|
|
|
|
১০০ দিনের কাজে ৭ মাসে কাজ পেয়েছেন সাড়ে ছ’লক্ষ মহিলা |
এগিয়ে জলপাইগুড়ি জেলা |
অনির্বাণ রায় • জলপাইগুড়ি |
একশো দিনের প্রকল্পে মহিলাদের কাজ দেওয়ায় রাজ্যে এগিয়ে জলপাইগুড়ি জেলা। চলতি আর্থিক বছরের প্রথম সাত মাসে মহিলাদের একশো দিনের কাজে অংশগ্রহণে রাজ্যের অনান্য জেলাগুলিকে ছাপিয়ে গিয়েছে জলপাইগুড়ি। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, একশো দিনের কাজে জলপাইগুড়ি জেলায় প্রায় সাড়ে ৬ লক্ষ মহিলাকে কাজ দেওয়া সম্ভব হয়েছে। অন্যান্য জেলাগুলির থেকে যা বেশি। জেলার মোট শ্রমিকের মধ্যে ৪৬ শতাংশই মহিলা। শতাংশের হিসেবে দার্জিলিঙ পার্বত্য পরিষদ ও শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদ জলপাইগুড়ি জেলার প্রায় সমান হলেও সংখ্যার হিসেবে জলপাইগুড়ি জেলা কিছুটা এগিয়ে রয়েছে। দার্জিলিঙ জেলার দুটি বিভাগ মেলালে মহিলা শ্রমিকের সংখ্যা ২ লক্ষের কিছু বেশি। জেলার মহিলাদের বিভিন্ন স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে একশো দিনের কাজে সামিল করতে পারার ফলেই এই সাফল্য এসেছে বলে জেলা প্রশাসন সুত্রে দাবি করা হয়েছে। তবে মহিলাদের কাজ দিতে পারায় সাফল্য এলেও একশো দিনের কাজে বিপিএল পরিবারের কাজ দেওয়ার ক্ষেত্রে এই জেলা অন্যান্যদের থেকে বেশ কিছুটা পিছিয়ে পড়েছে। উত্তর ২৪ পরগনা বা দার্জিলিঙ পার্বত্য এলাকায় যেখানে ১৪ এবং ১২ শতাংশ বিপিএল পরিবারকে একশো দিনের কাজের আওতায় আনা সম্ভব হয়েছে সেখানে জলপাইগুড়িতে মাত্র ০.৭ শতাংশ বিপিএল পরিবারকে কেন্দ্রীয় সরকারের এই প্রকল্পে কাজ দেওয়া গিয়েছে। প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত অতিরিক্ত জেলাশাসক প্রনীতা শেওয়া বলেন, “জলপাইগুড়ি জেলায় অনেক স্বনির্ভর গোষ্ঠী রয়েছে। তাঁদেরকে সামিল করেই এই সাফল্য এসেছে। মহিলাদের প্রকল্পে সামিল করার বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।” |
|
জলপাইগুড়িতে স্কুল পড়ুয়াদের মিছিল। শুক্রবার সন্দীপ পালের তোলা ছবি। |
কেন্দ্রীয় সরকারের জাতীয় কর্মসংস্থান সুনিশ্চয়তা প্রকল্প তথা বছরে একশো দিন কাজ দেওয়ার প্রকল্পে ০৯-১০ আর্থিক বছরে জলপাইগুড়ি জেলা দেশের মধ্যে অন্যতম স্থানে থাকলেও পরের আর্থিক বছরে জেলায় একশো দিনের কাজের প্রকল্প কার্যত মুখ থুবড়ে পড়ে। চলতি আর্থিক বছরে ‘ঘুরে দাড়ানোর’ চেষ্টা শুরু করেছে জলপাইগুড়ি। ইতিমধ্যে জেল প্রশাসনের তরফে বিভিন্ন আধিকারিকদের নিয়ে দফায় দফায় বৈঠকও হয়েছে। গ্রামীণ এলাকার মহিলাদের কেন্দ্রীয় প্রকল্পে সামিল করে স্বনির্ভর করার ওপরে সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকার গুরুত্ব দিয়ে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছে দেশের বিভিন্ন জেলা প্রশাসনকে। সেই মতো গ্রামীণ এলাকার পিছিয়ে পড়া এবং স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের প্রকল্পে নিয়ে আসার জন্য জেলাশাসকের দফতর থেকে বিশেষ নির্দেশ পাঠানো হয়। প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, ময়নাগুড়িতে ১৫৩টি, ধুপগুড়িতে ১৩১টি, কালচিনিতে ১০৩, ফালাকাটায় ১০১, মাদারিহাটে ৬০টি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের প্রকল্পে সামিল করা হয়েছে। ডুয়ার্সের বিভিন্ন বনবস্তি এলাকার মহিলাদের নিয়ে গোষ্ঠী তৈরি করে একশো দিনের কাজ দেওয়া হয়। সরকারি হিসেবে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর প্রায় দেড় লক্ষ মহিলাকে একশো দিনের প্রকল্পে জব কার্ড তৈরি করে কাজ দেওয়াতেই জেলার এই সাফল্য এসেছে। সে কারণেই উত্তর বা দক্ষিণ ২৪ পরগনায় যেখানে সাড়ে ৫ লক্ষের কাছাকাছি মহিলাদের কাজে সামিল করা হয়েছে তখন জলপাইগুড়িতে সেই সংখ্যা সাড়ে ৬ লক্ষ ছুঁয়ে গিয়েছে। বীরভূম বা বাঁকুড়ার মতো একশো দিনের প্রকল্পে এগিয়ে থাকা জেলাগুলিতে শতাংশের হিসেবে ৩৫-৪০ শতাংশ মহিলা শ্রমিক কাজ পেলেও জলপাইগুড়িতে সেই শতাংশ ৪৬। যদিও বিপিএল পরিবারকে কাজ দেওয়ার নিরিখে চলতি বছরে পিছিয়ে গিয়েছে এই জেলা। শিলিগুড়ি মহকুমা এলাকার মতো ছোট এলাকাতেও ৬ শতাংশ বিপিএল পরিবারকে কাজ দেওয়া গেলেও জলপাইগুড়িতে এখনও এক শতাংশ বিপিএল পরিবারকে কাজ দেওয়া যায়নি। অতিরিক্ত জেলাশাসক বলেন, “একশো দিনের কাজ নিয়ে আমরা গুরুত্ব দিয়ে বেশ কিছু বৈঠক করেছি। বিশেষ কিছু ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।” |
|
|
|
|
|