অষ্টমীর দিন-রাতে জমজমাট চন্দননগর
ভিড় কেমন হতে পারে, ইঙ্গিত দিয়েছিল ষষ্ঠী।
বৃহস্পতিবার বিকাল গড়িয়ে রাত যত গাঢ় হয়েছে, সর্বত্র বেড়েছে মানুষের ভিড়। এ দিন থেকেই জি টি রোড এবং স্টেশন রোডের ধার ঘেঁষে লরিতে দশমীর শোভাযাত্রার আলো লাগানোর কাজ শুরু করতে দেখা গিয়েছে আলোক-শিল্পীদের। পথচারীরা সে দিকে তাকিয়ে দিন গুনেছেন। তার পরেই মিশে গিয়েছেন জনস্রোতে।
মানকুণ্ডু স্টেশন থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে জ্যোতির মোড় পর্যন্ত কয়েকটি বড় পুজো হয়। তাই কলকাতার দিক থেকে যাঁরা ট্রেনে আসছেন, তাঁদের বেশির ভাগই নেমে পড়ছেন মানকুণ্ডুতে। সেই ভিড় ছড়িয়ে পড়ছে জি টি রোড ধরে উত্তর দিকে। কখনও হাটখোলা দৈবকপাড়া, কখনও নোনাটোলা, কখনও বেশোহাটা, আবার কখনও বা কিছুটা দূরের হেলাপুকুর ধারে।
অম্বিকা অ্যাথলেটিক ক্লাবের কৃত্তিম স্বর্গ দেখে মানুষ অবাক হচ্ছেন। জাঁকজমকের অভাব নেই মরান রোড সর্বজনীনেরও। এক দিকে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে কল-কারখানার প্রয়োজনীয়তা, অন্য দিকে পরিবেশ নিয়ে সচেতনতা। গঙ্গার ধারঘেঁষা সাত দশকের পুরনো গোন্দলপাড়া মনসাতলার মণ্ডপ তৈরি হয়েছে ‘ফরাসডাঙ্গা রাজবাড়ি’র ধাঁচে। দেদার লোক টেনেছে চারমন্দিরতলা সর্বজনীনের পুজোটিও। চন্দননগর বারাসাত গেট সর্বজনীনের থিম ‘চুলের ফিতের রঙিন খেলা, লোকশিল্পের পুতুল মেলা’। চুলের ফিতে, পাখা, প্লাস্টিকের মালা দিয়ে তৈরি হয়েছে মণ্ডপ। বড়বাজার সর্বজনীন, আদি হালদারপাড়া, হালদারপাড়া ষষ্ঠীতলা, পাদ্রিপাড়া, পুজোর টানেও প্রচুর মানুষ এসেছেন।
আজ, শুক্রবার নবমী। বিভিন্ন পুজো কমিটিকে দেখা গেল বিশেষ ভোগের তোড়জোড় করতে। প্রতি বছরই নবমীতে চাউলপট্টি এবং তেঁতুলতলার মতো শহরের প্রাচীন পুজোগুলিতে বিশেষ পুজোর ব্যবস্থা করা হয়। দীর্ঘ লাইন পড়ে পুজো দেওয়ার জন্য। তার জন্যও বিশেষ পুলিশি ব্যবস্থা করা হয়। এ বারেও তার ব্যতিক্রম হচ্ছে না।
হুগলির পুলিশ সুপার তন্ময় রায়চৌধুরী জানিয়েছেন, উদ্যোক্তাদের উৎসাহ দিতে এবং পুজোয় সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে পুজো কমিটিগুলির জন্য বিশেষ পুরস্কারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিশিষ্ট শিল্পীদের নিয়ে তৈরি বিচারকমণ্ডলীই নির্বাচিত করেছেন পুজোগুলিকে। পুজো শেষ হলে একটি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ওই সব পুজো কমিটিকে পুরস্কৃত করা হবে।
জগদ্ধাত্রী পুজোর আনন্দে মেতে উঠেছে ‘মিনি চন্দননগর’ হিসাবে পরিচিত উলুবেড়িয়ার বাসুদেবপুর। এখানে জগদ্ধাত্রী পুজোর রোশনাই হার মানিয়ে দেয় দুর্গাপুজোকেও। বাউড়িয়া স্টেশন থেকে পাঁচলা পর্যন্ত রাস্তার ধারে তৈরি হয়েছে বড় বড় মণ্ডপ। এলাকা সেজে উঠেছে আলোকমালায়। দর্শনার্থীদের ভিড় উপচে পড়ছে।
প্রামাণিকপাড়ায় জগদ্ধাত্রী পুজো শুরু হয় ১৮৩০ সালে। জনা দশেক যুবকের প্রচেষ্টায়। পুজোর বর্তমান উদ্যোক্তাদের মধ্যে বিনোদবিহারী প্রামাণিক বলেন, “প্রথম প্রথম অনাড়ম্বর ভাবেই পুজো হত। পরে অবশ্য পুজোর সঙ্গে তাল মিলিয়ে আড়ম্বরও বেড়ে গিয়েছে।” বর্তমানে এই এলাকায় বারোয়ারি পুজোর সংখ্যা ১৩। জাঁকজমকে প্রতিটি পুজো অন্যকে টেক্কা দেওয়ার ক্ষমতা রাখে। রয়েছে তিনটি বাড়ির পুজোও। আড়ম্বরে সেই সব পুজোও কম যায় না।
শুধু বাসুদেবপুরই নয়, জগদ্ধাত্রী পুজো গত কয়েক বছরে ছড়িয়ে পড়েছে আশপাশের এলাকাতেও। রঘুদেবপুর, ঘোষালচক, সাহাপুর, বেলকুলাই, খয়জাপুর, সন্তোষপুর, ধামসিয়া, পাঁচলা মোড় প্রভৃতি এলাকাগুলিতে মোট ৪২টি পুজো হচ্ছে। প্রতিমা, মণ্ডপ বা আলোকসজ্জা দেখতে প্রতিদিনই উপচে পড়ছে ভিড়। যা ঠিক চন্দননগরের মতোই। বেশ কিছু জায়গায় এই উপলক্ষে মেলা বসে যায়।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.