|
|
|
|
দলের মত চান তমসের |
সাক্ষাৎ চেয়ে চিঠি মমতাকে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কোচবিহার |
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করে তৃণমূল কংগ্রেস নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাতে চান প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক তমসের আলি। তৃণমূল কংগ্রেসের বাধায় চাষবাস, পুকুর দেখাশোনার মজুর না পাওয়ায় আর্থিক সমস্যায় পড়েছেন বলে অভিযোগ করে বুধবারই কোচবিহারের জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে চিঠি দেন জেলার নাটাবাড়ির ওই প্রাক্তন বিধায়ক। জেলাশাসককে দেওয়া চিঠিতে পুলিশ-প্রশাসন যথাযথ ব্যবস্থা না নিলে সপরিবারে আত্মহত্যা করবেন বলে সাফ জানিয়েছেন তিনি। প্রাক্তন বিধায়কের ওই হুমকি দেওয়ার বিষয়টি প্রকাশ্যে আশায় বিরক্ত সিপিএম নেতাদের অনেকেই। সিপিএমের জেলা স্তরের কয়েকজন নেতা ‘কমিউনিস্টরা আত্মহত্যা’ করেন না বলে প্রাক্তন বিধায়ককে বোঝান। তার পরেও অবশ্য আত্মহত্যার হুমকি থেকে সরে আসতে চাননি তমসের। চরম সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে দলের নেতাদের একাংশের পরামর্শেই মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হতে চাইছেন তিনি। ওই ব্যপারে সিপিএমের জেলা নেতৃত্বের অনুমতি চেয়ে আবেদন জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দলের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য প্রাক্তন বিধায়ক। দলীয় সূত্রের খবর, এই সপ্তাহেই জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠকে এই বষয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। রাজ্য কমিটির কয়েকজন সদস্যও জেলা নেতাদের কাছে গোটা বিষয়টি নিয়ে খোঁজখবর নিয়েছেন। বৃহস্পতিবার প্রাক্তন বিধায়ক তমসেরবাবু বলেন, “দলের অনুমতি পেলে চরম সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে চাইছি। নির্বাচনের পর থেকে প্রতি পদে পদে আমাকে হেনস্থা ও জুলুমবাজির কথা সরাসরি দেখা করে জানাতেই চাইছি। এমনকী অনশনেও বসতে পারি। সবটাই নির্ভর করছে দলের ছাড়পত্র পাওয়ার উপর।” সেই সঙ্গে প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক জানান, তিনি বিষয়টি নিয়ে কয়েকজন সহকর্মীর সঙ্গে কথা বলেছেন। তিনি বলেন, “তার পরেও সমস্যা সমাধানে পুলিশ-প্রশাসন ব্যবস্থা না নিলে সপরিবার আত্মহত্যার পথ বেছে নিতেই বাধ্য হতে হবে।” সিপিএমের কোচবিহার জেলা সম্পাদমণ্ডলীর একাধিক সদস্য প্রকাশ্যেই প্রাক্তন বিধায়কের প্রতি সহানুভূতি জানিয়েছেন। দিনহাটার সিপিএম নেতা তথা জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বেণুবাদল চক্রবর্তী বলেন, “তমসেরের উপর তৃণমূল চরম নিপীড়ন চালাচ্ছে। বহু দুঃখে ও আত্মহত্যার পরিস্থিতি তৈরির কথা বলছে। আমরা ওর পাশে আছি। জেলাগত ভাবে আন্দোলনও হবে।” প্রাক্তন বনমন্ত্রী তথা কোচবিহারের অপর জেলা সম্পাদকণ্ডলীর সদস্য অনন্ত রায় বলেন, “নানা ভাবে উনি হেনস্থার শিকার হয়েছেন। পুলিশ-প্রশাসনকে বহুবার বলেও সুরাহা হয়নি। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার ব্যপারে উনি প্রস্তাব দিলে দলে আলোচনা হবে।” তৃণমূল কংগ্রেস অবশ্য প্রাক্তন সিপিএম বিধায়কের আত্মহত্যার হুমকিকে প্রচার করার নাটুকে কৌশল বলে মনে করছে। নাটাবাড়ির তৃণমূল বিধায়ক তথা এনবিএসটিসির চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “পুরোপুরি ভিত্তিহীন অভিযোগ করা হয়েছে। নাটুকে কায়দায় সবটাই প্রচারে আশার কৌশল। তিন দশকে দিনমজুর, আমজনতার উপর উনি এত অত্যাচার করেছেন যে এখন কেউ ওঁর পাশে থাকতে চাইছেন না।” রবীন্দ্রনাথবাবুর দাবি, আত্মহত্যা অপরাধ। প্রশাসনের উচিত ওঁর জীবনরক্ষার স্বার্থে গ্রেফতার করে জেলে নজরদারিতে রাখা। |
|
|
|
|
|