পূর্বাঞ্চলের ন’টি রাজ্যের ব্যাঙ্ককর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবে কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রক। সেখানে উপস্থিত থাকার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে গত প্রায় তিন মাস ধরে অনুরোধ জানাচ্ছিল তারা। কিন্তু মমতা সময় দিতে না পারায় আগামিকাল শুধু ব্যাঙ্ককর্তাদের সঙ্গেই কলকাতায় বৈঠকে বসছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়। অর্থ মন্ত্রক সূত্রে বলা হচ্ছে, অদূর ভবিষ্যতে এমন আর একটি বৈঠকের জন্য মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবার সময় চাওয়া হবে। তখনও তিনি ব্যস্ততার কারণে সময় দিতে না পারলে বৈঠকটি গুয়াহাটিতে করা হবে।
দ্বিতীয় ইউপিএ সরকারের প্রথম থেকেই ব্যাঙ্ককর্তাদের সঙ্গে এ ধরনের আঞ্চলিক বৈঠক করছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী। আর সেই বৈঠকে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের মুখ্যমন্ত্রীদের ডাকছেন তিনি। অর্থ মন্ত্রক সূত্রে বলা হচ্ছে, মুখ্যমন্ত্রীদের ডাকার সুনির্দিষ্ট কারণ রয়েছে। সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ব্যাঙ্কগুলি যথাযথ ভূমিকা পালন করছে কি না, তা খতিয়ে দেখাই এই বৈঠকগুলির উদ্দেশ্য। এ ব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রীরা প্রয়োজন মতো নিজেদের মতামত দিতে পারেন। তা ছাড়া সামগ্রিক ভাবে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে কেন্দ্রেরও বেশ কিছু প্রকল্প রয়েছে। যেমন, কৃষি ঋণ দেওয়ার পরিমাণ বাড়িয়েছে সরকার। কোনও আর্থিক বছরে মোট ঋণের ১৫ শতাংশ যাতে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে দেওয়া হয়, সেই নির্দেশও তারা ব্যাঙ্কগুলিকে দিয়েছে। যাতে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা শিল্প স্থাপন, কৃষি, বাণিজ্যের জন্য ঋণ পান এবং তাঁদের আর্থ-সামাজিক উন্নতি ঘটে। এ ধরনের আঞ্চলিক বৈঠকে সেই সব প্রকল্পের অগ্রগতিও খতিয়ে দেখে অর্থ মন্ত্রক। কোনও ব্যাঙ্ক লক্ষমাত্রা পূরণ করতে পারছে কি না, না পারলে কী প্রতিবন্ধকতা রয়েছে, তা খতিয়ে দেখা হয়। তা ছাড়া বিভিন্ন অঞ্চলের মধ্যে তুলনাও করা যায়।
পূর্বাঞ্চলের ন’টি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রীদের নিয়ে এর আগে পটনায় বৈঠক করেছেন প্রণববাবু। তখনই ঠিক হয়েছিল, পরবর্তী বৈঠক হবে কলকাতায়। সেখানে মুখ্যমন্ত্রীকে উপস্থিত থাকতে বলা হবে। অর্থ মন্ত্রকের এক কর্তার কথায়, পশ্চিমবঙ্গে নতুন সরকার ক্ষমতায় এসেছে। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির কাছ থেকে কী ধরনের সাহায্য রাজ্য সরকার চায়, তা এই বৈঠকে তুলে ধরার সুযোগ রয়েছে। গত প্রায় তিন মাস ধরে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে সময় চাওয়া হচ্ছে। কিন্তু উত্তর পাওয়া যায়নি। হতেই পারে মুখ্যমন্ত্রী ব্যস্ত। কারণ, ছ’মাসও হয়নি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন। তাই আপাতত কাল ব্যাঙ্ককর্তাদের সঙ্গে এক প্রস্ত বৈঠক সেরে নিয়ে পরে আর একটি বৈঠকের জন্য সময় চাওয়া যাবে।
কিন্তু তখনও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী সময় দিতে না পারলে এই বৈঠক ফেলে রাখা সম্ভব নয়। সে ক্ষেত্রে গুয়াহাটিতে ওই বৈঠক করে অসমের মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ-সহ বাকি মুখ্যমন্ত্রীদের ডাকা হবে। পশ্চিমবঙ্গের কারণে বৈঠক বাতিল করে দিলে বাকি রাজ্যগুলি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। |