২২ এসএনসিইউ অগাধ জলে
চাওয়া হল কী আর পাওয়া গেল কী, দিশাহারা কর্তারা
বজাতকদের জন্য ‘মাস্ক’-এর বরাত দেওয়া হয়েছিল। প্যাকেট খুলে দেখা গেল, মাস্ক এসেছে ঠিকই। তবে বড়দের ব্যবহারের জন্য!
একেবারে কোলের শিশুদের চিকিৎসার কথা ভেবে পাল্স অক্সিমিটারের অর্ডার গিয়েছিল। মাল এল নির্দিষ্ট সময়ের পরে। তা-ও প্রাপ্তবয়স্কদের পাল্স অক্সিমিটার! যা কি না ছোটদের কাজেই লাগবে না!
সংক্রমণ এড়াতে চাওয়া হয়েছিল এমন বেসিন, যার কল খোলা যায় কনুই দিয়ে। এল সাধারণ বেসিন। বহু জায়গায় বসেও গেল! ভুল বোঝা গেল পরে!
ঘাটতি-চিত্র

  চিকিৎসক নার্স
দরকার ১০০ ২৪৯
আছে ৩৪ ১১৮
১৩৮ জন নবজাতক-সহায়িকা প্রয়োজন। সবারই প্রশিক্ষণ বাকি
(হিসেব গত অক্টোবর পর্যন্ত)
ব্যাপার-স্যাপার দেখে স্বাস্থ্য-কর্তাদের মাথায় হাত। ভুল জিনিস ফেরত পাঠিয়ে কবে যে ঠিক জিনিস মিলবে, কিংবা আদৌ মিলবে কি না, সে সম্পর্কে তাঁরা অন্ধকারে। অথচ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে খুলতেই হবে ২০টি সিক নিওনেটাল কেয়ার ইউনিট (এসএনসিইউ)। সদ্যোজাত ও এক বছরের কমবয়সী শিশুদের জরুরি চিকিৎসার জন্য। যাতে কলকাতার বিসি রায় হাসপাতালে চাপ কমানো যায়। জেলা থেকে কলকাতায় আনার পথে আসন্নপ্রসবার অসুস্থতা কিংবা অসুস্থ শিশুর মৃত্যু কিছুটা ঠেকানো যায়।
২০১০-১১ অর্থবর্ষে পশ্চিমবঙ্গে মোট ২৩টি এসএনসিইউ খোলার কথা ছিল। গত সোমবার বিসি রায়ে কোনও ক্রমে একটা খোলা গিয়েছে। বাকি ২২টি চালুই করা যায়নি। কেন? স্বাস্থ্য দফতরের ব্যাখ্যা: তারা মালপত্রের বরাত দিয়ে দিয়েছে, পূর্ত দফতর ও বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানিকে আগাম টাকাও মেটানো হয়ে গিয়েছে। তবু ওয়ার্ড ব্যবহারযোগ্য করা যায়নি। উপরন্তু ডাক্তার, নার্স ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীর যথেষ্ট অভাব। প্রতিটি এসএনসিইউয়ে ৪ থেকে ৬ জন শিশু-চিকিৎসক, অন্তত ১২ জন নার্স এবং ৬ জন নবজাতক-সহায়িকা দরকার। “এত প্রশিক্ষিত স্বাস্থ্য-কর্মী কোথায়?” বলছেন স্বাস্থ্য-কর্তারাই।
শুধু স্বাস্থ্য-কর্মী নয়, অভাব যোগ্য চিকিৎসকেরও। স্বাস্থ্য-অধিকর্তা শ্যামাপদ বসাকের কথায়, “প্রশিক্ষিত ডাক্তার পাওয়াও কঠিন। আমরা তো তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে হাতুড়েদের দিয়ে এসএনসিইউ চালু করতে পারি না!” স্বাস্থ্য দফতরের পরিসংখ্যানই বলছে, তমলুক, চুঁচুঁড়া, আসানসোল, কান্দি, রায়গঞ্জ, উলুবেড়িয়া, বারাসত বা দুর্গাপুরের মতো জায়গায় প্রস্তাবিত এসএনসিইউয়ে এখনও কোনও মেডিক্যাল অফিসারই নিয়োগ হয়নি!
প্রশিক্ষিত চিকিৎসক পাওয়ায় বাধা কোথায়? স্বাস্থ্য দফতরের বক্তব্য: শিশু-চিকিৎসকের সংখ্যা এমনিতেই কম। তা ছাড়া প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে মেডিক্যাল অফিসারদের নিয়ে ট্রেনিংয়ে পাঠালে স্বাস্থ্যকেন্দ্র খালি হয়ে যাচ্ছে। সেখানে বিকল্প চিকিৎসক মিলছে না। সমস্যার সুরাহায় চিকিৎসক-প্রশিক্ষণের মেয়াদ ছ’মাস থেকে কমিয়ে এক মাস করা হয়েছে। তাতে আবার অন্য সমস্যা দেখা দিচ্ছে। দফতরের মধ্যেই প্রশ্ন উঠছে, মেডিক্যাল অফিসারেরা এত কম সময়ে নিওনেটোলজি ও ক্রিটিক্যাল কেয়ার শিখে কী ভাবে এসএনসিইউয়ে বিশেষজ্ঞ হিসেবে কাজ করবেন? আর নার্স বা নবজাতক-সহায়িকার অভাব কী ভাবে মিটবে, স্বাস্থ্য দফতর তা এখনও জানে না।
পরিকল্পনার এই হাল কেন? রাজ্যের পরিবারকল্যাণ কমিশনার দিলীপ ঘোষ মূল দায়টা চাপাচ্ছেন পূর্ত ও অন্য সরকারি দফতরের উপরে। তাঁর অভিযোগ, টাকা দিয়েও সময়ে এসএনসিউয়ের ভবন ও বিদ্যুতের কাজ হচ্ছে না।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.