পরিদর্শনে এসে নির্মীয়মাণ নিয়ন্ত্রিত বাজারের কাজ আপাতত বন্ধ রাখার নির্দেশ দিলেন রাজ্যের কৃষি বিপণন দফতরের মন্ত্রী অরূপ রায়। নলহাটিতে ওই বাজার নির্মাণের কাজে ব্যবহৃত ইট, বালি, সিমেন্ট-সহ অন্যান্য সামগ্রী নিম্নমানের বলে অভিযোগ মন্ত্রীর। ওই নির্মাণ যে কোনও সময়ে ভেঙে পড়তে পারে। তাই ওই সব সামগ্রীর নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করে দেখা হবে বলে জানিয়েছেন অরূপ রায়। রবিবার বিকেলে আচমকা পরিদর্শনে এসে ওই সমস্ত নমুনা সংগ্রহ করেন তিনি। ওই একই অভিযোগে সোমবার তিনি বোলপুরের ২ নম্বর ওয়ার্ডের লায়েকবাজার এলাকার একটি হাইড্রেনের কাজ বন্ধ করে দেন এবং নমুনা সংগ্রহও করেছেন। সেই সঙ্গে বোলপুরের সব্জি বাজার ঘুরে দেখেন। |
রাজ্য কৃষি বিপণন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, নলহাটিতে কবি ইকবাল কৃষি বিপণন কেন্দ্র নির্মাণের জন্য আগের বামফ্রন্ট সরকারের আমলে ৩ কোটি ৭৮ লক্ষ টাকা অনুমোদন হয়। ওই টাকায় নলহাটিতে রাজ্য সরকারের কৃষি গবেষণাগা খামারের ৫ একর জায়গায় কৃষি বিপণন কেন্দ্র গড়ে তোলার কথা। সেখানে কৃষকদের জন্য ৪৮টি দোকান নির্মাণ করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে ৮টি গুদামঘর নির্মাণ করা হবে। ওই সব গুদামে এলাকায় উৎপাদিত কৃষিজাত পণ্য যেমন মজুত রাখা হবে তেমনি ব্যবসায়ীদেরও পণ্য মজুর রাখার জন্য গুদাম ভাড়া দেওয়া হবে। পাশাপাশি এলাকার কৃষকেরা যাতে কৃষিজাত পণ্য বসে খুচরো বা পাইকারি দরে বিক্রি করতে পারেন সে জন্য দু’টি বিক্রয়কেন্দ্র গড়ে তোলার কথা।
বিধানসভা নির্বাচনের আগে ওই কেন্দ্রের শিলান্যাস হয়েছিল। মে মাসের শেষের দিকে কাজ শুরু হয়। সেই কাজের গতিপ্রকৃতি দেখতে রবিবার আধ ঘণ্টার জন্য এলাকায় আসেন। মন্ত্রীর অভিযোগ, “নির্মাণে নিম্নমানের ইট, বালি, সিমেন্ট ব্যবহার করা হচ্ছে। রড যে ভাবে ব্যবহার করার কথা তা হচ্ছে না। ভেঙে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।” নলহাটিতে গিয়ে দেখা যায়, ৪৮টি দোকানঘরের দেওয়াল নির্মাণ হয়ে গেলেও ছাদ হয়নি। দায়িত্বপ্রাপ্ত বাস্তুকার সুজিত লালা রবিবার মন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন। তিনি অবশ্য দাবি করেছেন, “মন্ত্রী ইট, বালি, সিমেন্ট-সহ অন্যান্য সামগ্রীর নমুনা নিয়ে গিয়েছেন। কিন্তু কোনও রকম নিম্নমানের সামগ্রী দেওয়া হয়নি।” রামপুরহাট নিয়ন্ত্রিত বাজারের অধীনে নলহাটি কৃষি বিপণনকেন্দ্রটি তৈরি হচ্ছে। রামপুরহাট নিয়ন্ত্রিত বাজারের আধিকারিক মহম্মদ আকবর আলি বলেন, “মন্ত্রীর নির্দেশে আপাতত কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। পরবর্তীতে নির্দেশ পেলে কাজ শুরু হবে।” |
অন্য দিকে, বোলপুরের ওই ড্রেন নির্মাণ প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, “প্রায় ১৮ লক্ষ টাকার কাজ অত্যন্ত নিম্নমানের হচ্ছে। তাই বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে।” এ ছাড়া, সোমবার তিনি বলেন, “ট্রেডার রেজিস্ট্রেশনের কাজ চলছে। ওই কাজ শেষ হলেই এই দফতরের আওতায় থাকা টোল ট্যাক্স তুলে দেওয়া হবে। কারণ টাকা নেওয়া হচ্ছে অথচ সরকারের তহবিলে জমা পড়ছে না।” রবিবার তিনি মল্লারপুরের টোল ট্যাক্স ব্যবস্থা ঘুরে দেখেন। সেখানে অবশ্য কোনও অসঙ্গতি পাননি বলে তাঁর দাবি। মন্ত্রী জানান, হাইড্রেনের বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে। তার পরে ফের কাজ শুরু করা যায় কি না চিন্তাভাবনা করা হবে। |