|
|
|
|
প্রতারণায় আরও নাম, মামলা রুজু |
নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
কয়েক মাসে টাকা দ্বিগুণ করে দেওয়ার প্রতারণা মামলায় এনজেপির এক রেল অফিসারের স্ত্রী রিমি দে-এর নামেও স্পষ্ট অভিযোগ জমা পড়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে শিলিগুড়ি থানার পুলিশ কয়েকজন রেলকর্মীর স্ত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে পৃথক একটি মামলা রুজু করেছে। পুলিশ জানায়, অভিযোগকারিণী সরস্বতী সাহা লিখেছেন, তাঁকে দ্বিগুণ করে দেওয়ার টোপ দিয়ে ১ লক্ষ টাকা প্রতারণা করা হয়েছে। আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, আজ, শুক্রবার মামলাটি শিলিগুড়ির অতিরিক্ত মুখ্য বিচার বিভাগীয় আদালতে পেশ করা হবে। আদালতের নির্দেশে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে। শিলিগুড়ির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অমিত জাভালগি বলেন, “এই ঘটনায় আজ আরও একটি মামলা হয়েছে। একজনকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্য অভিযুক্তদেরও ধরা হবে।” রেল অফিসারের স্ত্রী রিমি দেবী লেখালেখি ও কাব্যচর্চার সুবাদে শিলিগুড়ি তথা উত্তরবঙ্গের সাংস্কৃতিক জগতেও সুপরিচিত। তাঁর নাম প্রতারণা মামলায় যুক্ত হওয়ায় সংস্কৃতি জগতের সঙ্গে যুক্ত অনেকেই বিস্মিত। এদিন মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে রিমি দেবী বলেন, “অভিযোগ ঠিক নয়। আমি কারও সঙ্গে প্রতারণা করিনি। বরং ওই সংস্থাটি আমাকেও ঠকিয়েছে। আমারও প্রায় আড়াই লক্ষ টাকা সংস্থায় জমা দিয়েও ফেরৎ পাইনি। তবে এখনও বেঙ্গালুরুতে রয়েছি। কেন আমার বিরুদ্ধে কেন মামলা হল বুঝতে পারছি না। এই ব্যাপারে কী করা যায়, সেটা সকলের সঙ্গে আলোচনা করে ঠিক করব।” পুলিশ জানায়, অভিযোগে সরস্বতী দেবী জানিয়েছেন, গত বছরের অক্টোবর মাসে রিমি দেবী এবং তাঁর স্বামী প্রথমে তাঁর স্বামী অসিতবরণ সাহাকে ওই সংস্থায় বিনিয়োগের ব্যাপারে প্রস্তাব দেন। লগ্নির সময়ে রিমি দেবী এবং তাঁর স্বামী জীবন বিমা নিগমের কর্মী রাজীব ভদ্র-সহ আরও কয়েকজনের সঙ্গেও পরিচয় করিয়ে দেন বলে পুলিশের কাছে দাবি করেছেন সরস্বতী দেবী। তিনি বলেন, “সংবাদ মাধ্যমে মুম্বইয়ের প্রতারণা সংস্থার কয়েকজনের গ্রেফতারের খবর পেয়ে পুরো বিষয়টি আমাদের কাছে স্পষ্ট হয়। তার পরেই পুলিশকে সমস্ত ঘটনা জানাই।’’ ১০ মাসে দ্বিগুণ করে দেওয়ার টোপ দিয়ে মুম্বইয়ের সংস্থাটি শিলিগুড়ি থেকে বহু কোটি টাকা তুলে পাততাড়ি গুটিয়েছে বলে অভিযোগকারীদের দাবি। গত জুন মাসে থানায় অভিযোগ জমা পড়লেও পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। সেই সময়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে জানানো হলেও কাজের কাজ হয়নি বলে অভিযোগ। তার পরে শিলিগুড়ির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদে নিযুক্ত হন অমিতবাবু। সেই সঙ্গে শিলিগুড়ি থানার আইসির দায়িত্ব নেন পিনাকী মজুমদার। একাধিক অবসরপ্রাপ্ত মানুষ থানায় গিয়ে প্রতারণার অভিযোগের বিষয়টি জানিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন। তার পরেই পুলিশ মুম্বইয়ে দল পাঠিয়ে রামশা গণেশ সাহেবরাম চৌধুরী নামে একজনকে গ্রেফতার করে। শিলিগুড়িতে তল্লাশি চালিয়ে রাজীব ভদ্র, একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের কর্মী রণবীর দাস এবং দেবব্রত পাল নামে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪২০ ও ৪০৬ ধারায় তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। এদিন উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে পুলিশ রাজীব ভদ্রকে আদালতে হাজির করায়। অতিরিক্ত মুখ্য বিচার বিভাগীয় আদালতের বিচারক সুপ্রিয়া খান ধৃতকে জেলে পাঠানোর নির্দেশ দেন।পাশাপাশি, ধৃত রামশা গণেশ চৌধুরী, রণবীর দাস এবং দেবব্রত পালকে জেলে জেরা করার ব্যাপারে পুলিশকে অনুমতি দেন। মামলার তদন্তের স্বার্থে এদিন পুলিশ ওই তিনজনকে জেলে গিয়ে জেরা করার ব্যাপারে আদালতের অনুমতি চায়। পুলিশের এক পদস্থ কর্তা বলেন, “এই মামলায় অনেকে জড়িত। বহু কোটি টাকার প্রতারণা হয়েছে। ধৃতদের জেরা করা গেলে আরও বেশ কিছু তথ্য উদ্ধার করা যাবে বলে আশা করছি।” |
|
|
|
|
|