শ্রীপৎ সিংহ কলেজের সংঘর্ষের সঙ্গে জড়িয়ে গেল জিয়াগঞ্জ-আজিমগঞ্জের পুরপ্রধান সিপিএমের শঙ্কর মণ্ডলের নামও। বুধবার সন্ধ্যায় প্রকাশ্য রাজপথে ফেলে ছাত্র পরিষদের স্থানীয় এক নেতাকে মারধর করেছেন বলে শঙ্করবাবুর বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে এফআইআরও জমা পড়েছে। ছাত্র রাজনীতির জেরে জিয়াগঞ্জের পরিস্থিতি সামাল দিতে অবশেষে বৃহস্পতিবার দুপুরে পুলিশের উদ্যোগে সিপিএম, কংগ্রেস ও তৃণমূলের স্থানীয় নেতারা থানায় বসে সর্বদলীয় বৈঠক করেছেন।
স্থানীয় বিধায়ক কংগ্রেসের শাঁওনী সিংহ রায় এবং সিপিএমের লালবাগ জোনাল কমিটির সদস্য শ্যামল নাথ জানান, ওই বৈঠকে ঠিক হয়েছে (১) কয়েক দিনের মধ্যে সব রাজনৈতিক দল ও সেই সব দলের ছাত্র সংগঠনের স্থানীয় নেতা, কলেজের অধ্যক্ষ, পুলিশ ও সাধারণ প্রশাসনের প্রতিনিধিদের নিয়ে কয়েক দিনের মধ্যে একটি বৈঠক করা হবে। ওই বৈঠক ডাকার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে জিয়াগঞ্জ থানার ও সি-কে। (২) নিরপেক্ষ ভাবে প্রকৃত তদন্ত করে বুধবারের ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পুলিশ আইনি ব্যবস্থা নেবে। (৩) কলেজের বাইরে নির্দিষ্ট একটি চৌহদ্দি বেঁধে দেওয়া হবে। ওই চৌহুদ্দির মধে কোনও সভা-সমাবেশ করা যাবে না। (৪) ছাত্র রাজনীতির নামে বহিরাগতরা কলেজের ঢুকে অশান্তি যাতে বাধাতে না পারে তার জন্য পুলিশ কড়া নজরদারির ব্যবস্থা নেবে।
ছাত্র পরিষদ পরিচালিত জিয়াগঞ্জ শ্রীপৎ সিংহ কলেজের ছাত্র সংসদের সম্পাদক সুমন দাসের অভিযোগ, “বুধবার সন্ধ্যায় রাস্তায় ফেলে স্থানীয় পুরপ্রধান সিপিএম নেতা শঙ্কর মণ্ডল ও পুরসভার কাউন্সিলর রঞ্জনা সিংহ আমাকে বেদম মারধর করেছে।” শঙ্করবাবু ও রঞ্জনাদেবীর বিরুদ্ধে মারধরের ওই অভিযোগ জানিয়ে সুমন দাসের স্ত্রী মণীষাদেবী পুলিশের কাছে এফআইআর করেন। শঙ্করবাবু অবশ্য দাবি করেন, “বুধবার আমাদের কাউন্সিলর রঞ্জনাদেবীকে মারধর করেছে সুমন দাস ও তার সঙ্গীরা। রঞ্জনা ফোন করে সে খবর দেয় আমায়। আমি কাছেই ছিলাম। ওর ফোন পেয়ে ছুটে গিয়ে ওদের আক্রমণ প্রতিহত করেছি মাত্র। পুরপ্রধান হিসাবে ওই সময় পুরসভার কাউন্সিলরকে মারধর থেকে রক্ষা করা আমার কর্তব্যের মধ্যে পড়ে। আমি সেটিই করেছি।” তাঁর দাবি, “গত বিধানসভা ভোটের পর এসএফআই-র সমর্থকদের মারধর করে জিয়াগঞ্জের দু’টি কলেজ থেকেই তাড়িয়ে দিয়েছে ছাত্র পরিষদের দুষ্কৃতীরা। বুধবার ছাত্র-যুবদের পক্ষ থেকে সভা করে এসএফআই-এর ওই বিতাড়িত সমর্থকদের শ্রীপৎ সিংহ কলেজে ঢোকানোর চেষ্টা করা হয়। তখন ছাত্র পরিষদের দুষ্কৃতীরা সুমন দাসের নেতৃত্ব ফের হামলা চালায়।” তার পর সুমন দাস ওই দিনই বাইক বাহিনী নিয়ে জিয়াগঞ্জ শহর দাপিয়ে বেড়িয়ে ৫ জায়গায় সিপিএমের ৫ জন সমর্থককে মারধর করে বলে শঙ্করবাবুর অভিযোগ। |