তৃণমূল-সিপিএম সংঘর্ষে জখম হলেন ছ’জন। মঙ্গলবার কাঁকসায় ভোটার তালিকায় নাম তোলায় বাধা দেওয়ার অভিযোগকে কেন্দ্র করে এই সংঘর্ষ বাধে। দু’পক্ষই পরস্পরের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছেন। পুলিশ জানায়, ঘটনার তদন্ত চলছে। তবে এ দিন রাত পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কাঁকসার মাধবমাঠ প্রাথমিক স্কুলে ভোটার তালিকায় নাম তোলার শুনানি চলছিল। স্থানীয় সিপিএম নেতৃত্বের অভিযোগ, তৃণমূলের কিছু লোকজন তাদের কর্মী-সমর্থকদের এই তালিকায় নাম তোলার ব্যাপারে বাধা দেয়। তৃণমূলের অবশ্য পাল্টা অভিযোগ, সিপিএম-ই তাদের লোকজনকে বাধা দিয়েছিল। এ নিয়ে প্রথমে বচসা, পরে তা থেকে মারামারি শুরু হয়ে যায়।
কাঁকসা পঞ্চায়েত সমিতির সিপিএম কর্মাধ্যক্ষ রচিন মজুমদার দাবি করেন, বিষয়টি প্রথমে মিটে গিয়েছিল। পরে কাঁকসার পঞ্চায়েত প্রধান, তাঁদের দলের শেখ সামসুজ্জোহার বাড়িতে চড়াও হয় তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকেরা। বাড়িতে লুঠপাট চালানো হয় বলে অভিযোগ। বাধা দিতে গিয়ে তাদের মারে জখম হন শেখ সামসুজ্জোহা।
সিপিএমের আরও অভিযোগ, সামসুজ্জোহাকে চিকিৎসার জন্য ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার সময়ে তৃণমূলের ওই কর্মী-সমর্থকেরা ফের চড়াও হয়। সেই সময়ে জখম হন পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন সভাপতি সুভাষ সাহা, কাঁকসা পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান ওমপ্রকাশ অগ্রবাল।
এ দিকে, তৃণমূলের বিধায়ক প্রতিনিধি দেবদাস বক্সির পাল্টা অভিযোগ, সিপিএম কর্মী-সমর্থকেরাই তাঁদের দলের লোকজনের উপরে চড়াও হয়। হামলায় জখম হন তৃণমূলের কর্মী শেখ হাবিবুল্লা, সিরাজুল মল্লিক ও বীরজু রজক। তিনি বলেন, “এত দিন ধরে বিরোধীদের ভোটার তালিকায় নাম তোলার ক্ষেত্রে কারচুপি করত সিপিএম। এ বার আমরা তার বিরোধিতা করার জন্যই এ ভাবে চড়াও হয় ওরা।”
সিপিএমের পক্ষ থেকে কাঁকসা থানায় তৃণমূল কর্মী-সমর্থক শেখ হবিবুর রহমান, সইফুল মল্লিক, আইনুল মল্লিক, হিরন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায় ও শেখ কালুয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অন্য দিকে, তৃণমূলের তরফে শেখ সামসুজ্জোহা, ওমপ্রকাশ অগ্রবাল, সিরাজুল ইসলাম, সুভাষ সাহা ও ফিরোজ খানের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন দেবদাসবাবু। তাঁর দাবি, “নিজেরা হামলা চালিয়ে উল্টে আবার আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে সিপিএম।”
সিপিএমের কাঁকসা জোনাল কমিটির সম্পাদক বীরেশ্বর মণ্ডলের অভিযোগ, “বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকেই এক দল তৃণমূল কর্মী আমাদের লোকজনের উপরে প্রায়শয়ই হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। দলীয় কার্যালয়েও চড়াও হচ্ছে।” কাঁকসা থানার তরফে জানানো হয়েছে, খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। আপাতত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। |