|
|
|
|
সিপিএমের প্রাক্তন পঞ্চায়েত সদস্য ধৃত |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা ও তমলুক |
কঙ্কাল কাণ্ডের পরে ফের অস্বস্তিতে সিপিএম। দাসেরবাঁধ কঙ্কাল-কাণ্ডে সিপিএমের প্রাক্তন মন্ত্রী সুশান্ত ঘোষ-সহ বেশ কয়েকজন নেতা এখন জেলে। এ বার নন্দীগ্রামে ‘নিখোঁজ’দের তদন্তে নেমে সিপিএমের এক প্রাক্তন পঞ্চায়েত সদস্যকে গ্রেফতার করল সিআইডি। ধৃত অজিত বর খেজুরি ২ ব্লকের নিজকসবা পঞ্চায়েতের প্রাক্তন সদস্য।
বৃহস্পতিবার সিআইডি-র ডিআইজি (অপারেশন) কে জয়রামন বলেন, “আদালতের নির্দেশে আমরা জেলা পুলিশের কাছ থেকে তদন্তভার নিয়েছিলাম। তদন্তে বেশ কিছু তথ্য পাওয়া গিয়েছে। তার ভিত্তিতেই ওই প্রাক্তন পঞ্চায়েত সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে।”
সিআইডি সূত্রে খবর, অজিতবাবুর একটি ভুটভুটি রয়েছে। সেই ভুটভুটিতে চাপিয়ে দেহ লোপাট করা হয়েছিল বলে প্রাথমিক তদন্তে সিআইডি-র অনুমান। সে কারণেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতকে আজ, শুক্রবার হলদিয়া আদালতে তোলা হবে। তদন্তের স্বার্থে তাঁকে হেফাজতে নিতে সিআইডি আবেদন জানাবে। সিআইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, অজিত বরকে জেরা করে ওই ঘটনা সম্পর্কে আরও তথ্য জানতে চাইছে তারা। যাতে ওই ঘটনার পিছনে তমলুক ও হলদিয়ার আর কোন কোন নেতা জড়িত ছিলেন, তার হদিস পাওয়া যায়।
সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য নিরঞ্জন সিহি অবশ্য বলেন, “অজিতবাবু এক সময়ে আমাদের দলের পঞ্চায়েত সদস্য ছিলেন। তবে গত বিধানসভা নির্বাচনের পরে সন্ত্রাসের জেরে তৃণমূলের কাছে ‘আত্মসমর্পণ’ করেন। আমাদের দলকে অস্বস্তিতে ফেলতেই অজিতবাবুকে গ্রেফতার করা হয়েছে।”
২০০৭ সালের ১০ নভেম্বর সিপিএমের নন্দীগ্রাম ‘পুনর্দখল’-পর্বে নিখোঁজ ভূমি-উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির ৭ জনের ব্যাপারে তদন্তে এ দিন তেখালির কাছে গোকুলনগরের করপাড়ায় পরির্দশনে আসেন সিআইডি অফিসারেরা। এখানেই ভূমি-কমিটির মিছিলে সিপিএমের লোকজন হামলা চালিয়েছিল বলে অভিযোগ। ভূমি-কমিটির একাধিক সমর্থক গুলিবিদ্ধ হন। তাঁদের মধ্যে কয়েক জন আহতের পরে খোঁজ মিললেও ৭ জনের আর খোঁজ মেলেনি। অভিযোগ, ওই ৭ জনের দেহ নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছিল। করপাড়ার বধূ, সে দিনের ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী মাধবী ভুঁইয়ার জবানবন্দি নেন সিআইডি অফিসারেরা। আশপাশ এবং রাস্তার ছবি ভিডিও-বন্দি করা হয়। সোনাচূড়া থেকে এসে সে দিনের হামলার ‘শিকার’ রাধাকৃষ্ণ মণ্ডলও নিজের বক্তব্য জানান সিআইডিকে।
ভূমি-কমিটির মিছিল থেকে তাঁকে খেজুরির আমড়াতলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় এবং সেখানে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ রাধাকৃষ্ণের। গোকুলনগর, তেখালির আরও কয়েক জন বাসিন্দার সঙ্গেও কথা বলেন সিআইডি অফিসাররা। নন্দীগ্রাম থেকে সিআইডির প্রতিনিধিরা যান খেজুরির নিজকসবা এলাকার কটকা-শ্যামপুর গ্রামে। ক’দিন আগেই খেজুরির কয়েকজন মাঝিকে এই মামলায় জেরা করেছিল সিআইডি। এ দিনও সিআইডি-র ডেপুটি সুপার তাজ মহম্মদের নেতৃত্বে তদন্তকারী অফিসারেরা অজিত বর ও কয়েকজন মাঝিকে নদীর ধারে নিয়ে যান। সিআইডি সূত্রের খবর, সেখানে প্রায় দু’ঘন্টা ধরে নৌকোয় চাপিয়ে দেহ লোপাটের বিষয়টি অভিনয় করে দেখান অজিত ও অন্যরা। গোটা পর্বটি ভিডিও-বন্দি করা হয়। নদীর পাড়েই অজিতবাবুকে জেরা করেন সিআইডি অফিসারেরা। তদন্তকারীদের দাবি, সেখানেই জেরায় ভেঙে পড়েন অজিতবাবু। তখনই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। |
|
|
|
|
|