আশঙ্কা সত্যি করে তলানিতে ঠেকল শিল্প বৃদ্ধির হার। এই নিয়ে টানা তিন মাস বজায় থাকল তার নিম্নমুখী গতি। জুলাই ও অগস্টের পর সেপ্টেম্বরে আরও কমে তা দাঁড়াল ১.৯%। গত দু’বছরে যা সর্বনিম্ন। বিশ্ব অর্থনীতির বেহাল দশা এবং ভারতীয় সংস্থাগুলির ‘খারাপ’ ফলাফলের পর এই খবরে স্বাভাবিক ভাবেই খুশি হয়নি শেয়ার বাজার। যার জেরে এ দিন প্রায় ১৬৯ পয়েন্ট নেমে ১৭,১৯২.৮২ অঙ্কে থামে সেনসেক্স। তবে এই ‘জোড়া দুঃসংবাদের দিনে’ সামান্য হলেও আশার একমাত্র রুপোলি রেখা খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি হ্রাস।
শিল্প বৃদ্ধির এই পতন সাময়িক নাকি দীর্ঘস্থায়ী হবে, তার উত্তর দেবে সময়ই। তবে পরিস্থিতি উদ্বেগজনক বলে মনে করছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়। অবশ্য তাঁর আশা, “কিছুটা হলেও কমতে শুরু করেছে খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি। |
তিন সূচক |
খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি ০.৪০% ê |
সেনসেক্স ০.৯৭% ê |
শিল্পোৎপাদন ১.৬৯% ê |
|
ডিসেম্বরের মধ্যে তা এমন জায়গায় পৌঁছবে, যে আর সুদ বাড়ানো প্রয়োজন হবে না রিজার্ভ ব্যাঙ্কের।” এ ভাবে শিল্পের রথের চাকা বসে যাওয়া রুখতে আর সুদ বাড়ানোর বিষয়টি রিজার্ভ ব্যাঙ্কের পুনর্বিবেচনা করা উচিত বলে মনে করেন অর্থমন্ত্রকের প্রধান উপদেষ্টা কৌশিক বসু। আর্থিক বছরের শেষে শিল্প বৃদ্ধির হার প্রত্যাশার তুলনায় কমে ৬ শতাংশে দাঁড়াতে পারে মত প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা সি রঙ্গরাজনেরও। বণিকসভাগুলির দাবি, শিল্পের এখন যা দশা, তাতে সুদ বাড়ানো দূরের কথা। বরং কম সুদের জমানায় ফিরুক রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। শিল্প বৃদ্ধির গতি ঢিমে হওয়ার কথা মেনে নিয়েছেন শীর্ষ ব্যাঙ্কের ডেপুটি গভর্নর সুবীর গোকর্ণ-ও। কিন্তু এখনও ১২% ছুঁইছুঁই খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধিও যে গ্রহণযোগ্য নয়, তা মনে করিয়ে দেন তিনি। প্রসঙ্গত, গত ২৯ অক্টোবর শেষ হওয়া সপ্তাহে এই হার আগের সপ্তাহের ১২.২১% থেকে সামান্য কমে হয়েছে ১১.৮১%।
সেপ্টেম্বরে শিল্প বৃদ্ধির হারকে আরও টেনে নামিয়েছে একাধিক শিল্প ক্ষেত্রের সঙ্কোচন। আলোচ্য মাসে আগের বছরের একই সময়ের সাপেক্ষে খনন শিল্প সঙ্কুচিত হয়েছে ৫.৬%। প্রায় সঙ্গে সঙ্গে ব্যবহৃত হয়, এমন ভোগ্যপণ্যের উৎপাদন কমেছে ১.৩%। মূলধনী পণ্য ক্ষেত্রে সঙ্কোচন ৬.৮%। প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ উৎপাদন শিল্পও। এই ক্ষেত্র সঙ্কুচিত না হলেও, তার বৃদ্ধির হার দাঁড়িয়েছে মাত্র ২.১%। ফলে সব মিলিয়ে সার্বিক পরিস্থিতি যা দাঁড়িয়েছে, তাতে এর পরেও রিজার্ভ ব্যাঙ্ক সুদ বৃদ্ধির পথে হাঁটলে, এই কোণঠাসা অবস্থা থেকে বেরোনো তাদের পক্ষে কার্যত অসম্ভব হয়ে উঠবে বলেই শিল্পমহলের দাবি। |