|
|
|
|
বিদ্যুদয়নের কাজে ফাঁকি |
নিজস্ব সংবাদদাতা • রায়গঞ্জ |
স্বাধীনতার ৬৪ বছর পেরিয়ে গেলেও রায়গঞ্জ ব্লকের বাহিন গ্রাম পঞ্চায়েতের একাধিক মৌজায় বিদ্যুতের আলো না পৌঁছনোয় বাসিন্দাদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। সম্প্রতি বাসিন্দাদের একাংশ বিদ্যুদয়নের দাবিতে পঞ্চায়েত অফিসের সামনে বিক্ষোভ দেখান। বাসিন্দাদের অভিযোগ, বিভিন্ন মৌজায় বিদ্যুতের আলো না পৌঁছনোয় পড়ুয়াদের পড়াশুনার ক্ষতি হচ্ছে। বিদ্যুতের অভাবে জল সেচের কাজ ব্যাহত হওয়ায় চাষবাসেরও ক্ষতি হচ্ছে। পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, প্রায় দু’বছর আগে রাজীব গাঁধী গ্রামীণ বিদ্যুৎ যোজনা প্রকল্পে পঞ্চায়েত এলাকায় বিভিন্ন মৌজায় বিদ্যুদয়নের কাজ শুরু হলেও সেই কাজ অত্যন্ত ঢিমেতালে চলছে। বিভিন্ন মৌজায় বিদ্যুতের খুঁটি বসানো হলেও বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার কাজ শুরু হয়নি। বিভিন্ন মৌজায় আবার বিপিএল তালিকাভুক্ত বাসিন্দাদের বিদ্যুতের সংযোগ দেওয়া হলেও মাস শেষে তাদের ভুয়ো বিল পাঠানো হচ্ছে বলে অভিযোগ। সম্প্রতি বিদ্যুতের নানা সমস্যার সমাধানে দাবিতে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষের তরফে উত্তর দিনাজপুর জেলা পরিষদ ও রাজীব গাঁধী গ্রামীণ বিদ্যুৎ যোজনা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। পঞ্চায়েতের কৃষি ও প্রাণি সম্পদ কর্মাধ্যক্ষ দুর্গেশ ঘোষ বলেন, “পঞ্চায়েতের একাধিক মৌজায় বিদ্যুতের আলো না পৌঁছনোয় বাসিন্দারা চরম অসুবিধায় পড়েছেন। রাজীব গাঁধী গ্রামীণ বিদ্যুৎ যোজনার কাজের অগ্রগতি হয়নি। ওই প্রকল্পে বিদ্যুতের সংযোগ পেয়েছেন এমন বহু বিপিএল তালিকাভুক্ত পরিবারকে ভুয়ো বিল পাঠানো হচ্ছে। আমরা সব সমস্যার কথা জেলা পরিষদ ও রাজীব গাঁধী গ্রামীণ বিদ্যুৎ যোজনা কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।”
জেলা পরিষদের সভাধিপতি মোক্তার আলি সর্দার বলেন, “ওই পঞ্চায়েতের বিভিন্ন মৌজায় দ্রুত বিদ্যুদয়নের কাজ শেষ করার জন্য রাজীব গাঁধী গ্রামীণ বিদ্যুৎ যোজনা কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করা হয়েছে।” রাজীব গাঁধী গ্রামীণ বিদ্যুৎ যোজনা প্রকল্পের জেলা কো-অর্ডিনেটর পবিত্র চন্দ বলেন, “খুব দ্রুত ওই পঞ্চায়েত এলাকার প্রতিটি মৌজায় বিদ্যুদয়নের কাজ শেষ করা হবে। বিপিএল তালিকাভুক্ত বাসিন্দাদের ভুয়ো বিল পাঠানোর অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, বাহিন গ্রাম পঞ্চায়েতের মোট ১৩ টি সংসদ মিলিয়ে ১৯ টি মৌজা রয়েছে। মোট বাসিন্দা সংখ্যা ৩০ হাজার। তার মধ্যে প্রায় ১০ হাজার বাসিন্দাই বিপিএল তালিকাভুক্ত। এখনও পর্যন্ত ওই পঞ্চায়েত এলাকার নারায়ণপুর, বিপ্রডাঙ্গি, ভিটিহার, গোয়াবাড়ি, ভুলকাই, মাধবপুর, সনগ্রাম সহ বেশ কিছু মৌজায় বিদ্যুতের আলো পৌছয়নি।
বিপ্রডাঙ্গি এলাকার বাসিন্দা সুনীল দাস, সনগ্রাম এলাকার বাসিন্দা মহম্মদ হাকিমুদ্দিন ও গোয়াবাড়ি এলাকার বাসিন্দা সামসুল হক বলেন, “বিভিন্ন মৌজায় বিদ্যুতের আলো না পৌঁছনোয় পড়ুয়াদের পড়াশুনার ক্ষতি হচ্ছে। বিদ্যুতের অভাবে সেচের কাজ ব্যাহত হওয়ায় ধান চাষের ক্ষতি হচ্ছে। সন্ধ্যার পর অন্ধকারে এলাকার রাস্তা দিয়ে হাঁটাচলা করা যায় না। রাতবিরেতে রোগীদের হাসপাতালে নিয়ে যেতে গিয়ে সমস্যায় পড়তে হয়। কেন্দ্রীয় সরকারের ১৪৪ কোটি টাকা বরাদ্দে ২০০৯ সালের জানুয়ারি মাসে জেলার ১৩৪২ টি মৌজায় রাজীব গাঁধী গ্রামীণ বিদ্যুৎ যোজনা প্রকল্পে বিদ্যুদয়নের কাজ শুরু হয়। ওই প্রকল্পে বিপিএল তালিকাভুক্ত পরিবারগুলিকে বিনে পয়সায় বিদ্যুত সংযোগ দেওয়া হয়। বাহিন গ্রাম পঞ্চায়েতের শঙ্করপুর, লৌহজগ্রাম ও কাপদুয়ার মৌজার বিপিএল তালিকাভুক্ত বাসিন্দাদের ওই প্রকল্পে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হলেও তাদের প্রতিমাসে ভুয়ো বিল পাঠানো হচ্ছে বলে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষের অভিযোগ। |
|
|
|
|
|