|
|
|
|
উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় |
চার্জশিট দিতে দেরির নালিশ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
প্রায় দেড়কোটি টাকা গরমিলের মামলার চার্জশিট পেশে ঢিলেমি হচ্ছে, এই অভিযোগে বিধানসভার উচ্চ শিক্ষা বিষয়ক কমিটির কাছে ব্যবস্থা গ্রহণের আর্জি জানাল উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে বৃহস্পতিবার উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে যান ওই কমিটির প্রতিনিধিরা। সে সময় তাঁদের সঙ্গে দেখা করে ওই আর্জি জানান শিক্ষক সমিতির সদস্যরা। পরীক্ষা নিয়ামক বিভাগের অ্যাকাউন্টে আর্থিক অনিয়ম থেকে নিয়োগের বিভিন্ন ক্ষেত্রে দুর্নীতি, সংরক্ষিত পদে অযোগ্য লোককে চাকরি পাইয়ে দেওয়া বাম জমানায় বিশ্ববিদ্যালয় এই সব বিভিন্ন দুর্নীতির শিকার হয়েছে বলে ওই প্রতিনিধিদের কাছে অভিযোগ জানায় শিক্ষক সমিতি।
শিক্ষক সমিতির দাবি, দেড় কোটি টাকা আর্থিক অনিয়মের ঘটনার পর অ্যাডভোকেট জেনারেলের পরামর্শ মতো অভিযুক্ত তৎকালীন রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করতে উপাচার্যকে পরামর্শ দেন আচার্য তথা রাজ্যপাল। পাশাপাশি অভিযুক্তকে সাসপেন্ড করার কথাও জানানো হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্ম সমিতির সভায় তা পেশ করা হলে বাধা দেন সংখ্যা গরিষ্ঠ সদস্যরা। বিষয়টি এর পর ফের আচার্যের কাছে পাঠান হয়। তা কার্যকর করতে এ দিন বিধানসভার উচ্চ শিক্ষা বিষয়ক কমিটির কাছে আর্জি জানান হয় শিক্ষক সমিতির পক্ষে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী সমিতির বিক্ষোভ আন্দোলন এবং কর্ম সমিতির সদস্যদের একাংশের বাধায় একের পর এক কর্ম সমিতির বৈঠক ভণ্ডুল হওয়ায় কী ভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজকর্ম ব্যহত হয়ে পড়েছে তা বিস্তারিত জানান তাঁরা। অন্য দিকে উপাচার্যের বিরুদ্ধে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন কাজকর্ম নিয়ে কর্মচারী সমিতি, অল বেঙ্গল ইউনিভার্সিটি টিচার অ্যাসোসিয়েশনের তরফে অভিযোগ জানানো হয় বিধানসভার প্রতিনিধি দলের কাছে।
বিধানসভার উচ্চ শিক্ষা বিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী চান শিক্ষা ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা। সেই মতো আমরা চেষ্টা করছি। বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শন করে এখানকার কর্তৃপক্ষ, ছাত্র-শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী এমনকী সাধারণ বাসিন্দারা কিছু জানাতে চাইলে তাঁদের কথা শুনছি। নথিভুক্ত করছি। বিস্তারিত রিপোর্ট এবং বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের ব্যাপারে প্রয়োজনীয় সুপারিশ বিধানসভায় পেশ করা হবে। সে সব কতদূর কার্যকর হল ৬ মাস পরে তা খতিয়ে দেখাও হবে।” পাঁচ জন বিধায়ক এবং ৩ জন আধিকারিক-সহ ৮ জনের ওই প্রতিনিধি দলটি এ দিন উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শন করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের মানোন্নয়নের লক্ষ্যেই তাঁরা রিপোর্ট দেবেন বলে জানান।
এ দিন প্রতিনিধি দলের সামনে কর্মচারী সমিতির কর্মকর্তাদের সঙ্গে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃণমূল কর্মচারী সমিতির সদস্যরা হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন। কর্মচারী সমিতির কর্মকর্তাদের কয়েকজনের নাম করে প্রতিনিধি দল এবং সংবাদ মাধ্যমের কাছে মুখ খোলায় তাঁরা তৃণমূলের কর্মচারী সমিতির সদস্যদের গায়ে হাত তোলেন বলে অভিযোগ। তা নিয়ে গোলমাল বাঁধে। বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেল, গ্রন্থাগার, প্রশাসনিক ভবন ঘুরে দেখেন প্রতিনিধিরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির তরফে আর্জি জানানো হয়, বিভিন্ন বিভাগের পর্যাপ্ত শিক্ষক, কর্মী নিয়োগ, প্লেসমেন্ট সেল খোলা, উত্তরবঙ্গের বাসিন্দা তফসিলি জানা উপজাতি এবং পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায়ের বাসিন্দাদের শিক্ষার উন্নতিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের। ছাত্র পরিষদ এবং তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সদস্যরাও দেখা করেন প্রতিনিধি দলের সঙ্গে। দীর্ঘ ৬ মাসেরও বেশি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদের নির্বাচন হচ্ছে না বলে তারা অভিযোগ জানান। ছাত্র সংসদের নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আর্জি জানান। বিশ্ববিদ্যালয়ে গ্রন্থাগার বেলা ১১টা থেকে ৫ টা পর্যন্ত খোলা থাকে। অথচ ক্লাসের ওই সময় গ্রন্থাগারে যাওয়া যায় না বলে তার সময় বাড়ানোর আর্জি জানান ওই দুই ছাত্র সংগঠন। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের তরফে বন্ধ হয়ে পড়া তথ্য প্রযুক্তি বিভাগ চালু, দূরশিক্ষা বিভাগে আসন সংখ্যা বৃদ্ধি-সহ বিভিন্ন আর্জি জানানো হয়।
|
|
|
|
|
|