শিলিগুড়ি মহকুমার বিভিন্ন হোটেলের আবাসিকদের কাছ থেকে ‘পরিষেবা ফি’ আদায়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (এসজেডিএ)। ১২ নভেম্বর এসজেডিএ’র বোর্ড মিটিংয়ে সর্বসম্মতিক্রমে ওই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। এসজেডিএ সূত্রের খবর, হোটেল ও বেসরকারি অতিথি নিবাসে আবাসিকরা ঘর ভাড়া বাবদ যে টাকা দেন তার উপরে ভিত্তি করেই ‘ফি’ নির্ধারিত হবে। কোন শ্রেণির হোটেলে কত টাকা পরিষেবা ফি হবে তা মালিকপক্ষের সঙ্গে আলোচনায় ঠিক হবে। এসজেডিএ-এর চেয়ারম্যান রুদ্রনাথ ভট্টাচার্য বলেন, “শিলিগুড়ি মহকুমায় ওই পরিষেবা ফি চালুর পক্ষে মত দিয়েছে বোর্ড। সব হোটেল ও অতিথি নিবাসের মালিকপক্ষের সঙ্গে কথা বলে ফি-এর হার ঠিক করা হবে। যাই-ই হোক না কেন, আলোচনার মাধ্যমে সর্বজনগ্রাহ্য ফি-এর হার ঠিক করা হবে।” ফি বাবদ যে টাকা আদায় হবে তা শিলিগুড়ির পরিষেবার মান ও সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য ব্যয় করা হবে। এসজেডিএ সূত্রেই জানা গিয়েছে, প্রাথমিক ভাবে একাধিক হোটেল মালিকদের সঙ্গে ‘ব্যক্তিগত পর্যায়ে’ কথাবার্তা বলেছেন রুদ্রনাথবাবু। তাতে সাড়াও মিলেছে বলে এসজেডিএ-এর সূত্রটি দাবি করেছে। কত হতে পারে ফি? এসজেডিএ সূত্রেই জানা যাচ্ছে, ন্যূনতম মাথা আবাসিক পিছু ১০ টাকা হারে ফি নেওয়ার কথা ভাবা হয়েছে। যে সব হোটেলে ভাড়ার হার বেশি সেখানে তা বেড়ে ২০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। এসজেডিএ সূত্রের খবর, সাধারণ হোটেল, তিন তারা বা পাঁচ তারা হোটেল, আলাদা হারে ফি ধার্য হবে। ওই টাকা শহরের উন্নয়ন কাজে, নিকাশি, রাস্তা সংস্কার, শহরের পরিকাঠামো দেখভালের কাজে ব্যবহার করা হবে। শহর সাজাতে তথা পরিকাঠামো উন্নয়ন কাজে পুরসভার বিভিন্ন প্রকল্পেও তা থেকে অর্থ সাহায্য করবে এসজেডিএ। যে দিন বোর্ডে মিটিংয়ে ওই সিদ্ধান্ত হয়, সেখানে উপস্থিত ছিলেন এসজেডিএ’র সদস্য তথা শিলিগুড়ি পুরসভার চেয়ারম্যান নান্টু পালও। ওই ফি সংগ্রহের সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা জানিয়েছেন নান্টুবাবুও। শিলিগুড়ি হোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সচিব উজ্জ্বল ঘোষ বলেন, “বিষয়টি আমাদের জানা নেই। এ ব্যাপারে আমাদের সঙ্গে কোনও আলোচনাও করা হয়নি। তা ছাড়া পুরসভা থেকে ‘স্টে ট্যাক্স’ বছর তিনেক আগে লাগু করা হয়। সে সময়ই আমরা আপত্তি জানিয়েছিলাম। শুধু পর্যটকদের কাছ থেকে ওই ফি আদায় করা হলে সমস্যা হত না। কিন্তু ব্যবসার প্রয়োজনে যাঁরা যাতায়াত করেন, তাঁদের সমস্যা হবে। বিশেষ করে সাধারণ মানের হোটেলগুলি সমস্যায় পড়বে।” তবে পরিষেবার মান বাড়ানোর প্রশ্নে হোটেল মালিকরা আলোচনায় রাজি বলে জানান। বর্তমানে শহরের হোটেলগুলিতে থাকার জন্য পুরসভার তরফে আবাসিকদের মাথা পিছু ২ টাকা ‘স্টে ট্যাক্স’ আদায় করা হয়। প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছে, সরকারি অতিথি নিবাসগুলি ওই আওতায় পড়বে না। বিভিন্ন কোম্পানির হলিডে হোম গুলি থেকে ওই ফি আদায় করা হবে। |