|
|
|
|
ফের ঢিলেঢালা লালবাগ হাসাপাতাল |
ফিরেছে সারমেয়কুল, স্যালাইন দিচ্ছেন আয়াই |
নিজস্ব সংবাদদাতা • লালবাগ |
‘অ্যাসিড-কাণ্ড’ অন্তত অভব্যতা রুখেছে!
সাময়িক হতে পারে, কিন্তু লালবাগ মহকুমা হাসপাতালে প্রসূতির গায়ে অ্যাসিড ডালা কিংবা তাঁর সদ্যোজাতকেও ওই ধরনের কোনও রাসায়নিকে সাফ করতে গিয়ে পুড়িয়ে ফেলার ঘটনাটি সামনে এসে পড়ায় ওই হাসপাতালের স্বাস্থ্যকর্মীরা অন্তত রোগীর বাড়ির লোকজনের সঙ্গে অভব্য ব্যবহার করছেন না। তাঁদের ‘আপাত-ভদ্র’ ব্যবহার দেখে তাই কিছুটা ‘অস্বস্তিতেই’ রয়েছেন রোগীর পরিবারের লোকজন।
তাঁদেরই এক জন, সুকুমার মণ্ডলের সোমবার অকপট স্বীকারোক্তি, “ভাবতেই পারছিনা, আমাদের সঙ্গে নার্স কিংবা চিকিৎসকেরা এখন বেশ নরম গলায় কথা বলছেন। এত দিন হাসপাতালে এলে মনে হত অপরাধ করে ফেলেছি, রীতিমতো কুকর-বেড়ালের মতো ব্যবহার করা হত। তাঁদের আপাত-ভদ্র ব্যবহার দেখে কিছুটা অস্বস্তিতেই লাগছে!” |
|
নিজস্ব চিত্র। |
কিন্তু বাকিটা? না, সে ছবি বদলায়নি। রবিবার নতুন তদন্তকারী দল হাসপাতাল পরিদর্শনে আসবে বলে সাফসুতরো করা হয়েছিল। ফিনাইল পনেছিল করিডরের কোণে। হাসপাতালে সারমেয়কুলকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল অন্যত্র। কিন্তু চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যেই তাদের প্রত্যাবর্তনে লালবাগ মহকুমা হাসপাতাল তার চেনা চেহারা ফিরে পেয়েছে। হাসপাতালের ওয়ার্ডের ভেতরে রোগী-কুকুরের সহাবস্থান তাই এ দিনও চোখ এড়ায়নি। খোঁজ নিয়ে দেখা গিয়েছে, ‘কলবুক’ পাঠানোর পরেও কিছু চিকিৎসক দেরি করে হাসপাতালে পৌঁছন। এমনকী আয়াদের দিয়ে রোগীদের স্যালাইন দেওয়াও অব্যাহত।
সুপার শাশ্বতী নাগ বলেন, “হাসপাতালের ভেতর থেকে সারমেয় তাড়ানোর ব্যাপারে পুরপ্রধানকে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে। এর পাশাপাশি হাসপাতাল থেকে সারমেয় দূর করতে বেশি কিছু সতর্কতা অবলম্বনও করা হচ্ছে। তবে হাসপাতাল থেকে কলবুক দেওয়ার পরেও চিকিৎসক দেরি করে এসেছেন এমন কোনও অভিযোগ আমার কাছে কেউ করেননি।”
লালবাগ মহকুমা হাসপাতালের ‘অ্যাসিড-কাণ্ড’ সরকারি হাসপাতালের প্রতি সাধারণ মানুষের ‘বিশ্বাসযোগ্যত্য’ যে হারিয়ে গিয়েছে তা স্বীকার করেন সিএমওএইচ শাহজাহান সিরাজ। তাঁর কথায়, “সরকারি হাসপাতালের প্রতি সাধারণ মানুষের বিশ্বাসযোগ্যতা ফিরিয়ে আনাটা এখন জরুরি।” তিনি অবশ্য জানান, ওই হাসপাতালে অ্যাসিড-কাণ্ডে জড়িতদের বিরুদ্ধে ‘শাস্তিমূলক’ ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। তাঁর কথায়, “ওই ঘটনায় দোষী ব্যক্তিদের শাস্তি পেতেই হবে। কেননা, দোষী ব্যক্তি পার পেয়ে গেলে কর্মীরা নিজেদের কাজে যত্নবান হবেন না।”
এ দিকে, রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের নিয়োগ করা দুই সদস্যের নতুন তদন্ত কমিটির রিপোর্ট মঙ্গলবারের মধ্যেই জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য দফতরের তরফে সহ-অধিকর্তা (প্রশাসন, হাসপাতাল) বিআর শতপথী বলেন, “মঙ্গলবারের মধ্যে তদন্তের রিপোর্ট জমা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। তদন্তের রিপোর্টের ভিত্তিতে ওই ঘটনায় কারও গাফিলতি থাকলে তাঁর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” |
|
|
|
|
|