দীর্ঘদিন ধরে সেচ খালের উপরে সেতু পুনরায় নির্মাণের জন্য দাবি জানিয়ে আসছেন বাসিন্দারা। কিন্তু স্থানীয় প্রশাসন কোনও ব্যবস্থা না নেওয়ায় স্থানীয় কৃষিজীবীরা ওই সেতু লাগোয়া রাস্তা কেটে সেচ খালের জল ব্যবহার করছেন। এর ফলে এলাকার বাসিন্দারা চরম সমস্যায় পড়েছেন। বিস্তর ঘুরপথে তাঁদের গন্তব্যে পৌঁছতে হচ্ছে। সমস্যাটি ময়ূরেশ্বর থানার লোকপাড়া গ্রাম লাগোয়া এলাকার।
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, লোকপাড়া গ্রাম সংলগ্ন এলাকায় ময়ূরাক্ষী সেচ খাল পাশাপাশি দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে বয়ে গিয়েছে। একটি গিয়েছে স্থানীয় বেলেড়া গ্রামের দিকে, অন্যটি কুমিরতড়া গ্রামের দিকে। সেচ খালের ওই দুই জায়গার উপর দিয়ে গিয়েছে শিবগ্রাম-ষাটপলশা সড়ক। কিন্তু স্থানীয় কৃষিজীবীরা বেলেড়া গ্রামের কাছে সেচ খালের সেতু বরাবর রাস্তা কেটে দেওয়ায় ওই সড়কে যানচলাচল কার্যত বন্ধ হয়ে গিয়েছে। |
কৃষকেরা অবশ্য বলেন, রাস্তা না কেটে উপায় কী? বিডিওকে স্মারকলিপি দেওয়া সত্ত্বেও নতুন করে সেতু নির্মাণের ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এ দিকে সেচের জলের অভাবে মাঠের ধান শুকিয়ে যেতে বসেছিল। তাই রাস্তা কেটেই সেচের জল নেওয়ার ব্যবস্থা করতে হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ওই সড়কে যানচলাচল প্রায় বন্ধ করে দিয়েছে রামপুরহাট, আমোদপুর, সাঁইথিয়া, কান্দি-সহ বিভিন্ন রুটের বাস। দিন দশেক ধরে যানচলাচল পুরোপুরি বন্ধ। আমড়ার বাবন মণ্ডল, দুনার রওসন আলিরা বলেন, “শিবগ্রাম-ষাটপলশা সড়কে যানচলাচল বন্ধ থাকায় রামপুরহাট-সহ বিভিন্ন রুটে যেতে আমাদের ১৪-১৫ কিলোমিটার রাস্তা ঘুরে যেতে হয়।”
সকলে যে এই সমস্যার কথা জানেন তা নয়। এর ফলে তাঁদের অনর্থক হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। দিন কয়েক আগে স্থানীয় প্রতিবাদ ক্লাব আয়োজিত ফুটবল প্রতিযোগিতায় ম্যাটাডরে করে খেলতে এসেছিলেন মল্লারপুর নইশুভা নামে একটি দল। ওই দলের তরফে সাধন সিংহ বলেন, “রাস্তা কেটে দেওয়ার কথা জানা ছিল না। এর ফলে গাড়ি নিয়ে গিয়ে ফের প্রায় ২০ কিলোমিটার ঘুরপথে মাঠে পৌঁছতে হয়েছে।” স্থানীয় বাসিন্দারা অবশ্য কাটা রাস্তার উপরে কাঠের পাটাতন ফেলে মোটরবাইক, ছোটগাড়ি নিয়ে যাতায়াত করছেন। কিন্তু প্রতিবারের জন্য ৫-১০ টাকা করে ভাড়া দিতে হচ্ছে বলে অভিযোগ।
ময়ূরেশ্বর ২ ব্লকের বিডিও বাবুলাল মাহাতো বলেন, “সেতুটি সেচ দফতরের। মাস খানেক আগে জেলা সেচ দফতরের কাছে সেতুটি ফের নির্মাণের বিষয়ে জানানো হয়েছে। কৃষকেরা রাস্তা কেটে দিয়েছেন, সে ব্যাপারও জেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে।” জেলা পরিষদের সেচ কর্মাধ্যক্ষ বদরোজ্জামান খান অবশ্য বলেন, “বিষয়টি জানা নেই। খোঁজ নিয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেব।” |