চাষ ও বসবাসের ভূমিদান প্রকল্পে ১৯ জন ভূমিহীন দরিদ্র মানুষকে জমি দান করা হল আরামবাগে।
তিরোল পঞ্চায়েতের সাহালালপুর গ্রামের ওই কয়েক জনকে মঙ্গলবার এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে জমির পাট্টা তুলে দেন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট গোপাল রানা। উপস্থিত ছিলেন আরামবাগের বিডিও মৃণালকান্তি গুঁই, আরামবাগ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অসীমা কুণ্ডু-সহ প্রশাসনের আধিকারিকেরা। অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি ও ভূমি সংস্কার) রবীন্দ্রনাথ জানা বলেন, “ভূমিহীনদের জমি কিনে দেওয়ার এই প্রকল্পের প্রক্রিয়া সমস্ত ব্লকেই শুরু হয়েছে। বিক্ষিপ্ত ভাবে কিছু দেওয়াও হয়েছে। প্রকল্পে গতি আনতে বিশেষ উদ্যোগ করা হচ্ছে।” একই সঙ্গে একই লপ্তে ১৯ জনকে জমি দান করে আরামবাগ ব্লক ‘দৃষ্টান্ত’ স্থাপন করল বলেও মন্তব্য করেন তিনি। আরামবাগ মহকুমায় এর আগে ২০১০ সালের জানুয়ারি মাসে গোঘাট ১ ব্লকের গোঘাট গ্রামে এক জনকে চাষ ও বসবাসের জমি কিনে দেওয়া হয়েছিল বলে প্রশাসন সূত্রের খবর। |
রাজ্য সরকারের এই প্রকল্পটি ২০০৬ সালে শুরু হয়েছিল। সে সময়ে প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ হয় ২০ কোটি টাকা। হুগলি জেলায় এই প্রকল্পের সূচনা হয় ২০০৮ সালে। সিঙ্গুরে এ ব্যাপারে উদ্যোগী হলেও জমির জটিলতায় প্রশাসন এই কাজে সাফল্য পায়নি। পরে গোঘাটে মাত্র ১ জনকে জমি দেওয়া হয়েছিল। প্রশাসন সূত্রের খবর, এই প্রকল্পের আওতায় আসবেন এলাকার গরিব মানুষের মধ্যেও ‘চরমতম দরিদ্র’ ভূমিহীন বা গৃহহীনেরা। উপভোক্তাকে অবশ্যই কৃষিজীবী হতে হবে। পরিবার-পিছু কম করে আড়াই কাঠা জমি তাঁদের কিনে দেওয়া হবে। জমি চিহ্নিত করার দায়িত্ব স্থানীয় পঞ্চায়েতের। বিজ্ঞাপন দিয়ে জমি কেনার ব্যবস্থা করা হবে। জমি কেনা থেকে পাট্টা তুলে দেওয়া পর্যন্ত সমস্ত প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে একটি কমিটি থাকবে। সেখানে বিডিও, ব্লক কৃষি আধিকারিক এবং ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক থাকবেন।
মঙ্গলবার আরামবাগের সাহালালপুর গ্রামের ওই ১৯ জন সাড়ে চার কাঠা করে জমির পাট্টা পেয়েছেন। ভোলা সেন, ভারতী অধিকারী, বিলাসিবালা সর্দার, সন্ধ্যা হাঁসদাদের মতো উপভোক্তাদের বক্তব্য, “এদ্দিনে মাথা গোঁজার একটা ব্যবস্থা হল। সব্জির বাগান, ডোবা করে মাছ চাষ সবই এ বার নিজস্ব হবে।” বিডিও মৃণালকান্তিবাবু বলেন, “মোট এক একর ৭১ শতক জায়গাটি রাস্তার ঠিক ধারেই পাওয়া গিয়েছিল। পানীয় জল, বিদ্যুতের ব্যবস্থা-সহ নানা সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা করে ওই পরিবারগুলিকে নিয়ে একটি নির্মল কলোনি গড়ার পরিকল্পনা আছে।” প্রশাসন সূত্রের খবর, এই উপভোক্তারা এ বার ইন্দিরা আবাস প্রকল্পের আওতায় বাড়ি তৈরির টাকাও পাবেন। |