টাটা মোটরসের দায়ের করা আপিল মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত সিঙ্গুরে জমি ফেরত বন্ধ থাকবে। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি পিনাকীচন্দ্র ঘোষ ও বিচারপতি মৃণালকান্তি চৌধুরীর ডিভিশন বেঞ্চ বৃহস্পতিবার এই স্থগিতাদেশ জারি করেছে। একই সঙ্গে জানানো হয়েছে, ৮ নভেম্বর থেকে দৈনিক এই মামলার শুনানি চলবে।
রাজ্যের সিঙ্গুর আইনকে বৈধ এবং সাংবিধানিক বলে বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় যে রায় দিয়েছিলেন, তাকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে আবেদন করে টাটা মোটরস। বৃহস্পতিবার এই মামলার শুনানি শুরু হয়। ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, যত দিন না এই আপিল মামলার নিষ্পত্তি হচ্ছে, তত দিন এই স্থগিতাদেশ বহাল থাকবে। অর্থাৎ, ডিভিশন বেঞ্চে মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত সিঙ্গুরের জমি বণ্টন করতে পারবে না রাজ্য সরকার।
সরকার পক্ষের অন্যতম আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় ডিভিশন বেঞ্চের কাছে জানান, সিঙ্গুরে টাটা মোটরসকে যে ৬৪৫ একর জমি লিজে দেওয়া হয়েছিল, তার উপরই স্থগিতাদেশ দেওয়া হোক। কিন্তু ডিভিশন বেঞ্চ কল্যাণবাবুর সেই আর্জি খারিজ করে দেয়।
সিঙ্গুরে যাঁরা অনুসারি শিল্প গড়ার জন্য জমি লিজ নিয়েছিলেন, তাঁদের পক্ষ থেকেও রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টে একটি মামলা করা হয়েছিল। বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় সিঙ্গুর মামলার শুনানির সময় ওই মামলা শোনেননি। তবে রায়ে তিনি জানিয়ে দেন, ওই আবেদনকারীরা সরাসরি আপিল মামলায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন। এ দিন বিচারপতি পিনাকী ঘোষের ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, অনুসারি শিল্পের জন্য জমি যাঁরা লিজ নিয়েছিলেন, তাঁদের আগামী মঙ্গলবার শুনানি শুরুর আগেই আবেদন করতে হবে।
বিচার্য বিষয়ের তালিকায় নাম না ওঠায় বুধবার সিঙ্গুর আইন নিয়ে টাটাদের দায়ের করা আপিল মামলার শুনানি শুরু করা যায়নি। মামলা শুরু না হওয়ায় ওই দিন মধ্যরাতের পর থেকে রাজ্য সরকার সিঙ্গুরে জমি বণ্টন শুরু করে দিতে পারে এই নিয়ে সংশয়ের সৃষ্টি হয়েছিল। কারণ, বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় তাঁর রায় কার্যকর না করার জন্য যে সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিলেন, তার মেয়াদ বুধবার মধ্যরাতেই শেষ হয়ে যাওয়ার কথা ছিল। বিষয়টি নিয়ে টাটা মোটরস প্রশ্ন তুললে ডিভিশন বেঞ্চ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত রাজ্য সরকারকে সিঙ্গুরের জমি বণ্টন সংক্রান্ত কোনও পদক্ষেপ না করতে অনুরোধ জানায়। সরকার পক্ষের আইনজীবীরা সেই অনুরোধ মেনে নেন।
|