কেলেঘাইয়ের প্রবাহপথে থাকা কয়েক লক্ষ টাকার গাছ চুরি গিয়েছে। গাছ চুরি যাওয়ার খবর আগেই পেয়েছিলেন সেচ দফতরের কর্তারা। কেলেঘাই নদী সংস্কারের কাজ শুরুর আগে ‘ল্যান্ড সার্ভে’র সময় সেচ দফতরের কর্তারা জানতে পারেন প্রায় ৪০ লক্ষ টাকার গাছ ইতিমধ্যে চুরি হয়ে গিয়েছে।
জেলা পরিষদের সহ সভাধিপতি মামুদ হোসেন ও সেচ দফতরের (কাঁথি) এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়র স্বপন পণ্ডিত বলেন, “প্রাথমিক ভাবে হিসেব করে জানা গিয়েছে নদীর নাঙলকাটা থেকে ঢেউভাঙা পর্যন্ত সাড়ে ৮ কিলোমিটার অংশে প্রায় ৫ কোটি টাকার গাছ আছে। শিরিষ, বকুল, অর্জুন, নিমগাছগুলির মধ্যে বেশ কিছু ইতিমধ্যেই কেটে নিয়েছে এলাকার লোক। প্রাথমিক হিসেবে চুরি যাওয়া গাছের মূল্য প্রায় ৪০ লক্ষ টাকা।”
সম্প্রতি শুরু হয়েছে ‘কেলেঘাই-কপালেশ্বরী বাগুই বেসিন ড্রেনেজ স্কিম’-এ নদী সংস্কারের কাজ। সেচ দফতর ও জেলা পরিষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, নদী-সংস্কার প্রকল্পে ইতিমধ্যে জেলা প্রশাসনের তরফে জমি অধিগ্রহণের কথা বলা হয়েছে। সেচ দফতরের ‘ল্যান্ড সার্ভে’র কাজও অনেকটাই এগিয়েছে। প্রকল্পের কাজ করার লক্ষ্যে ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের প্রতিনিধি, প্রশাসন, মন্ত্রী, সাংসদ, বিধায়কদের নিয়ে পরিকল্পনা ও প্রকল্পের বিষয় নিয়ে ১৭ নভেম্বর বৈঠক হবে পটাশপুর-১ ব্লকের পালপাড়া কলেজে। পশ্চিম মেদিনীপুরে সবংয়ে অবশ্য গত ৯ নভেম্বরই এ ব্যাপারে বৈঠক হয়েছে। ঠিক হয়েছে, নাঙলকাটা থেকে মোহনা ঢেউভাঙা পর্যন্ত নদীর সাড়ে আট কিলোমিটার অংশে সংস্কার হবে। ২০১২ সালে বর্ষা শুরুর আগে নদীর সংস্কারের কাজ এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। এই অংশে নদীর এক পাড়ে রয়েছে পটাশপুর, ভগবানপুর ও চণ্ডীপুর এবং অন্য পাড়ে সবং, পিংলা ও ময়না।
গত ৩১ অক্টোবর এ নিয়ে তমলুক সেচ বাংলোয় কেন্দ্রীয়মন্ত্রী শিশির অধিকারী, জেলাশাসক, সেচ দফতরের ইঞ্জিনিয়র এবং জেলা পরিষদের কর্তারা বৈঠক করেন। সিদ্ধান্ত হয়, সরকারি রাজস্ব ক্ষতি আটকাতে এবং নদী সংস্কারের কাজ দ্রুত করতে নদীপ্রবাহে থাকা গাছগুলি নিলাম করা হবে। পরে জেলা পরিষদের কৃষি ও সেচ স্থায়ী সমিতিতে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। স্বপনবাবু বলেন, “ঠিক হয়েছে জেলা পরিষদ, সেচ, বন, ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর এবং প্রশাসন যৌথ ভাবে এলাকা পরিদর্শন করবেন। সরকারি জমি চিহ্নিত করে গাছগুলি নিলাম করা হবে।”
এ দিকে, নদী পাড়ের কিছু অংশে গ্রামবাসীদের রায়ত জমি আছে। সেখানেও গাছপালা রয়েছে। স্বপনবাবু জানান, সে ক্ষেত্রে গ্রামবাসীদের গাছ কেটে নিতে বলা হবে। ১৭ নভেম্বরের বৈঠকের আগেই এলাকা পরিদর্শন এবং রিপোর্ট তৈরি করা হবে। বৈঠকে অনুমোদন মিললেই শুরু হবে নিলামের কাজ। |