৫০০ কিলোমিটার সাইকেলে
অসম ভাগের দাবিতে আবসু নামল অহিংস আন্দোলনে
হাজার সাইকেল আরোহী। পাড়ি দেবেন ৫০০ কিলোমিটারেরও বেশি পথ। সামনে পোস্টারে লেখা ‘ডিভাইড অসম ৫০-৫০।’ অসম দুই ভাগ করে, পৃথক বড়োল্যান্ড রাজ্যের দাবিতে আজ থেকে দুই চাকার মাধ্যমেই অহিংস আন্দোলনের নতুন অধ্যায় শুরু করল অল বড়ো স্টুডেন্ট্স ইউনিয়ন বা আবসু।
আবসুর হুমকি, দাবি না মানলে, মণিপুরের, ‘সদর হিল পৃথক জেলা দাবি কমিটি’র মতোই, রেল ও সড়কপথে অনির্দিষ্টকাল অর্থনৈতিক অবরোধের ডাক দেওয়া হবে, ডাকা হবে হাজার ঘণ্টার বন্ধও।
১৯৮৭ সালের ১ ফেব্রুয়ারি উপেন্দ্রনাথ ব্রহ্মর নেতৃত্বে বড়োরা প্রথমবার পৃথক বড়োল্যান্ডের দাবি তুলেছিলেন। পরে অবশ্য হাগ্রামা মহিলারি, রঞ্জন দইমারি, গোবিন্দ বসুমাতারিদের হাতে পড়ে সেই আন্দোলন জঙ্গি রূপ পায়। বড়োল্যান্ডের দাবিতে কয়েক হাজার প্রাণ গিয়েছে। বড়ো ছাত্র সংগঠন নিজেদের হিংসার পথ থেকে পৃথক রাখলেও, এনডিএফবির লড়াইয়ে তাদের প্রচ্ছন্ন সমর্থন ছিল। হাগ্রামার নেতৃত্বাধীন বড়োল্যান্ড টাইগার্স ২০০৩ সালে সরকারের সঙ্গে বড়ো চুক্তি করে। গঠিত হয় বড়ো স্বশাসিত পরিষদ (বিটিসি)। হাগ্রামার ‘বড়োল্যান্ড প্রগ্রেসিভ ফ্রন্ট’ কংগ্রেসের সঙ্গে হাত মিলিয়ে বড়ো এলাকাগুলিতে শাসন চালাচ্ছে। তবে, আবসু, এনডিএফবির আলোচনাপন্থী গোষ্ঠী ও রঞ্জন গোষ্ঠীর কেউই এই আপোস মানতে রাজি নন। এই বছর ফেব্রুয়ারি থেকে আবসু সভাপতি প্রমোদ বড়োর নেতৃত্বে নতুন করে পৃথক বড়োল্যান্ড আন্দোলন শুরু হয়। নতুন বড়োল্যান্ডের মানচিত্র প্রকাশ করে, ১০ হাজার বড়ো একত্রে দাবি তোলেন, অসমকে উত্তর ও দক্ষিণে ভাগ করে দিতে হবে।
পৃথক বড়োল্যান্ড রাজ্যের দাবিতে হাজারটি সাইকেল নিয়ে
অভিযান শুরু হল শুক্রবার। উজ্জ্বল দেবের তোলা ছবি।
ফেব্রুয়ারির পর থেকে নভেম্বর অবধি, এনডিএফবির সঙ্গে শান্তি আলোচনা এক চুলও না এগোনোয় আবসু আজ থেকে অহিংস আন্দোলনের পথে হাঁটতে শুরু করল। আজ সকালে পশ্চিমবঙ্গ সীমানার শ্রীরামপুর থেকে শোনিতপুরের ঠেলামারা অবধি প্রায় ৫০০ কিলোমিটার সাইকেল অভিযান শুরু হয়। অভিযান শেষ হবে ১৫ নভেম্বর। ৩১, ৩৭, ৫২ নম্বর জাতীয় সড়ক বরাবর সাইকেলে বড়োল্যান্ডের স্লোগান ছড়িয়ে দেবেন আবসু আরোহীরা। অভিযানের নেতৃত্ব দেন প্রমোদ বড়ো। তিনি বলেন, “পৃথক বড়োল্যান্ড আমাদের রাজনৈতিক অধিকার। ঝাড়খণ্ড, উত্তরাখণ্ড ও ছত্তীসগঢ় যদি সম্ভব হয়, বড়োল্যান্ড নয় কেন?” তাঁর মতে, “কেন্দ্র, সংবিধানের ২,৩ ও ৪ নম্বর ধারা মেনে আমাদের দাবিতে আপত্তি জানায়নি। কিন্তু বাগড়া দিচ্ছে রাজ্য সরকার। আমরাই এই ভূখণ্ডের আদি অধিবাসী। অথচ, এখনও বড়ো ভাষাকে সরকারি ভাষার মর্যাদা দেওয়া হয়নি। আমরা কোনও দয়া চাই না। মাতৃভূমিতে নিজেদের অধিকার চাইছিমাত্র।” তিনি হুমকি দেন, “বড়োল্যান্ড গঠন না করে, যদি পৃথক তেলেঙ্গানা রাজ্য গড়ায় কেন্দ্র অনুমোদন দেয়, তাহলে আমরা সর্বাত্মক আন্দোলনে নামব। তার জন্য রাজ্য ও কেন্দ্র সরকারই দায়ী থাকবে।”
মণিপুরে যেভাবে, ৯২ দিন অর্থনৈতিক অবরোধ চালিয়ে সদর হিল দাবি কমিটি পৃথক সদর হিল জেলা ছিনিয়ে নিয়েছে, আবসুর পরিকল্পনা, সেইভাবেই, ৩১, ৩৭, ৫২ নম্বর জাতীয় সড়ক ও রেলপথে অনির্দিষ্টকাল অবরোধ শুরু করবে তারা। ডাকা হবে, হাজার ঘণ্টার বন্ধ। এদিন, বড়োল্যান্ড গঠন ছাড়াও, এনডিএফবির সঙ্গে শান্তি আলোচনা ও আলফা নেতাদের মতো, রঞ্জন দইমারিরও সসম্মানে মুক্তি দাবি করা হয়।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.