|
|
|
|
|
|
|
পুস্তক পরিচয় ৩... |
|
ছোটদের জন্য কত রামায়ণ |
রাম বড় হইলেন। তিনি দেখিতে খুব ভাল ছিলেন। তাঁহার অনেক গুণ ছিল; গায়ে জোর ছিল, তীরও ধনুকও খুব ভাল ছুঁড়িতে পারিতেন।’ ছোটদের জন্যে এই ‘শিশু রামায়ণ’টি ১৯৩৬-এ লেখেন গজেন্দ্রকুমার মিত্র, যুক্তাক্ষর বর্জিত, তাতে তিনি লক্ষ্মণকেও বাদ দিয়েছেন, সেখানে লক্ষ্মণ সর্বত্রই ‘রামের ভাই’। এমন প্রায়-অজানা সব তথ্যে ঠাসা চিরঞ্জয় চক্রবর্তীর শিশুরামায়ণ কথা (পরশপাথর, ২৫০.০০)। গজেন্দ্রকুমারের বইটি সম্পর্কে চিরঞ্জয় আরও জানাচ্ছেন ‘‘তিনিই একমাত্র লেখক যিনি যুক্তাক্ষর বর্জিত রামায়ণ লিখেছেন।... ‘শিশু রামায়ণ’ খুব ছোটদের জন্য খুব সুন্দর এক রামায়ণ শুধু তাই নয়, মনে হয় বাংলা ভাষায় ক্ষুদ্রতম রামায়ণ।”
ছোটদের কথা ভেবেই কত লেখক কত রকমের চেহারা দিয়েছেন রামায়ণের, লব্ধপ্রতিষ্ঠ থেকে বটতলার লেখক সকলেই লিখেছেন, ছড়ায়-ছবিতে-গদ্যে। বহু অনুসন্ধানে সে সব তথ্য শুধু জড়োই করেননি, এত সব বিচিত্র বহুবর্ণী রামায়ণের বিশেষত্বও আলোচনা করেছেন চিরঞ্জয়। যেমন ‘বটতলার রামায়ণ’ অধ্যায়টিতে লিখছেন: ‘বটতলার রামায়ণ এখনও সব থেকে বেশি বিক্রি হয়। পাওয়া যায় মফস্সলের হাটে, বাজারে, কলকাতার ফুটপাথে।’ বটতলার একটি রামায়ণের ভূমিকা উদ্ধৃত করায় আলোচনা অর্থবহ হয়েছে আরও ‘বাংলার মা, ভাই-বোন সকলের পাঠ ও শোনার স্বার্থে সহজ ও সরল ভাষায় গদ্যাকারে ভালভাবে সম্পাদিত। এক নিঃশ্বাসে পড়ে শেষ করার মত বই, পড়লেই অন্তরে গাঁথা হয়ে থাকবে, আবার এই কাহিনী গল্পাকারে অশিক্ষিত বা নিরক্ষর ব্যক্তিবর্গের কাছে বলা সহজ হবে।’
‘খুব ছোটদের জন্য রামায়ণ’ অধ্যায়ে চিরঞ্জয় জানাচ্ছেন: “খুব ছোটদের জন্য রামায়ণ লিখেছিলেন বিখ্যাত শিশুসাহিত্যিক সুনির্মল বসু।... তিনি নিজে শিল্পী ছিলেন বলে যখন ভাষায় ছবি আঁকতেন তা হয়ে উঠত অনবদ্য।
তাঁর ‘অল্প কথার রামায়ণ’ শুরু হয়েছে এইভাবে: ‘ছিলেন অতি বৃদ্ধ রাজা
নামটি দশরথ।
অযোধ্যাতে ছিল তাঁহার
রাজ্য সুবৃহৎ।’
বেশ কিছু রঙিন ছবি আছে গোটা বই জুড়ে, বিভিন্ন সময়ে বেরনো রামায়ণের প্রচ্ছদ বা অলঙ্করণের ছবি। বইটি সুমুদ্রিত, ছবিগুলি আর একটু ভাল হতে পারতো। চিরঞ্জয় পরিশিষ্টে যত্ন করে তৈরি করেছেন ছোটদের রামায়ণের একটি তালিকা, তলায় আবেদনও জানিয়েছেন: ‘তালিকার বাইরে কোনো ছোটদের রামায়ণের সন্ধান থাকলে দয়া করে জানালে বাধিত হব।’ |
|
|
|
|
|