নিজস্ব সংবাদদাতা • আরামবাগ |
এক সিপিএম নেতার বাড়ি ও দোকানঘর ভাঙচুর এবং তাঁর স্ত্রীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। ঘটনার প্রতিবাদ করতে গেলে ওই নেতার প্রতিবেশী তথা দলীয় কর্মীকেও লাঠি-রড দিয়ে বেধড়ক পেটানো হয় বলে অভিযোগ। রবিবার রাতে আরামবাগের মোবারকপুর গ্রামের ঘটনা। মানিক পোড়েল নামে আহত সিপিএম কর্মীকে রাতেই আরামবাগ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল।
যে সিপিএম নেতার বাড়িতে রবিবার রাতে হামলা হয়, তাঁর নাম লক্ষ্মণ ঘোড়ুই। তিনি সিপিএমের মোবারকপুর শাখা কমিটির সদস্য। অশান্তির আঁচ পেয়ে রবিবার সন্ধ্যাতেই তিনি বাড়ি ছাড়েন। তাঁর স্ত্রী ভারতীদেবী বাড়িতেই ছিলেন। তিনি ২০০৩ সাল থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত সালেপুর-১ পঞ্চায়েতের সদস্য ছিলেন। দম্পতির ছেলে সঞ্জয় ওই পঞ্চায়েতের ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পের সুপারভাইজার।
লক্ষ্মণবাবুর অভিযোগ, “১০০ দিনের প্রকল্পে দুর্নীতির অপবাদ দিয়ে আড়াই লক্ষ টাকা জরিমানা করে তৃণমূল। তা দিতে অস্বীকার করায় প্রতিদিনই হুমকি দিচ্ছিল। চার দিন ধরে হুমকির মাত্রা বেড়ে গিয়েছিল। পুলিশে খবর দিয়েছিলাম। সেই কারণেই আমার বাড়ি ও গির্জাতলায় মুদি-দোকানে ভাঙচুর চালানো হল।” তিনি বাড়িতে না-থাকায় স্ত্রী ভারতীদেবীকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। অন্য দিকে, হাসপাতালে আহত সিপিএম কর্মী মানিক পোড়েল বলেন, “রাত ১১টা নাগাদ তৃণমূলের শ’খানেক ছেলে লক্ষ্মণবাবুর বাড়িতে চড়াও হয়। আমি প্রতিবাদ করি। ওরা আমাকে তুলে নিয়ে গিয়ে মাঠে মারধর করে ফেলে রেখেছিল। পরে গ্রামবাসীরা উদ্ধার করেন।”
লক্ষ্মণবাবু এবং মানিকবাবু থানায় এ ব্যাপারে আলাদা আলাদা ভাবে অভিযোগ দায়ের করেছেন। পুলিশ জানায়, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযুক্তেরা পলাতক।
অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি সুফল চানক। তিনি বলেন, “ঘটনার সঙ্গে তৃণমূলের কোনও যোগ নেই। গ্রামবাসীরা দুর্নীতির প্রতিবাদ করেছেন। গরমিল হওয়া টাকা ফেরতের দাবি করে তা উন্নয়নের কাজে ব্যবহার করতে চেয়েছিলেন। তা নিয়েই গোলমাল হয়।”
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মাস দুয়েক আগে গ্রামে ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় পঞ্চায়েত কর্মীরা সুপারভাইজার এবং জব কার্ড থাকা হোল্ডারদের বৈঠকে ডাকেন। সঞ্জয় ওই বৈঠকে যাননি। অভিযোগ, বৈঠকের মাঝপথে তৃণমূলের লোকজন সুপারভাইজারদের মারধর এবং পঞ্চায়েতের ইঞ্জিনিয়ার-সহ কর্মীদের কান ধরে ওঠবোস করায়। তার পরে সুপারভাইজারদের কাছ থেকে লিখিয়ে নেয় সঞ্জয় এবং তাঁর বাবা লক্ষ্মণ ঘোড়ুইয়ের নির্দেশে দুর্নীতি হয়েছে। তার পর থেকে আড়াই লক্ষ টাকা জরিমানার বিধান দিয়ে হুমকি দেওয়া হচ্ছিল বলে অভিযোগ লক্ষ্মণবাবুর। দলের পক্ষ থেকে ওই বৈঠকে গোলমাল বা জরিমানার কথা মানতে চায়নি তৃণমূল। |