অর্ডিন্যান্স নিয়ে বিজ্ঞপ্তি আজ
শিক্ষায় রাজনীতি হটাতে ব্রাত্য হাতিয়ার করলেন কারাটদেরই
বাম প্রতিবাদের পাল্টা হিসেবে বাম নেতাদেরই অস্ত্র করলেন রাজ্যের স্কুলশিক্ষা মন্ত্রী ব্রাত্য বসু।
রাজ্য সরকার সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আইন যে-ভাবে সংশোধন করছে, তার জেরে সেনেট, সিন্ডিকেট, কোর্ট, কাউন্সিলে ছাত্র-প্রতিনিধি থাকবে না। এর প্রতিবাদে ইতিমধ্যেই বিক্ষোভ দেখিয়েছে এসএফআই।
বৃহস্পতিবার তারই প্রতিক্রিয়ায় স্কুলশিক্ষা মন্ত্রী বলেন, “বামপন্থী ছাত্রবন্ধুদের কাছে আবেদন, তাঁরা তাঁদের অগ্রজপ্রতিম প্রকাশ কারাট বা সীতারাম ইয়েচুরিকে কেন বলতে পারেন না, দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়, জেএনইউ-এও পরিচালন ব্যবস্থায় ছাত্র-প্রতিনিধি রাখা হোক? সেখানেও তো ছাত্র-প্রতিনিধি নেই, অথচ ছাত্র সংসদ বামপন্থীদের দখলে। আমার ধারণা, সেখানে এই দাবি করে লাভ নেই। কারণ, কারাট, ইয়েচুরিরাও জানেন যে শিক্ষাক্ষেত্রকে রাজনীতি থেকে সরিয়ে রাখা দরকার।”
শিক্ষামন্ত্রীর দিকে পাল্টা তোপ দেগে এসএফআইয়ের সবর্ভারতীয় সাধারণ সম্পাদক ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “জেএনইউ-এর সর্বোচ্চ সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী সংস্থা অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল এবং বোর্ড অফ স্টাডিজে নির্বাচিত ছাত্র-প্রতিনিধিরা রয়েছেন। মন্ত্রী হয় জানেন না, অথবা জেনেবুঝে ছাত্রছাত্রীদের বিভ্রান্ত করছেন।”
ব্রাত্যবাবুর মতে, ছাত্রেরা রাজনীতি করতেই পারেন। কিন্তু শিক্ষা-প্রশাসন পরিচালনায় তাঁদের ভূমিকা থাকতে পারে না। রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আইনে সংশোধন যে দলতন্ত্র ঠেকাতেই, এ দিনও তার উল্লেখ করেন শিক্ষামন্ত্রী। পরিচালন ব্যবস্থায় ছাত্র-প্রতিনিধি না-রাখলেও তাঁরা যে ছাত্র আন্দোলনের বিপক্ষে নন, মন্ত্রী সেটা স্পষ্ট করে দিয়েছেন। তিনি বলেন, “ছাত্রেরা রাজনীতি করুন। আমাদের আপত্তি নেই। নিজেদের দাবিতে উপাচার্যের কাছে স্মারকলিপিও দিতে পারেন। কিন্তু পরিচালন ব্যবস্থায় থেকে কী করবেন?”
পশ্চিমবঙ্গ প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন
অনুষ্ঠানে রাজ্যপাল এম কে নারায়ণন। ছবি: অর্কপ্রভ ঘোষ
বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আইন পরিবর্তনের জন্য রাজ্য যে-অর্ডিন্যান্স জারি করছে, তাতে সেনেট, কোর্ট-সহ সর্বোচ্চ সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী সংস্থায় ছাত্রদের প্রতিনিধিত্বের কোনও সংস্থান নেই। ঋতব্রত এ দিন জানান, রাজ্য সরকারের তৈরি নতুন আইনের বিরুদ্ধে তাঁরা প্রচার ও আন্দোলন জোরদার করবেন।
শুধু ছাত্র-প্রতিনিধি নন, নতুন আইনে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনায় কোনও শিক্ষাকর্মী-প্রতিনিধিও রাখা হয়নি। রাজ্য উচ্চশিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান সুগত মারজিৎ বলেন, “প্রফেসর হিসেবে ১০ বছর কাজ করার পরে তবেই কেউ উপাচার্য হতে পারেন। অথচ স্নাতক ডিগ্রিধারী এক জন শিক্ষাকর্মী তাঁকে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনায় মতামত দেবেন, এটা কী করে সম্ভব? উপাচার্য নির্বাচনের ক্ষেত্রেই বা তাঁর কী বক্তব্য থাকতে পারে?”
শিক্ষামন্ত্রী জানান, অর্ডিন্যান্স নিয়ে সরকারি বিজ্ঞপ্তি জারি হবে আজ, শুক্রবার। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে রাজনীতিকে সম্পূর্ণ ভাবে হটানোর উদ্দেশ্যে তৈরি এই অর্ডিন্যান্সকে রাজ্যের নিরিখে ‘ঐতিহাসিক’ বলে উল্লেখ করেছেন তিনি। ব্রাত্যবাবু বলেন, “রাজ্যপালের সইয়ের পরে অর্ডিন্যান্সটি আইন দফতরে পাঠানো হয়েছে। শুক্রবার সেটি ওই দফতরের ছাড়পত্র পাবে বলে আশা করছি। সঙ্গে সঙ্গেই এই সংক্রান্ত সরকারি বিজ্ঞপ্তি জারি হয়ে যাবে।” বিজ্ঞপ্তি জারি হলে সেনেট, কোর্ট, কাউন্সিল সব ভেঙে যাবে। অর্ডিন্যান্স মেনে নতুন পদ্ধতিতে সেগুলি গড়া হবে বলে জানান তিনি।
নতুন অর্ডিন্যান্সের সাহায্যে শিক্ষা ক্ষেত্রকে রাজনীতি-মুক্ত করা সম্ভব হবে বলে আশাবাদী বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য তথা রাজ্যপাল এম কে নারায়ণনও। এ দিন পশ্চিমবঙ্গ প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানের পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “শিক্ষা ক্ষেত্র থেকে রাজনীতি হটানোর উদ্দেশ্যেই তো অর্ডিন্যান্স আনা হয়েছে। আশা করি, এর উদ্দেশ্য সফল হবে। অর্ডিন্যান্সটি প্রয়োগ করা হলে চিত্রটা পরিষ্কার হবে।” তবে রাজ্যের অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের নিয়োগ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে মানতে চাননি তিনি। রাজ্যপাল বলেন, “কয়েক জন উপাচার্য রাজনৈতিক কারণে নিযুক্ত হয়ে থাকতে পারেন। তবে বেশির ভাগই তা নন বলে আমার ধারণা।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.