বাতিল আরও ৪০ উড়ান, সংস্থা বাঁচাতে প্রণবের দ্বারস্থ কিংফিশার
র্থিক সঙ্কট কাটাতে বার কেন্দ্রীয় সরকারের দ্বারস্থ হল কিংফিশার এয়ারলাইন্স। সংস্থা সূত্রে খবর, কেন্দ্রের মধ্যস্থতায় ব্যাঙ্ক থেকে কম সুদে ঋণ নিয়ে এখনকার মতো বাঁচানোর চেষ্টা করা হচ্ছে বিমান সংস্থাটিকে। বিভিন্ন তেল সংস্থা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে যে টাকা বকেয়া পড়ে রয়েছে, সে ক্ষেত্রেও ছাড় চেয়েছে কিংফিশার। শুক্রবারও কিংফিশার প্রায় ৪০টি উড়ান বাতিল করায় দেশ জুড়ে চূড়ান্ত দুর্ভোগে পড়লেন যাত্রীরা। নিয়ে গত পাঁচ দিনে মোট ১৬০টি উড়ান বতিল করল বিমান সংস্থাটি।
বিজয় মাল্যের বিমান সংস্থাটির ভবিষ্যৎ এখন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়ের হাতে। প্রণববাবু এই মুহূর্তে তাঁর নির্বাচনী কেন্দ্র জঙ্গিপুরে রয়েছেন। দিল্লি ফিরে তিনি কিংফিশার কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন বলে অর্থমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গিয়েছে।
সংস্থা সূত্রের খবর, কিংফিশারের ঋণের বোঝা বাড়তে বাড়তে হাজার ৫৭ কোটি টাকায় পৌঁছেছে।
ধারে আর জ্বালানি দেবে না বলে তেল সংস্থাগুলিও কিংফিশারকে জানিয়ে দিয়েছে।
যে সব বিদেশি সংস্থার কাছ থেকে বিমান ভাড়া করে চালানো হচ্ছিল, তারাও বকেয়া টাকা চেয়ে পাঠিয়েছে। শুক্রবার সংস্থার শেয়ারের দরও তলানিতে ঠেকেছে।
বিপদ বুঝে পাইলটরাও অন্য সংস্থায় চাকরি নিয়ে চলে যাচ্ছেন। এমতাবস্থায় উড়ান বাতিল করে দেওয়া ছাড়া তাদের কিছু করার নেই বলে সংস্থা সূত্রে যুক্তি দেওয়া হয়েছে।
যাঁরা আগে থেকে কিংফিশারের টিকিট কেটে রেখেছিলেন তাঁরা এই অবস্থায় বিপাকে পড়েছেন। তাঁদের ওই টিকিট বাতিল করে দিয়ে অন্য সংস্থার কাছ থেকে চড়া দামে চিকিট কিনতে হচ্ছে। আগে থেকে না জানিয়ে দুমদাম করে ভাবে উড়ান বাতিল করে দেওয়ার জন্য সংস্থাকে কড়া বার্তা পাঠিয়েছে বিমান পরিবহনের নিয়ন্ত্রক ডিরেক্টরেট জেনারেল অফ সিভিল অ্যাভিয়েশন (ডিজিসিএ ) কিংফিশার কর্তাদের অভিযোগ, সংস্থার এই পরিণতির জন্য কেন্দ্র রাজ্য সরকারের কর -নীতিই দায়ী। নতুন নতুন বিমানবন্দর তৈরি হচ্ছে। সেখানে বিমান ওঠানামা বিমান দাঁড় করানোর ভাড়া ক্রমাগত বাড়ছে। সংস্থার এক কর্তার কথায়, “মুম্বইয়ে সদর দফতর করায় আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। সকাল সন্ধ্যায় মুম্বইয়ে নামার সময়ে প্রতি বার ৪৫ মিনিট করে আকাশে চক্কর কাটতে হচ্ছে। প্রতি বার চক্কর কাটার জন্য খরচ হচ্ছে লক্ষ ৬০ হাজার টাকার জ্বালানি।”
এই পরিস্থিতিতে অনটন কাটাতে কেন্দ্রের শরণাপন্ন হয়েছেন বিমান সংস্থাটির কর্তৃপক্ষ। ধুঁকতে থাকা রাষ্ট্রায়ত্ত বিমান সংস্থা এয়ার ইন্ডিয়ার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রক যেমন আর্থিক সহযোগিতা করেছে, তেমন সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে কিংফিশারের জন্যও। তবে কিংফিশারের সিইও সঞ্জয় অগ্রবাল জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে সরাসরি কোনও অর্থ সাহায্য তাঁরা চাননি।
প্রশ্ন উঠেছে, এত প্রাচুর্য নিয়ে বিমান সংস্থা চালু করা, আচমকা ডেকান সংস্থাকে কিনে সস্তার বিমান পরিবহণের প্রতিযোগিতায় নামা, তেলের দাম বেড়ে যাওয়ার পরেও উড়ান সংখ্যা না কমানোর মতো একের পর এক ‘হঠকারী’ সিদ্ধান্তই কি আজ কিংফিশারকে পথে বসাল? সংস্থার এই বিপদের দিনে ধনকুবের মালিক বিজয় মাল্য কোথায়? কেন্দ্র কেন সাধারণ মানুষের করের টাকায় একটি বেসরকারি সংস্থাকে ‘বিশেষ ভাবে’ সাহায্য করবে
সব প্রশ্ন নিয়ে শুক্রবার থেকেই শোরগোল শুরু হয়েছে। কেন্দ্র কিংফিশারকে সাহায্য করলে বিজেপি তার বিরোধিতা করবে বলে দিন দিল্লিতে ঈঙ্গিত দিয়েছেন দলের নেতা যশবন্ত সিন্হা। কংগ্রেসের মধ্যেও বিষয়টি নিয়ে মতপার্থক্য রয়েছে। এক পক্ষের মতে, মুক্ত অর্থনীতিতে ক্ষতি হলে সংস্থা বন্ধ হয়ে যাবে। অন্য কেউ তার জায়গা নেবে, এটাই নিয়ম। সরকার কেন তার সাহায্যে এগিয়ে আসবে? আর এক পক্ষ বলছেন, শুধু কিংফিশার নয়, গোটা বিমান পরিবহণ ক্ষেত্রই এখন নানা সমস্যায় ধুঁকছে। সে ক্ষেত্রে কেন্দ্র তার দায়িত্ব এড়িয়ে যেতে পারে না।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.