|
|
|
|
দিনভর পরিদর্শনে স্বাস্থ্যকর্তা |
বেহাল ৬ হাসপাতাল ঘুরে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ সুপারদের |
পীযূষ সাহা • মালদহ |
ছুটির দিন, রবিবার মালদহের একাধিক হাসপাতালে গিয়ে বেহাল দশা দেখে ক্ষুব্ধ রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা শ্যামাপদ বসাক। ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বেশির ভাগ চিকিৎসকেরই দেখাই পাননি তিনি। দেখা পাননি খোদ জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকেরও। পাশাপাশি বরাদ্দ দেওয়ার পরেও জেলা সদর হাসপাতালের প্রতিটি ওয়ার্ডে নোংরা আবর্জনা ও প্রসূতি বিভাগে রাত ৯টা পর্যন্ত পুরুষদের ভিড় দেখে স্বাস্থ্য অধিকর্তা জেলা সদর হাসপাতালের সুপারকে ভর্ৎসনা করেন। দ্রুত জেলার সমস্ত ব্লক থেকে শুরু করে সদর হাসপাতাল সাফসুতরো করার নির্দেশও দেন তিনি। রবিবার সকাল থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত জেলার ৫টি ব্লক হাসপাতাল ও জেলা সদর হাসপাতাল ঘুরে দেখেন স্বাস্থ্য অধিকর্তা। তিনি বলেন, “ছুটির দিনে জেলার হাসপাতালগুলির হাল দেখতে মালদহে এসেছিলাম। ব্লক হাসপাতাল থেকে জেলা সদর হাসপাতালে ঘুরে যা দেখলাম তা ভয়াবহ! মিল্কি ব্লক হাসপাতালে ৪ জন চিকিৎসক। অথচ আমি গিয়ে ৩ জন চিকিৎসককেই খুঁজে পাইনি। একজন চিকিৎসক ও নার্স রোগীদের ভিড় সামাল দিতে হিমসিম খাচ্ছেন।” একই হাল ছিল মানিকচক ব্লক হাসপাতালের। সেখানে ৬ জন চিকিৎসকের মধ্যে ৫ জনের দেখা পাননি স্বাস্থ্য অধিকর্তা। সদর হাসপাতালের লেবার রুম ও প্রসূতি বিভাগে বটগাছের মতো ঝুল জমা দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। প্রসূতি বিভাগে যতজন মা ও শিশু ভর্তি রয়েছে তার চেয়ে বেশি পুরুষ মানুষ ওই ওয়ার্ডে ভিড় জমিয়েছেন দেখে অবাক হয়ে যান তিনি। স্বাস্থ্য অধিকর্তা বলেন, “জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে ৭ দিনের মধ্যে সমস্ত হাসপাতাল পরিস্কার করার নির্দেশ দিয়েছি। পাশাপাশি যে সমস্ত চিকিৎসক ছুটি না নিয়ে হাসপাতাল ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে বলেছি। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ব্যবস্থা না-নিলে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর থেকে ওই সমস্ত চিকিৎসককে শো কজ করা হবে। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক স্বপন ঝরিয়াত বলেন, “পারিবারিক কারণে ছুটি নিয়েছিলাম। স্বাস্থ্য অধিকর্তার নির্দেশ মেনে কাজ করা হবে। ১৫ দিনের মধ্যে জেলার সমস্ত হাসপাতাল পরিস্কার করা হবে। জেলা সদর হাসপাতালে যে সমস্ত চিকিৎসকরা দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছেন তাদের বিভিন্ন ব্লকের হাসপাতালে বদলি করা হবে।” স্বাস্থ্য অধিকর্তা ওই দিন আড়াইডাঙ্গা ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রেও যান। ওয়ার্ডে ঢুকতেই রক্ত, পুঁজমাখা তুলো, ব্যান্ডেজ পড়ে থাকতে দেখে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন তিনি। হাসপতালে যে সমস্ত রোগী ভর্তি রয়েছে তাঁদের কী চিকিৎসা হচ্ছে, কী ওষুষ দেওয়া হচ্ছে, বেড টিকিটে তার উল্লেখ না-দেখে চিকিৎসকদের ভর্ৎসনা করেন। তিনি বলেন, “রোগীকে কী চিকিৎসা করা হচ্ছে সেটা বেড টিকিটে লেখা চিকিৎসকের দায়িত্ব ও কর্তব্য। বেড টিকিটে না লেখা চিকিৎসকের গাফিলতি। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে ওই চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলেছি। আড়াইডাঙার পরে মালতিপুর, চাঁচল মহকুমা হাসপাতাল ঘুরে রাত ৮ টা নাগাদ জেলা সদর হাসপাতালে ঢোকেন তিনি। সদর হাসপাতালে ঢুকেই প্রসূতি বিভাগে ও লেবার রুমে যান। লেবার রুম দেখে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন তিনি। সদর হাসপাতালের সুপারকে সকলের সামনে ভর্ৎসনা করে ৭ দিনের মধ্যে সমস্ত পরিষ্কার করার নিদের্শ দেন। |
|
|
|
|
|