ঝাড়খণ্ডে পঞ্চায়েত এবং আদিবাসী উন্নয়নের কাজে ক্ষুব্ধ কেন্দ্রীয় সরকার। গত কাল এখানে রাজ্যের ওই দুই দফতরের ব্যর্থতায় নিজের ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন কেন্দ্রীয় আদিবাসী এবং পঞ্চায়েতিরাজ দফতরের মন্ত্রী ভি কিশোরচন্দ্র দেও। তিনি বলেন, “ঝাড়খণ্ডের পঞ্চায়েতিরাজ ব্যবস্থা আমার কাছে খুবই বেদনাদায়ক। এখনও পর্যন্ত পঞ্চায়েতিরাজ ব্যবস্থায় এখানে জেলা পরিকল্পনা কমিটিও গঠিত হয়নি।” একই সঙ্গে আদিবাসী অধ্যুষিত ঝাড়খণ্ডে আদিবাসী-সহ জঙ্গল লাগোয়া এলাকার ‘উন্নয়ন’-এর কাজ নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন তিনি।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর বক্তব্যের প্রেক্ষিতে কোনও রকম মন্তব্য না-করে রাজ্য পঞ্চায়েত দফতরের আধিকারিকরা আজ জানান, প্রায় তিন দশক বাদে গত ডিসেম্বর মাসে ঝাড়খণ্ডে পঞ্চায়েত ভোট হয়েছে। স্বাভাবিক ভাবেই নয়া বোর্ড গঠন করে পঞ্চায়েতের কাজ বুঝে উঠতে অনেকটা সময় চলে যায়। যার ফলে কাজ শুরু হতে খানিকটা বিলম্ব হয়েছে। তাঁদের বক্তব্য, রাজ্যের ২৪টি জেলায় এখনও পরিকল্পনা কমিটি গঠনের কাজ হয়নি ঠিকই। তবে ওই কমিটি গড়ার যাবতীয় সরকারি প্রক্রিয়া শেষ। জেলা পরিকল্পনা কমিটি গঠন এখন শুধুই সময়ের অপেক্ষা।
রাজ্য পঞ্চায়েত দফতর সূত্রের খবর, কোন জেলায় পরিকল্পনা কমিটির সদস্য সংখ্যা কত হবে তা নিয়ে একটা সমস্যা ছিল। জেলা পরিকল্পনা কমিটির সদস্য পদ নিয়েও সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে মত পার্থক্যের জেরে কিছুটা সময় চলে গিয়েছে। শেষ পর্যন্ত গত ২৮ জুলাই মন্ত্রিসভার বৈঠকে জেলাওয়ারি পরিকল্পনা কমিটির সদস্য সংখ্যা চূড়ান্ত অনুমোদন পেয়েছে। মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ঝাড়খণ্ডের ১৬ টি জেলায় কুড়ি জন করে পরিকল্পনা কমিটির সদস্য হবেন। বাকি আটটি জেলার পরিকল্পনা কমিটি গঠিত হবে ১৫ জন করে সদস্য নিয়ে। আগামী মাস খানেকের মধ্যে জেলা পরিকল্পনা কমিটি গঠনের কাজ শেষ হয়ে যাবে বলে আশা করছেন রাজ্য পঞ্চায়েত দফতরের আধিকারিকরা।
পঞ্চায়েত ব্যবস্থার পাশাপাশি আদিবাসী-সহ বনাঞ্চলবাসীদের জমির পাট্টা প্রদানের কেন্দ্রীয় আইন দ্রুত কাযর্কর করার ক্ষেত্রেও রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে ব্যর্থতার অভিযোগ করেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। অরণ্য অধিকার আইনে ঝাড়খণ্ডে জমির পাট্টা পাওয়ার জন্য মাত্র ৪০ হাজার আবেদন জমা পড়েছে।
এর মধ্যে আবার সেই আবেদনের ৫০ শতাংশই বিভিন্ন কারণে বাতিল করে দিয়েছে রাজ্য সরকার। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর দাবি, “প্রাথমিক হিসেবেই দেখা গিয়েছে, এখানে জঙ্গলের আশপাশে বাস করছেন দু’লক্ষেরও বেশি আদিবাসী মানুষ। এঁরা সকলেই কেন্দ্রীয় আইনে ‘পাট্টা’-র সুবিধা পেতে পারেন।” পাট্টা দেওয়ার কাজ নিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে আজ রাজ্যের আদিবাসী কল্যাণ দফতরের মন্ত্রী চম্পাই সোরেন সাফাই দিয়েছেন, “ইতিমধ্যেই রাজ্যের জঙ্গল এলাকার ১৫ হাজার আদিবাসী পরিবারের হাতে জমির পাট্টা তুলে দেওয়া হয়েছে। আবেদনের ভিত্তিতে পাট্টা বিলির কাজ আরও দ্রুত শেষ করার চেষ্টা আমরা করছি।” |