|
|
|
|
পুলিশ-আইনজীবী সমন্বয়ে জোর কোর্টে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
সরকারপক্ষের আইনজীবীর সঙ্গে তদন্তকারী পুলিশ অফিসারের সমন্বয়ের অভাবে অনেক সময়েই বিড়ম্বনা বাড়ে। আদালতে সওয়াল করতে গিয়ে কখনও বিড়ম্বনায় পড়েন সরকারপক্ষের আইনজীবী, কখনও আবার একই পরিস্থিতির মুখে পড়তে হয় তদন্তকারী পুলিশ অফিসারকে। বিচারকের সামনেই কোনও একটি প্রসঙ্গে দু’পক্ষের ‘মতানৈক্য’ প্রকাশ্যে এসে পড়ছে, এমন নজিরও তৈরি হচ্ছে।
এই অবস্থা সামাল দিতে এ বার থেকে প্রতি মাসের প্রথম ও তৃতীয় শনিবার মহকুমাস্তরে বৈঠকে বসবেন সংশ্লিষ্ট এলাকার সরকারপক্ষের আইনজীবী ও বিভিন্ন মামলার তদন্তকারী পুলিশ অফিসারেরা। কোন মামলায় কোথায় সমস্যা দেখা দিচ্ছে, কাগজপত্র তৈরির ক্ষেত্রে কোনও ভুলত্রুটি থেকে গিয়েছে কি না, ভুল হয় থাকলে কী ভাবেই বা সেই ভুল সংশোধন করা হবে, মূলত সে সব নিয়েই বৈঠকে আলোচনা হবে। সম্প্রতি, ডিস্ট্রিক্ট লেভেল মনিটরিং ক্রিমিনাল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন কমিটির এক বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। কমিটির সদস্য-সচিব তথা অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) শুভাঞ্জন দাস বলেন, “তদন্তকারী অফিসার ও সরকারি আইনজীবীর মধ্যে সমন্বয় বাড়াতেই এই ব্যবস্থা।”
সাধারণত, তিন মাস অন্তর এক বার বৈঠকে বসে ক্রিমিনাল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন কমিটি। চলতি বছরে অবশ্য এই কমিটির দু’টি বৈঠক হল। সম্প্রতি, জেলাশাসকের দফতরেই এই বৈঠক হয়। উপস্থিত ছিলেন পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার প্রবীণ ত্রিপাঠি, ঝাড়গ্রাম পুলিশ জেলার সুপার গৌরব শর্মা, জেলার পাবলিক প্রসিকিউটর রাজকুমার দাস, এপিপি অর্ধেন্দু সাহা। জেলাশাসক সুরেন্দ্র গুপ্ত ও অতিরিক্ত জেলাশাসক শুভাঞ্জনবাবুও ছিলেন। জেলাশাসকই এই কমিটির চেয়ারম্যান। জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, বৈঠকে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রসঙ্গ উঠে আসে। দু’পক্ষের সমন্বয়ের অভাবে যে কিছু সমস্যা দেখা দিচ্ছে, তাও স্পষ্ট হয়। একাধিক প্রস্তাব গহীত হয়।
কমিটির এই বৈঠকের পর পরই মহকুমাস্তরে একটি করে বৈঠক হয়ে গিয়েছে। ঘাটাল মহকুমার এক থানায় কর্মরত পুলিশ অফিসারের কথায়, “এমন বৈঠকের ফলে আমরা সকলেই উপকৃত হব। এখন মামলা বাড়ছে। ফলে, তদন্তকারী অফিসারদের নানা সমস্যার মধ্যে থেকেই কাজ করতে হয়। এ ক্ষেত্রে মামলার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তৈরির ক্ষেত্রে কিছু ক্রুটি থেকেই যায়। বৈঠক হলে অন্তত সেই ক্রুটি কাটিয়ে ওঠা যাবে।” সূত্রের খবর, কোনও ক্ষেত্রে সমস্যা হলে তা খতিয়ে দেখে উপযুক্ত পদক্ষেপ করার জন্য জেলার চারটি মহকুমায় ৪ জন পুলিশ অফিসারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। মেদিনীপুরের (সদর) দায়িত্বে রয়েছেন ডিএসপি (ডি অ্যান্ড টি) রূপান্তর সেনগুপ্ত, ঘাটালে ডিএসপি (ক্রাইম) ওয়াংডেন ভুটিয়া, ঝাড়গ্রামে ডিএসপি (হেড কোয়ার্টার) মির সাকির আলি ও খড়্গপুরে এসডিপিও দীপক সরকার। প্রশিক্ষণ শিবির করার ব্যাপারেও আলোচনা শুরু হয়েছে। যেখানে শুধু তদন্তকারী পুলিশ অফিসার কিংবা সরকারপক্ষের আইনজীবীরাই নন, উপস্থিত থাকার কথা চিকিৎসকদেরও, যাঁরা মৃতদেহের ময়নাতদন্ত করেন। মূলত, এ জন্যই ক্রিমিনাল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন কমিটির সদস্য হিসেবে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের নাম অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে জেলস্তরের বৈঠকে। জেলা আদালত চত্বরে একটি পৃথক মালখানা তৈরির ব্যাপারেও অলোচনা হয়েছে। |
|
|
|
|
|