|
|
|
|
রকমারি আয়োজন, মমতা শুধু চায়ে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • পুরুলিয়া |
ছিল মুড়ি। রাখা হয়েছিল ইলিশ, মুরগি, পোস্তও। কিন্তু যাঁর জন্য এত আয়োজন, তিনি খেলেন শুধু এক কাপ চা। যা দেখে পুরুলিয়া সার্কিট হাউসের এক কর্মীর অবাক প্রশ্ন, “উনি সারা দিন এমন অমানুষিক পরিশ্রম করেন, খিদেও পায় না?”
খাদ্যরসিক হিসাবে মোটেই পরিচিত নন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু শুক্রবার পুরুলিয়ায় আয়োজনে খামতি রাখতে চাননি জেলা প্রশাসনের কর্তারা। মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরে এই প্রথম জেলায় আসা। রেলমন্ত্রী হিসাবে আগে এসেছেন। কিন্তু তখন রাজনৈতিক সমীকরণ ছিল অন্য রকম। তখন জেলা প্রশাসনের আতিথেয়তাও গ্রহণ করেননি মমতা। এ বার পরিস্থিতি একেবারেই আলাদা। শুধু তো মুখ্যমন্ত্রী নন, সঙ্গে আসছেন রাজ্যের আট ও কেন্দ্রের তিন মন্ত্রী, মুখ্যসচিব ও আরও ১৮টি দফতরের সচিব। গোটা মহাকরণই যেন উঠে এসেছে পুরুলিয়ার সার্কিট হাউসে।
ফলে, সাজো সাজো রব ছিলই। দুপুরে পৌঁছে বৈঠক করবেন, এটাই ঠিক ছিল। স্বাভাবিক ভাবেই বৈঠকের শেষে অতিথিদের জন্য মধ্যাহ্নভোজনের বন্দোবস্ত করেছিল জেলা প্রশাসন। গোটা ব্যাপারটার দেখভাল করছিলেন প্রশাসনের এক পদস্থ আধিকারিক। সার্কিট হাউসের হেঁসেলে নয়, অতীতে তৃণমূল নেতারা পুরুলিয়া শহরের যে হোটেলে উঠতেন, সেখান থেকেই মধ্যাহ্নভোজনের ‘অর্ডার’ দিয়েছিল প্রশাসন। মেনুতে মুড়ি-চানাচুরের পাশাপাশি ছিল ভাত, দু’রকম ডাল, আটার রুটি, পোস্ত, পাঁচমিশেলি তরকারি, পোস্তর বড়া, মটর-পনির, ইলিশ, দই-কাতলা, মুরগি ও পাঁঠার মাংস, আলুভাজা, পাঁপড়, টকদই, মিষ্টি দই, নলেন গুড়ের সন্দেশ, গোলাপজাম। যে হোটেল থেকে খাবার আনা হয়েছে, তার রাঁধুনি কৌশিক সরকার বললেন, “মুখ্যমন্ত্রীর জন্য রান্না করছি। এটা ভেবেই ভাল লাগছিল।” হোটেলের মালিক মোহিত লাটা বলেন, “এটা বাড়তি উৎসাহের ব্যাপার তো বটেই। মুখ্যমন্ত্রী খাবেন, টেনশন তো ছিলই!” ঘনিষ্ঠ মাত্রেই জানেন, মুড়ি-তেলেভাজা তাঁর বড্ড প্রিয়। এ দিন মুড়িও খাননি তিনি। দুর্গাপুর থেকে পুরুলিয়ায় এসেই সোজা সার্কিট হাউসের বৈঠক। ঘণ্টাখানেকের বৈঠকের পরেই মনে হল, বাকিদের তো খিদে পেয়েছে! বললেন, “অনেক দেরি হয়ে গেল। সবার নিশ্চই খিদে পেয়েছে।” বলেই মুখ্যমন্ত্রী সোজা ঢুকে পড়েন সার্কিট হাউসের ভিতরে (বৈঠক হচ্ছিল বাইরের চত্বরে)। মুখ্যমন্ত্রীকে খাবার ঘরে নিয়ে যাওয়া হয়। অন্যদের খেতে বললেও নিজে শুধু চেয়ে নিলেন এক কাপ দুধ চা। সঙ্গীরা, প্রশাসনের কর্তারা খাওয়ার অনুরোধ করলেও সবিনয়ে প্রত্যাখ্যান করে মমতা বলেন, “ওখানে (বলরামপুর) অনেক মানুষ অপেক্ষা করছেন। দেরি হয়ে গিয়েছে।” |
|
|
|
|
|