|
|
|
|
|
|
দক্ষিণ কলকাতা: গড়িয়া, সোনারপুর |
সুতি খাল |
আটকে সংস্কার |
দেবাশিস দাস |
ছ’মাস পরেই শেষ হবে প্রকল্পের মেয়াদ। অথচ, বাসিন্দাদের একাংশের বাধায় থমকে গড়িয়া স্টেশন সংলগ্ন সুতি খাল সংস্কারের কাজ।
গড়িয়া স্টেশন সংলগ্ন টলিনালা থেকে বেরিয়ে ইএম বাইপাস সংলগ্ন মুকুন্দপুরের কাছে বুনিয়াগাছি খালে গিয়ে মিশেছে এই সুতি খাল। ফলে এই খালটির উপর নির্ভরশীল গড়িয়া স্টেশন সংলগ্ন এলাকা এবং কলকাতা পুরসভার ১০৯ নম্বর ওয়ার্ডের নয়াবাদ, বুধের হাট, পিয়ারলেস হাসপাতাল সংলগ্ন বিস্তীর্ণ অঞ্চলের নিকাশি ব্যবস্থা। ‘কলকাতা এনভায়রনমেন্টাল ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্ট’-এর (কেইআইপি) ‘ক্যানাল রিহ্যাবিলিটেশন’ প্যাকেজের প্রথম পর্যায়ের আওতায় এই খাল সংস্কারের কাজ শুরু হয় ২০০৭ নাগাদ।
এলাকা ঘুরে দেখা গেল, দুই কিলোমিটার বিস্তৃত সুতিখালের অনেকটা অংশেই খালের দু’পাশে গার্ডওয়াল এবং নীচে কংক্রিটের মেঝে তৈরির কাজ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু বুধের হাট এলাকা থেকে আর কাজ এগোয়নি। বুধের হাট অঞ্চলে সুতি খালের পাড় সংলগ্ন বাসিন্দাদের দাবি, খালটির উপরে কংক্রিটের ঢাকনা দিয়ে দিতে হবে। ফলে তাঁদের দৈনন্দিন যাতায়াতের সুবিধা হবে। |
|
মানুষের যাতায়াতের জন্য সুতি খালের উপরে রয়েছে বাঁশ ও কাঠের সাঁকো। স্থানীয় বাসিন্দা তপন মণ্ডল বলেন, “এখন আমরা যে ভাবে যাতায়াত করি তাতে যথেষ্ট ঝুঁকি থেকে যায়। খালটি খুব গভীর। কিন্তু সাঁকোগুলি পোক্ত নয়। খালটিতে কংক্রিটের ঢাকনা দিলে যাতায়াতের সুবিধা হবে।” কিন্তু নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কেইআইপি-র এক আধিকারিকের কথায়: “ওই এলাকার বাসিন্দারা যে দাবি করছেন প্রযুক্তিগত ভাবে সেই কাজ করা খুব কঠিন। কারণ নর্দমার উপর কংক্রিটের ঢাকনাদেওয়া গেলেও খালের উপর তা দেওয়া অসম্ভব। ভবিষ্যতে আবার খাল সংস্কারের পথ খোলা রাখার জন্যই এই কাজ করা হয় না।”
১২ নম্বর বরোর চেয়ারম্যান তৃণমূলের দীপু দাসঠাকুর বলেন, “কেইআইপি সুতি খাল সংস্কারের কাজ করছে। খালপাড় সংলগ্ন এলাকায় দখলদারির সমস্যাও রয়েছে। আমরা খাল সংস্কারের কাজের জন্য ওদের সরে যেতে বললেও ওরা কথা শুনছে না। এ বার এই সমস্যার কথা বিধায়ককে জানাবো।”
কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর, ১২ নম্বর বরোর চেয়ারম্যান, কেইআইপি-র আধিকারিকেরা এবং সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের কাউন্সিলররা অন্তত পাঁচ বার বাসিন্দাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। কিন্তু বাসিন্দারা তাঁদের দাবিতে অনড় থাকায় এই সব বৈঠক থেকে কোনও সমাধান সূত্র কখনও বেরিয়ে আসেনি। ফলে নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শেষ হওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। |
|
সুতি খাল সংস্কারের প্রক্রিয়া নিয়ে যে জট তৈরি হয়েছে তা না কাটলে গড়িয়া স্টেশন সংলগ্ন এলাকা এবং ১০৯ নম্বর ওয়ার্ডের বিস্তীর্ণ এলাকার নিকাশি সমস্যার কোনও সুরাহা হবে না বলে কেইআইপি-র অধিকাংশ আধিকারিক মনে করেন। ফলে প্রতি বর্ষাতেই এই সব
এলাকার বাসিন্দাদের জমা জলের যন্ত্রণা ভোগ করতে হবে। ১০৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সিপিএমের রুমকি দাস বলেন, ‘‘খাল সংস্কারের কাজ শেষ না হলে সব চেয়ে বেশি সমস্যায় পড়বেন আমার ওয়ার্ডের বাসিন্দারাই। কারও যাতে কোনও ক্ষতি না হয় সে দিকে নজর রেখে চেষ্টা করছি সমস্যার সমাধানের পথ বার করার।” কেইআইপি-র প্রজেক্ট ডিরেক্টর ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায় এই সমস্যার কথা স্বীকার করে বলেন, “আমরা চেষ্টা করছি। আশা করছি সমস্যার কিছু একটা সমাধান করা যাবে।” |
ছবি : পিন্টু মণ্ডল |
|
|
|
|
|