নির্মাণ সংস্থার ১৫ জন কর্মীকে গত সোমবার অপহরণ করেছিল বিহারের মাওবাদীরা। তাঁদেরই এক জন বসিরহাটের ধান্যকুড়িয়ার নেহালপুরের বাসিন্দা মোহন বৈদ্য। স্বামীর মুক্তির দাবিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দ্বারস্থ হবেন বলে জানিয়েছেন মোহনবাবুর স্ত্রী শীলাদেবী।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, বিহারের ঝাঁঝাঁ জেলার ছনু বাজার এলাকার বলথার নদীতে সেতু তৈরির কাজে যুক্ত এক নির্মাণ সংস্থার হয়ে কাজ করেন মোহনবাবু। বছর দু’য়েক ধরে আছেন সেখানে। মোহনবাবুর পরিবার সূত্রের খবর, মঙ্গলবার সকালে তাঁদের কাছে ফোন আসে। সেটি করেছিলেন ওই নির্মাণ সংস্থার সুপারভাইজার সন্ন্যাসী সরকার। তিনি জানান, গত রাতে হামলা চালিয়ে মাওবাদীরা তাঁদের সংস্থার ১৫ জন কর্মীকে অপহরণ করে ঝাড়খণ্ডের দিকে নিয়ে চলে গিয়েছে। আর কোনও খোঁজ নেই। মোহনবাবুর দাদা পরিমল বৈদ্য বলেন, “কাজের সুবাদে অনেক সময়ই বাইরে থাকতে হয় ভাইকে। পুজোর সময়ে কয়েক দিনের জন্য বাড়ি এসেছিল। হঠাৎ মোবাইলে খবর এল, ভাইকে অপহরণ করা হয়েছে। এখন কী যে করব, কিছুই বুঝতে পারছি না।”
খবর শুনে বারবারই কান্নায় ভেঙে পড়ছেন শীলাদেবী। ছোট ছোট দুই মেয়ে তাঁর। বললেন, “সোমবার সকালেও স্বামীর সঙ্গে ফোনে কথা হল। বলেছিলেন, খুব তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরবেন। মেয়েদের দিকে যেন আমি খেয়াল রাখি।” অসহায় স্ত্রীর কথায়, “রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আমার আবেদন, যে করেই হোক স্বামীকে উদ্ধারের ব্যবস্থা করুন। আমি ওঁর সঙ্গে দেখা করেও এ কথা জানাব।”
ঘটনার কথা শুনে বৃহস্পতিবার মোহনবাবুর বাড়িতে এসেছিলেন বসিরহাট উত্তর কেন্দ্রের বিধায়ক এটিএম আবদুল্লা রনি। তাঁর সঙ্গেও কথা বলেন শীলাদেবীরা। বিধায়ক জানান, মুখ্যমন্ত্রীকে ঘটনার কথা তিনি জানাবেন।
মোহনবাবুর বড় মেয়ে অঞ্জলি পড়ে তৃতীয় শ্রেণিতে। ঘটনাটা ঠিক কী ঘটেছে, ততটা বোঝার ক্ষমতা হয়নি এখনও। মেয়েটি শুধু বলে, “বাবাকে নাকি কারা আটকে রেখেছে। ওদের বল না, বাবাকে ছেড়ে দিতে।” |