ অনুযায়ী কাজ করেছে মাত্র।”
পশ্চিমবঙ্গে রাজ্য সরকারের আপত্তি থাকায় সরকারি বিদ্যুৎ সংস্থাগুলি বিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের কাছে মাসুল বানানোর প্রস্তাবই পেশ করতে পারেনি। বিহার সরকার অবশ্য সে রাজ্যের বিদ্যুৎ পর্ষদকে মাসুল বাড়ানোর প্রস্তাব পেশ করতে বাধা দেয়নি। সব থেকে বেশি গ্রাহক থাকা তিন শহরে মাসুল বৃদ্ধির ফলে বিহার বিদ্যুৎ পর্ষদের আর্থিক দূরবস্থার কিছুটা সুরাহা হবে বলে আশা করছেন বিদ্যুৎ দফতরের কর্তারা। |