পাথরশিল্পে কাটাবে জট, আশায় এলাকাবাসী |
ভাস্করজ্যোতি মজুমদার • মহম্মদবাজার |
বীরভূমে হাতে গোনা কয়েকটি শিল্পের মধ্যে পাথর শিল্প অন্যতম। এই শিল্পের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ভাবে ২৫-৩০ হাজার শ্রমজীবী মানুষ নির্ভরশীল। পরোক্ষ ভাবে লক্ষাধিক মানুষের রোজগার হয় মহম্দবাজারের এই শিল্প থেকেই। কিন্তু বছর দু’য়েক আগে নানা আন্দোলনের জেরে মহম্মদবাজারের পাঁচামি ও তালবাঁধ এলাকায় মুখ থুবড়ে পড়েছে এই শিল্প। ব্যাপক সংঘর্ষ ও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাও ঘটেছিল। তিন চার জনের মৃত্যুও হয়েছিল। জটিলতা কাটাতে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য জেলায় এসেছিলেন। সব রকম চেষ্টা করেও আজও সম্পূর্ণ স্বাভাবিক হয়নি এই শিল্পের কাজকর্ম। |
 |
সিউড়ি সার্কিট হাউস থেকে সরানো হচ্ছে মেটাল ডিটেক্টর। ছবি: তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়। |
তবে সরকার পরির্তনের সঙ্গে সঙ্গে এলাকার মানুষ আশা করেছিলেন নতুন মুখ্যমন্ত্রী এমন কিছু ব্যবস্থা নেবে যাতে শিল্পের কাজকর্ম স্বাভাবিক হয়ে যাবে। কিন্তু নতুন সরকার গঠনের পরে দীর্ঘদিন পার হয়ে গেলেও তেমন কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে দাবি করেছেন সমস্ত স্তরের লোকজন। তবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আজ শনিবার বীরভূমে আসছেন। জেলার সার্বিক উন্নয়ন নিয়ে বৈঠক করার কথা আছে তাঁর। তাই মুখ্যমন্ত্রীর এই সফরকে ঘিরে আশায় বুক বেঁধেছেন শিল্পপতি, শ্রমজীবীমানুষ এবং এলাকার মানুষজন সকলেই।
পাঁচামি মাইন ওনার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নাজির হোসেন মল্লিক বলেন, “পাঁচামি ও তালবাঁধ এলাকায় ৭০-৮০টি খাদান ও ছোট বড় মিলিয়ে ৪০০-৫০০ ক্রাশার ছিল। বর্তমানে পাঁচামি এলাকায় ৪টি, তালবাঁধ এলাকায় ৯টি খাদান চলছে। প্রায় শতিনেক ক্রাশার চলছে। তাও আবার কাঁচামালের অভাবে উৎপাদন কম হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী জেলায় আসছেন। পাথর শিল্পের কাজকর্ম স্বাভাবিক করার জন্য মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে চাই বলে জেলাশাসকের কাছে আবেদনত্র দিয়েছি।” |
 |
বোলপুরে মহকুমা প্রশাসনিক ভবনে চলছে পরিষ্কার। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী। |
পাঁচামি এলাকার শ্রমিক নেতা বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আমাদের আবেদন কাজ হারানো শ্রমিকদের কাজ দেওয়া হোক।” আদিবাসী গাঁওতার নেতা সুনীল সোরেন ও সম্পাদক রবিন সোরেন বলেন, “আমরা শিল্পের বিরোধী নই। তবে নিময় মেনে পরিবেশন দূষণ না করে পাথর শিল্প চলুক। এলাকার রাস্তা, পানীয়, শিক্ষা এ সবের ব্যবস্থা করতে হবে। এই দাবিগুলি-সহ ২২ দফা দাবি আগের মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের কাছে জানিয়েছিলাম। তিনি ৩ কোটি টাকার প্যাকেজ ঘোষণা করেছিলেন। যার মধ্যে প্রায় ১ কোটি ৭ লক্ষ টাকার কাজ বাস্তবায়িত হয়েছে। বাকি কাজ বাস্তবায়িত হোক সে জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করতে চেয়ে জেলাশাসককে স্মারকলিপি দিয়েছিলাম। তা মঞ্জুর হয়নি।” জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মিনা বলেন, “পাথরশিল্পের কাজ ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হবে।” |
|