প্রচার ফেসবুক, টুইটারে
ভোটে আস্থা হারাচ্ছে তরুণরা, আক্ষেপ কুরেশির
দেশের অধিকাংশ যুবা ভোটারই যে নির্বাচনী প্রক্রিয়া থেকে মুখ ফিরিয়ে রয়েছেন, শুক্রবার আক্ষেপের সুরে সে কথা জানালেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার এস ওয়াই কুরেশি। তথ্য-পরিসংখ্যান দিয়ে বিষয়টি তুলে ধরেন তিনি। এবং জানান, তাঁদের আগ্রহী করতে বিশ্ববিদ্যালয় স্তরে পাঠক্রম চালু নিয়ে ভাবনাচিন্তার পাশাপাশি ফেসবুক, টুইটারের মতো সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে প্রচারের উপরেও জোর দিচ্ছেন তাঁরা, যে প্রস্তাব কমিশন পেয়েছে কলকাতা থেকেই। মৌলানা আবুল কালাম আজাদ স্মারক বক্তৃতা দিতে এ দিন কলকাতায় এসেছিলেন কুরেশি। সেখানে তিনি বলেন, “আমাদের দেশের মাত্র ১৫ শতাংশ যুবক ভোটার তালিকায় নাম লেখান, যাঁদের বয়স ১৮ থেকে ২০ বছরের মধ্যে।” কুরেশির কথা থেকে স্পষ্ট, যাঁদের নাম তালিকায় রয়েছে, ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রে তাঁদের মধ্যেও প্রবল অনীহা রয়েছে। তিনি বলেন, “সারা দেশে ৭১ কোটি ৪০ লক্ষ ভোটার আছেন। অথচ গত লোকসভা নির্বাচনে ভোট দেননি ২৮ কোটি ১০ লক্ষ ভোটার। আর ভোট না-দেওয়া নাগরিকদের আধিকাংশেরই বয়স ৩৫ বছরের কম।” তবে ভোটদানের ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গের প্রশংসা করে কুরেশি বলেন, এ রাজ্যে ৮৫ শতাংশ মানুষ ভোট দেন। এই রাজ্য ব্যতিক্রম। এই পরিস্থিতির মোকাবিলা করা হবে কী ভাবে? সেখানেও কিন্তু কলকাতার কাছে ‘কৃতজ্ঞ’ কুরেশি। তিনি জানালেন, সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটগুলিতে প্রচারের ব্যাপারে জোর দিচ্ছে কমিশন। ফেসবুক বা টুইটারের মতো সাইটগুলি যুব-সম্প্রদায়ের মধ্যে অত্যন্ত জনপ্রিয়। নিয়মিত ব্লগ করা এবং পড়ার ব্যাপারেও তাদের উৎসাহ যথেষ্ট। এই কথা মাথায় রেখেই সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটগুলিতে ঢুকে পড়তে চাইছে কমিশন। এবং সেগুলির মাধ্যমে পৌঁছতে চাইছে যুব-সম্প্রদায়ের কাছে। কুরেশি জানালেন, এই প্রস্তাবটি তাঁরা পেয়েছেন কলকাতা থেকেই।
বক্তৃতা দিচ্ছেন এস ওয়াই
কুরেশি। ছবি: অর্কপ্রভ ঘোষ
এ ছাড়া আরও কয়েকটি দিক নিয়ে ভাবনাচিন্তা করছে কমিশন। কুরেশির বক্তব্য, ভোটাধিকার প্রয়োগ করার ব্যাপারে সচেতনতা বাড়াতে হবে। এই কথা মাথায় রেখে কমিশন এর মধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয় স্তরে ‘ভোটার এডুকেশন’ চালু করার ব্যাপারে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে। পাশাপাশি যুবকদের বেশি করে নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় যুক্ত করতে কমিশন ‘যুবা’ প্রকল্পও হাতে নিয়েছে। উদ্দেশ্য, উন্নত গুণগত মানের আরও বেশি সংখ্যায় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব গড়ে তোলা।
আইন করে ভোটদান বাধ্যতামূলক করা যায় কি না, এই প্রসঙ্গে সেই বিষয়টিও তোলেন কুরেশি। এবং কেন তা সম্ভব নয়, তা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে উল্লেখ করেন আদালতে ঝুলে থাকা হাজার হাজার মামলার কথা। মুখ্য নির্বাচন কমিশনার বলেন, “আমাদের দেশে প্রতিটি নির্বাচন ঘিরেই বহু মামলা হয়। তার বেশির ভাগেরই এখনও নিষ্পত্তি হয়নি। এই অবস্থায় ভোট না দিলে শাস্তির বিধান দিয়ে লাভ কী? সে মামলাও তো ঝুলেই থাকবে।”
নির্বাচনী প্রক্রিয়া সংস্কারেও হাত দিয়েছে কমিশন। সে কথা জানিয়ে কুরেশি এ দিন বলেন, এই বিষয়ে কমিশনের প্রস্তাব কেন্দ্রীয় সরকার মেনে নিয়েছে। এখন শুধু সরকারি বিজ্ঞপ্তি জারি করা বাকি। কুরেশির আশা, সংস্কারের মাধ্যমে নির্বাচনী প্রক্রিয়ার গলদগুলি ঠিক করা সম্ভব হবে। তাঁর বক্তব্য, শুধু সাধারণ নাগরিকদেরই নয়, এই প্রক্রিয়ায় রাজনৈতিক দলগুলিকেও শিক্ষিত করতে হবে। তিনি জানান, কমিশন এর মধ্যেই দলগুলির দু’দিনের পাঠদান পর্ব শেষ করেছে। সাধারণ ভাবে রাজনৈতিক দলগুলি অজ্ঞতা থেকেই নির্বাচনী বিধি ভেঙে থাকে বলে মন্তব্য করেন কুরেশি।
যে পথে নির্বাচনী সংস্কার
• চার্জশিট থাকা ব্যক্তিদের প্রার্থী করা নয়(*)
• রাজনৈতিক দল নিয়ন্ত্রণে আইন
• দলীয় স্বীকৃতি বাতিল করতে পারবে কমিশন
• অর্থসংগ্রহ ও খরচের অডিট বাধ্যতামূলক
• নির্বাচনী অপরাধও বিচারযোগ্য
• ভোটের স্বার্থে ধর্ম ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা
• মনোনয়নের হলফনামায় ভুল থাকলে মামলা
• ‘প্রার্থী পছন্দ নয়’ বোতাম বাধ্যতামূলক
(*) পাঁচ বছর বা তার বেশি কারাবাস হতে পারে এমন অপরাধ


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.