উত্তরপ্রদেশের ফুলপুরে রাহুল গাঁধীর প্রচার নিয়ে প্রশ্ন তুলল বিজেপি ও বসপা। দু’পক্ষেরই অভিযোগ, ‘মহারাষ্ট্রে গিয়ে ভিক্ষে করার’ কথা বলে উত্তরপ্রদেশবাসীর আত্মমর্যাদায় আঘাত করেছেন তিনি। কংগ্রেস অবশ্য পুরোপুরি রাহুলের পাশে। জানিয়ে দিয়েছে, রাজ্যে উন্নয়ন না হওয়া, মানুষের কাজ না পাওয়ার কথা বলে রাহুল ভুল কিছুু করেননি।
উত্তরপ্রদেশে নেহরুর প্রাক্তন নির্বাচনী কেন্দ্র থেকে আজ ভোটের প্রচার শুরু করেন রাহুল। মায়াবতী সরকারকে আক্রমণ করতে গিয়ে তিনি মন্তব্য করেন, “আর কত দিন উত্তরপ্রদেশের লোক মহারাষ্ট্রে গিয়ে ভিক্ষা করবেন? পঞ্জাবে গিয়ে শ্রমিকের কাজ করবেন?” রাহুলের এই মন্তব্যের পরেই
রে-রে করে ওঠে বিজেপি। দলের নেতা শাহনওয়াজ হুসেন বলেন, “উত্তরপ্রদেশের মানুষের আত্মমর্যাদা রয়েছে। তাঁরা ভিন্ রাজ্যে গেলেও পরিশ্রম করে অর্থ উপার্জন করেন। উত্তরপ্রদেশের লোক কংগ্রেস-শাসিত মহারাষ্ট্রে গিয়ে ভিক্ষা করেন, এই কথা বলে তাঁদের আত্মমর্যাদায় আঘাত করেছেন তিনি।”
রাহুলের ওই মন্তব্য নিয়ে মুখ খুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী তথা বসপা নেত্রী মায়াবতীও। তাঁর বক্তব্য, “উত্তরপ্রদেশের মানুষ কঠোর পরিশ্রমী। তাঁরা ভিক্ষুক নন।”
কংগ্রেস অবশ্য বিজেপি-বসপা-র এই আক্রমণে আমল দিতে নারাজ। এ ব্যাপারে দিগ্বিজয় সিংহের বক্তব্য, উত্তরপ্রদেশের যে উন্নয়ন হয় না, রাহুল তো সে কথাটাই তুলে ধরেছেন। নিজ রাজ্যে কাজের সুযোগ মেলে না বলেই উত্তরপ্রদেশের মানুষকে অন্য রাজ্যে যেতে হয় কাজের সন্ধানে। ভিন্ রাজ্যে যে তাঁদের নানা বাধাবিপত্তি ও কষ্টের মধ্যেই দিন গুজরান করতে হয়, রাহুল সেই কথাই বলেছেন। এটা আদৌ উত্তরপ্রদেশবাসীর আত্মমর্যাদাকে
আঘাত করা নয়। বরং রাহুলের ওই বক্তব্যের পর সভায় প্রচুর হাততালি পড়েছে এ দিন।
বস্তুত, ফুলপুরের সভায় রাহুলের প্রতিটি আগ্রাসী মন্তব্যেই আজ ভিড় থেকে ভাল সাড়া পাওয়া গিয়েছে। সেই উন্মাদনাকে উস্কে দিতে ক্রমশই সুর চড়িয়েছেন গাঁধী পরিবারের এই তরুণ প্রজন্মও। মায়াবতী সরকারের অপশাসন ও অরাজকতার বিরুদ্ধে কৌশলে যুব সম্প্রদায়কে কংগ্রেসের সঙ্গে জুড়তে চেয়েছেন। বলেছেন, আরও কত দিন পিছিয়ে থাকবে উত্তরপ্রদেশ? রাজ্যর যুব সম্প্রদায় যে দিন এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে উঠে দাঁড়াবে সে দিনই পরিবর্তন আসবে এ রাজ্যে। পাঁচ বছরের মধ্যে মুখ বদলে যাবে রাজ্যের।
রাহুল তাঁর বক্তৃতায় এ দিন বলেন, “গরিবরাই দেশের আসল শক্তি।” এই মন্তব্য নিয়েও কংগ্রেসের ‘যুবরাজ’ ও সনিয়া গাঁধীকে আক্রমণ করেছে বিজেপি। শাহনওয়াজ অভিযোগ করেন, “সনিয়া ও রাহুলের নেতৃত্বাধীন কংগ্রেসের আমলেই একের পর এক দুর্নীতি হয়েছে। দাম বেড়েছে পেট্রোপণ্যের। তাতে গরিব আরও গরিব হয়েছে। শুধু কংগ্রেসের কিছু নেতা ধনী হয়েছেন। ফলে গরিবদের প্রতি মিথ্যা সহানুভূতি না দেখিয়ে কংগ্রেস নেতৃত্ব দুর্নীতি ও মূল্যবৃদ্ধিতে লাগাম দিন।” |