|
|
|
|
আজ বনধ ছাত্র সংগঠনের |
জঙ্গলমহলে আটক-হয়রানির নালিশ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • ঝাড়গ্রাম |
মাওবাদী সংগঠনের সঙ্গে জড়িত, এই সন্দেহে বৃহস্পতিবার ভোরে ঝাড়গ্রামের নন্দলালপুর গ্রাম থেকে তিনটি ছাত্র সংগঠনের ১২ জন ছাত্রছাত্রীকে আটক করল পুলিশ। আটকদের ঝাড়গ্রাম থানায় নিয়ে গিয়ে দফায় দফায় জেরা করা হয়। শেষ পর্যন্ত অবশ্য তাঁদের কারও বিরুদ্ধেই কোনও অভিযোগের সারবত্তা না পেয়ে ব্যক্তিগত জামিনে ছেড়ে দেওয়া হয়। ছাত্র-সংগঠনগুলির পক্ষ থেকে পুলিশি-নিগ্রহ ও হয়রানির অভিযোগে পরে ঝাড়গ্রামের মহকুমাশাসকের দফতরে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়। আজ, শুক্রবার জঙ্গলমহলে ২৪ ঘণ্টা বন্ধেরও ডাক দিয়েছে ঝাড়খণ্ড স্টুডেন্টস্ ফেডারেশন (জেএসএফ) ও ছাত্রসমাজ। পুলিশ সূত্রের অবশ্য দাবি, জেএসএফ, ছাত্রসমাজ, ইউএসডিএফ নামে সংগঠনের আড়ালে মাওবাদী-সহানুভূতিশীলরা নন্দলালপুরে জড়ো হয়েছিলেন বলে খবর ছিল। তার ভিত্তিতেই সিআরপি-র কোবরা বাহিনী তল্লাশি চালিয়ে নন্দলালপুরের একটি বাড়ি থেকেই ওই ১২ জনকে দু’দফায় আটক করেছিল। |
|
জঙ্গলমহলে প্রহৃত ছাত্র। নিজস্ব চিত্র। |
থানা থেকে ছাড়া পাওয়ার পরে ওই ১২ জনের অন্যতম, ইউএসডিএফ-এর রাজ্য সম্পাদক রক্তিম ঘোষের পাল্টা দাবি, তিনটি ছাত্র সংগঠনের উদ্যোগে সম্প্রতি ‘অল বেঙ্গল স্টুডেন্টস্ ইউনিয়ন’ (এবিএসইউ) নামে একটি যুক্তমঞ্চ তৈরি হয়েছে। আগামী ৯ নভেম্বর কলকাতায় এবিএসইউ-এর সম্মেলন। তার প্রচারের কাজেই তিনি ও সংগঠনের আরও ৪ জন কলকাতা থেকে ঝাড়গ্রামে এসেছিলেন। বুধবার সারাদিন প্রচারের কাজ সেরে রাতে তাঁরা ছাত্রসমাজ ও জেএসএফ-এর দুই সদস্যের সঙ্গে নন্দলালপুর গ্রামে নিশীথ মাহাতো নামে এক জেএসএফ কর্মীর বাড়িতে ছিলেন। বৃহস্পতিবার ভোরে কোবরা বাহিনী বাড়িটি ঘিরে ফেলে। প্রথমেই কলকাতা থেকে আসা যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের এমটেকের ছাত্রী জুবি সাহা, নিশীথ ও ছাত্রসমাজের কর্মী মিঠুন মাহাতোকে আটক করে নিয়ে যায়। কিছুক্ষণ পর বাহিনী ফের ফিরে এসে রক্তিম, সংগঠনের আর এক সদস্য বিশ্বরূপ, জেএসএফ-এর সম্পাদক কমলেশ মাহাতো ও ছাত্রসমাজের নেতা ভবেশ মাহাতোকে বাঁশের লাঠি দিয়ে বেধড়ক পেটায়। রক্তিম, কমলেশ, ভবেশ-সহ তিনটি সংগঠনের ৯ জনকে আটক করে নিয়ে যায় পুলিশ। ঝাড়গ্রাম থানায় নিয়ে গিয়ে তাঁদের ছবি তোলা হয়। টানা জেরা করা হয়।
রক্তিমের প্রশ্ন, “মুখ্যমন্ত্রী শান্তি ও গণতন্ত্রের কথা বলছেন। কিন্তু জঙ্গলমহলে যৌথ বাহিনী জঙ্গল-রাজ কায়েম করেছে। আত্মপক্ষ সমর্থনের কোনও সুযোগ না দিয়েই আমাদের মারধর করে থানায় নিয়ে যাওয়া হল।” জুবি বলেন, “ভয়ংকর অভিজ্ঞতা হল। পুলিশ অফিসারেরা বিভিন্ন মাওবাদী নেতার নাম করে আমার কাছে জানতে চাইছিলেন ওই নেতাদের সঙ্গে আমি বৈঠক করেছি কি না। আমাদের মোবাইল ফোন ও কললিস্ট ঘেঁটে দেখা হয়।” এ দিকে, মাওবাদী স্কোয়াড-সদস্য সন্দেহে বুধবার ঝাড়গ্রামের ঘৃতখাম থেকে ধৃত প্রশান্ত মাহাতোকে রাষ্ট্রদ্রোহ ও খুনের পুরনো একটি মামলায় অভিযুক্ত করে বৃহস্পতিবার ঝাড়গ্রাম এসিজেএম আদালতে হাজির করা হয়। ধৃতকে ৭ দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক। |
|
|
|
|
|