|
|
|
|
ফের জামিন নাকচ, কোর্টেই কেঁদে ফেললেন কানিমোঝি |
নিজস্ব প্রতিবেদন |
বিচারকের নির্দেশ শোনার পরেই কান্নায় ভেঙে পড়লেন কানিমোঝি। কারণ দিল্লির আদালতে আজ আরও এক বার খারিজ হয়ে গেল তাঁর জামিনের আবেদন। কোর্ট সাফ জানিয়ে দিল, টু জি মামলায় কানিমোঝি-সহ বাকিদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আছে, তা ‘অত্যন্ত গুরুতর’। তাই জামিন সম্ভব নয়।
বিচারক ও পি সাইনি আজ কানিমোঝির পাশাপাশি কালাইনার টিভি-র অধিকর্তা শরদ কুমার, বলিউড ছবি-নির্মাতা করিম মোরানি, কুসেগাঁও ফ্রুটস অ্যান্ড ভেজিটেবলস-এর অধিকর্তা আসিফ বলওয়া এবং রাজীব অগ্রবাল, প্রাক্তন টেলিকম সচিব সিদ্ধার্থ বেহুরা, প্রাক্তন টেলিকম মন্ত্রী এ রাজার তৎকালীন ব্যক্তিগত সচিব আর কে চান্দোলিয়া এবং সোয়ান টেলিকম প্রোমোটার শাহিদ ওসমান বলওয়ার জামিনের আবেদনও খারিজ করে দিয়েছেন। বিচার শুরু হবে ১১ নভেম্বর।
এর আগে সিবিআই অবশ্য কানিমোঝি-সহ চার জনের জামিনের আবেদনে কোনও আপত্তি জানায়নি। সিবিআই আপত্তি না জানানোয় এ বার হয়তো জামিন পেয়ে যাবেন বলেই ধরে নিয়েছিলেন কানিমোঝি। কিন্তু সে আশায় জল ঢেলে দিয়ে কোর্ট বলেছে, ‘আইনের কাছে সিবিআইয়ের ওই অনুমতির কোনও আলাদা গুরুত্ব নেই।’ বিশেষ সিবিআই বিচারক ও পি সাইনি বলেছেন, “জামিনের আবেদন মঞ্জুর হবে কি না, সেটা নির্ভর করে মামলা সংক্রান্ত আইন, তথ্য এবং পরিস্থিতির উপরে।”
এই নিয়ে মোট চার বার জামিনের আবেদন খারিজ হয়ে গেল কানিমোঝির। গত ২০ মে থেকে তিনি তিহাড় জেলে বন্দি। আজ কোর্টের কাজ শুরু হওয়ার আগে কমলা রঙের সালোয়ার-কামিজে কিছুটা হাল্কা মেজাজেই রয়েছেন বলে মনে হয়েছিল। সঙ্গে ছিলেন তাঁর স্বামী, মা এবং ১১ বছরের ছেলেও। কানিমোঝির সমর্থনে কোর্টে এসেছিলেন ডিএমকে নেতা টি আর বালু এবং অভিনেত্রী খুশবু-সহ অনেকেই। কোর্টের নির্দেশ শোনার পরেই ছবিটা বদলে যায়। কানিমোঝি মা রজতী আম্মালকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে ফেলেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই নিজেকে সামলে নেন। ক্ষুব্ধ স্বরে সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘আমাকে একা থাকতে দিন।”
মেয়ের জামিন হয়নি শুনে হতাশ ডিএমকে প্রধান করুণানিধিও। তাঁর ঘনিষ্ঠরা জানিয়েছেন, সিবিআই আপত্তি না করায় করুণানিধিও আশা করেছিলেন মেয়ের জামিন এ বার অন্তত হয়ে যাবে। কোর্টের নির্দেশ শোনার পরে আত্মীয়-সহ কারও সঙ্গেই কথা বলেননি তিনি। তবে এর ফলে কংগ্রেসের সঙ্গে ডিএমকে-র জোটে কোনও প্রভাব পড়বে না বলেই দলের সূত্রে জানানো হয়েছে। পাশাপাশি কংগ্রেস শীর্ষ সূত্রে বলা হচ্ছে, কেন্দ্রের যে এ ক্ষেত্রে কিছুই করার নেই, তা ডিএমকে নেতারাও বুঝতে পারছেন। তবে আশা করা হচ্ছে, হাইকোর্টে আবেদন জানালে কানিমোঝি-সহ বাকিরা জামিন পেয়ে যাবেন। প্রকাশ্যে কিছু না বললেও ঘরোয়া আলোচনায় আদালতের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন কংগ্রেস নেতারা। তাঁদের মতে, রাজনৈতিক অস্থিরতায় বিচারব্যবস্থা অতি সক্রিয় হয়ে উঠেছে। জামিন না দেওয়ার কোনও যৌক্তিকতা নেই। সরাসরি এই মামলার প্রসঙ্গ না টানলেও দিগ্বিজয় সিংহ আজও বলেন, “বিচারাধীনদের অকারণে জামিন দেওয়া হচ্ছে না।”
ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৩৭ ধারায় মহিলাদের জামিন পাওয়ার যে সংস্থান আছে, তা উল্লেখ করে আবেদন জানিয়েছিলেন কানিমোঝির আইনজীবী। কিন্তু বিচারক সাইনি বলেছেন, সাধারণ ভাবে মহিলাদের সামাজিক ও অর্থনৈতিক ভাবে দুর্বল এবং বঞ্চনার শিকার বলে ধরে নেওয়া হয়। সেই যুক্তি অনুযায়ী ওই ধারায় মহিলাদের জামিন দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু বিচারকের মতে, কানিমোঝি এক জন সাংসদ, সমাজের উচ্চ স্তরের মানুষ। সুতরাং, তিনি দুর্বল, এই যুক্তি খাটে না। |
|
|
|
|
|