ট্রেন বেড়েছে। বাড়েনি প্ল্যাটফর্ম। ফলে প্ল্যাটফর্ম খালি হওয়ার অপেক্ষায় স্টেশন থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে দাঁড়িয়ে থাকতে হয় যাত্রিবাহী ট্রেনগুলিকে। বাঁকুড়া স্টেশনের এই সমস্যা নিত্য দিনের। ট্রেনে সফর করা যাত্রীদের ভোগান্তি প্রতিদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সমস্যায় পড়ছেন রেলকর্মীরাও।
রেল সূত্রের খবর, দু’টি প্ল্যাটফর্মে সারা দিনে ৩৫ জোড়া ট্রেনের চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন তাঁরা। সমস্যার মূল কারণ, নতুন চালু হওয়া রাজধানী এক্সপ্রেস-সহ কয়েকটি ট্রেন যখন ঘণ্টার পর ঘণ্টা একটি প্ল্যাটফর্ম জুড়ে দাঁড়িয়ে থাকে, তখনই প্রকট হয় সমস্যাটি। বাধ্য হয়ে সেই সময় একটি প্ল্যাটফর্ম দিয়েই চলাচল করাতে হয় অন্যান্য ট্রেনগুলিকে। সেই কারণেই বেশ কিছু ট্রেনকে প্ল্যাটফর্মে ঢোকা ট্রেনগুলির প্ল্যাটফর্ম ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার অপেক্ষায় দূরেই দাঁড়িয়ে থাকতে হয়।
রেলকর্মীরা জানান, এই সমস্যার কারণে রোজ সমস্যায় পড়তে হয় মেদিনীপুর-আদ্রা, রায়নগর লোকাল, আসানসোল-খড়্গপুর, খড়্গপুর-আদ্রা-সহ বেশ কিছু ট্রেনকে। যাত্রীদের ক্ষোভের মুখেও পড়তে হয় রেলকর্মীদের। বাঁকুড়া স্টেশন ম্যানেজারের দফতরে উত্তেজিত যাত্রীদের চড়াও হওয়ার ঘটনাও নতুন কিছু নয়। রেলওয়ে ইউজার্স অর্গানাইজেশনের যুগ্ম সম্পাদক দেবু চক্রবর্তী বলেন, “আমরা এই সমস্যা সমাধানের জন্য দীর্ঘ দিন ধরে একটি নতুন প্ল্যাটফর্ম তৈরির দাবি জানিয়ে আসছি। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। ট্রেনের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় সমস্যাটি আরও বড় আকার ধারণ করেছে। নাকাল হচ্ছেন যাত্রীরা।”
বিষ্ণুপুর থেকে বাঁকুড়া রোজ যাতায়াত করেন বিশ্বনাথ মণ্ডল, অমিত দাস, ঝন্টু পালরা। তাঁরা এ বিষয়ে বলেন, “প্রতিদিন বাঁকুড়া স্টেশনে ঢোকার বেশ কিছু দূর আগে ট্রেন আটকে পড়ায় যে কাজের জন্য বের হই, সেই কাজে গিয়ে অসুবিধায় পড়ি আমরা। দেরি হয়ে যাওয়ায় নির্দিষ্ট সময়ে গন্তব্যে পৌঁছতে পারি না। সমস্যা কাটাতে বাঁকুড়া স্টেশনে নতুন প্ল্যাটফর্ম হওয়া দরকার।”
বাঁকুড়ার স্টেশন ম্যানেজার সত্যেন্দ্রনাথ মৈত্র বলেন, “বর্তমানে ট্রেনের সংখ্যা বেড়েছে। দু’টি প্ল্যাটফর্ম বলেই এই জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। যাত্রীদের অসুবিধার মধ্যে পড়তে হচ্ছে। প্রায়ই ক্ষোভের মুখে পড়তে হচ্ছে আমাদের। নতুন প্ল্যাটফর্ম না হওয়া পর্যন্ত এই সমস্যা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব নয়। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে জানিয়েছি।”
আদ্রা ডিভিশনের ডিভিশনাল ম্যানেজার অমিতকুমার হালদারের বক্তব্য, “সমস্যা হচ্ছে মেনে নিচ্ছি। তবে নতুন প্ল্যাটফর্ম গড়ার জায়গার অভাব রয়েছে বাঁকুড়া স্টেশনে। এখনই কিছু করা সম্ভব নয়। বিষয়টি নিয়ে আলোচনায় বসব।” |