|
|
|
|
কর্মী নেই, বলছে প্রশাসন |
সময়ে মিলছে না শংসাপত্র, ক্ষোভ বাড়ছে তফসিলিদের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
তফসিলি জাতি, উপজাতি ও অন্যান্য পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায়ের (ওবিসি) শংসাপত্র দেওয়ার ক্ষেত্রে অযথা গড়িমসি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠল পশ্চিম মেদিনীপুরে। ‘পিছিয়ে পড়া’ জঙ্গলমহলেও এমন অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগ কার্যত স্বীকার করেই জেলা প্রশাসনের সাফাই, মূলত কর্মীর অভাবের জন্যই এই সমস্যা। প্রত্যেক ব্লক-অফিসেই কর্মী-সংখ্যা প্রয়োজনের তুলনায় কম। কাজের চাপও বেড়েছে। নতুন করে নানা পরিকল্পনা তৈরি হচ্ছে। নতুন করে কর্মী নিয়োগ না হলে সমস্যা কাটিয়ে ওঠা অসম্ভব। জেলাশাসক সুরেন্দ্র গুপ্তের অবশ্য দাবি, “শংসাপত্র দেওয়ার ক্ষেত্রে গড়িমসির অভিযোগ ঠিক নয়। ব্লক অফিসগুলোয় কর্মীর সংখ্যা প্রয়োজনের তুলনায় কম। তার মধ্যেই কাজ হচ্ছে।”
সরকারি অফিসের বেহাল কর্মসংস্কৃতি নিয়ে বাম আমল থেকেই বিস্তর সমালোচনা হয়ে আসছে। সামান্য একটি কাজের জন্যও বার বার একই দফতরে ঘুরতে হয় সাধারণ মানুষকে। অভিযোগ, কর্মীরা যথা সময়ে অফিসে আসেন না। এমনকী না-এলেও হাজিরা খাতায় দিব্যি সই হয়ে যায়। রাজ্যে পালাবদলের পর সরকারি দফতরের কর্মসংস্কৃতি ফেরাতে উদ্যোগী হন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু তাতেও পরিস্থিতির হেরফের হয়নি বলেই অভিযোগ। তফসিলি উপজাতি শংসাপত্রের জন্য আবেদনকারী এক যুবকের কথায়, “বিডিও অফিসের কাজে যেন গতি নেই। কর্মচারীরা ‘হচ্ছে-হবে’ বলেই সময় কাটাচ্ছেন।”
তফসিলি জাতি, উপজাতি ও অন্যান্য পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায়ের শংসাপত্রের জন্য বিডিও অফিস থেকেই ফর্ম দেওয়া হয়। ফর্ম পূরণ করে এখানেই জমা দিতে হয়। ফর্ম ও প্রয়োজনীয় নথিপত্র জমা পড়ার পর সংশ্লিষ্ট আধিকারিকেরা তা খতিয়ে দেখেন। সব ঠিক থাকলে বিডিও অনুমতি দেন। এর পর মহকুমাশাসকের দফতর থেকে সংশ্লিষ্ট আবেদনকারীকে শংসাপত্র দেওয়া হয়। সাধারণত, এক মাসের মধ্যেই এই প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রে তা হচ্ছে না বলে অভিযোগ। প্রশাসন সূত্রে পাওয়া এক রিপোর্ট অনুসারে, গত অগস্ট পর্যন্ত জেলায় মোট ৪ হাজার ৮৭২টি আবেদন পড়ে রয়েছে। এর মধ্যে মেদিনীপুর সদরে ১ হাজার ২১৯, খড়্গপুরে ৯৮৫, ঝাড়গ্রামে ১ হাজার ৭৭৫ ও ঘাটালে ৮৯৩। পড়ে থাকা আবেদনগুলির মধ্যে এসসি-র ২ হাজার ৪৪৪, এসটি-র ৪২৭, ওবিসি-র ২ হাজার ১টি। দু’মাসেরও বেশি সময় ধরে পড়ে রয়েছে ৩ হাজার ২৮৭টি আবেদন। এর মধ্যে এসসি-র ৯৯০, এসটি-র ৬৭৭ এবং ওবিসি-র জন্য ১৬২০টি।
কিন্তু কেন এই পরিস্থিতি? জঙ্গলমহল এলাকার এক বিডিও বলেন, “কর্মীর অভাবের জন্যই এই পরিস্থিতি। তবে আগের থেকে পরিস্থিতি পাল্টেছে।” জেলা প্রশাসনের এক কর্তার আবার ব্যাখ্যা, এসসি, এসটি-র ক্ষেত্রে তেমন সমস্যা হচ্ছে না। ওবিসি শংসাপত্রের ক্ষেত্রে সবদিক খতিয়ে দেখতে কিছু বেশি সময় লাগছে। |
|
|
|
|
|