যাত্রী-ভাড়া না বাড়াতে ‘অটল’ রাজ্য সরকার বাস-মিনিবাস চালানোর যাবতীয় দায়িত্ব চাপিয়ে দিল মালিকদের উপরেই।
বৃহস্পতিবার মহাকরণে বাস-মিনিবাস মালিকদের সঙ্গে বৈঠকে রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী সুব্রত বক্সী জানিয়ে দিলেন, “জ্বালানি এবং যন্ত্রাংশের দাম যতই বাড়ুক, বর্তমান পরিস্থিতিতে ভাড়া বৃদ্ধির বিষয়টি বিবেচনা করা হবে না।” এমনকী বাস মালিকদের আন্দোলনের হুমকি উড়িয়ে দিয়েছেন মন্ত্রী।
বাস-মিনিবাস মালিকদের বক্তব্য ছিল, জ্বালানি এবং যন্ত্রাংশের দাম বৃদ্ধির ফলে বাস চালাতে গিয়ে লোকসানের মুখে পড়তে হচ্ছে তাঁদের। এর ফলে বিভিন্ন রুটের বাস বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যেই ২৩৪, ২৪এ/১, ৩০বি, ২২৭এ ইত্যাদি রুটে ২৫ শতাংশের মতো বাস বন্ধ করে দিতে হয়েছে। অবিলম্বে ভাড়া না বাড়ালে বন্ধ হয়ে যাবে সব বাস-মিনিবাসই। এতে শুধু যাত্রীদের ক্ষতি হবে তা-ই নয়, বিপদে পড়বেন এই শিল্পের সঙ্গে যুক্ত বহু মানুষ। বেসরকারি বাস-মিনিবাস মালিকরা রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী সুব্রত বক্সীকে এ কথা জানিয়ে বলেন, “ভাড়াবৃদ্ধির বিষয়টি বিবেচনা করুন। অন্যথায় বাস আরও কমে যাবে।” |
কিন্তু তাঁদের এই দাবি মানতে রাজি হয়নি রাজ্য সরকার। বৈঠকের পরে মন্ত্রী বলেন, “সকলের উপরেই মূল্যবৃদ্ধি, মুদ্রাস্ফীতির চাপ রয়েছে। পরিবেশ-পরিস্থিতি বিচার করে বাস চালাতে হবে মালিকদের।” তিনি বলেন, “তেলের দাম বাড়লে যদি বাসের ভাড়া বাড়াতে হয়, তা হলে ফুলকপি, বাঁধাকপির দাম বাড়লে ডিএ অথবা বেতন বাড়াতে হবে।”
শুধু পরিবহণেই নয়, বিদ্যুৎ মাসুল বা সরকারি দুধের দাম কোনওটি বাড়াতে চায় না রাজ্য সরকার। জনমোহিনী রাজনীতির এই ফাঁসে বসানো যায়নি জলকর। বাস-মিনিবাসের ক্ষেত্রে সেই একই ধারা অক্ষুণ্ণ রাখল রাজ্য।
২০০৯-এর ১ অগস্ট রাজ্যে শেষ বাসভাড়া বেড়েছিল। এর পর ৯ বার ডিজেলের দাম বেড়েছে। এই অবস্থায় মালিকেরা নানা ভাবে ভাড়াবৃদ্ধির দাবি তুলছেন। মহাকরণে পালাবদলের পর মালিকদের একাংশ ধর্মঘটের পথেও হেঁটেছেন।
পরে মিনিবাস মালিক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অবশেষ দাঁ মহাকরণে বলেন, “এ রকম হলে আমরা আন্দোলনে নামব।” এর প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে পরিবহণমন্ত্রী বলেন, “আন্দোলনে নামুন। আমরাও দেখব।” জেএনএনইউআরএমের টাকায় কেনা বাসের কিস্তি শোধ নিয়েও এ দিন পরিবহণমন্ত্রী বাস-মালিকদের সঙ্গে কথা বলেন। |