|
|
|
|
ট্যাঙ্ক সাফ করতে নেমে মৃত্যু যুবকের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • সিউড়ি |
একটি নির্মীয়মাণ বাড়ির জলের ট্যাঙ্ক পরিষ্কার করতে নেমে মৃত্যু হল এক দিনমজুরের। আরও দু’জন দিনমজুরকে অসুস্থ অবস্থায় সিউড়ি সদর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে সিউড়ির ডাঙ্গালপাড়ায়। মৃত যুবক লালচাঁদ শেখের (২১) বাড়ি সিউড়ির কাঁখুড়িয়া গ্রামে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শেখ আনিম ও গৌর অঙ্কুর। দু’জনেরই বয়স বছর পঁচিশ-ছাব্বিশ। মূক আনিমের বাড়িও কাঁখুড়িয়ায়। আর গৌর সিউড়ি থানার আমাইপুরের বাসিন্দা। |
|
এই গর্ত দিয়েই ট্যাঙ্কে ঢুকেছিলেন তিন জন। নিজস্ব চিত্র। |
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকাল ৯টা নাগাদ ওই নির্মীয়মাণ বাড়ির একতলার জলাধার সাফ করতে ছোট মুখের ঢাকনা খুলে প্রথমে ভিতরে নামেন লালচাঁদ। বেশ কিছু ক্ষণ তাঁর সাড়াশব্দ না পেয়ে আর এক জন ভিতরে ঢোকেন। তাঁরও সাড়া না পাওয়ায় তৃতীয় দিনমজুর ট্যাঙ্কের ভিতরে যান। ইতিমধ্যে পাড়ার কিছু লোকজন সেখানে জড়ো হয়েছেন। তিন জনের কেউই উঠছেন না দেখে এক ব্যক্তি দমকলে খবর দেন। সিউড়ি দমকল বিভাগের অফিসার শ্যামল মণ্ডলের নেতৃত্বে দমকলকর্মীরা দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে একে একে তিন জনকে উদ্ধার করেন। স্থানীয় একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা করে তিন জনকেই সদর হাসপাতালে পাঠায়। কর্তব্যরত চিকিৎসক লালচাঁদকে মৃত বলে ঘোষণা করেন, বাকি দু’জনকে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় ভর্তি করানো হয়।
দমকলকর্মীরা জানিয়েছেন, ওই ট্যাঙ্কটি বেশ কয়েক দিন আগে তৈরি হয়েছে। ট্যাঙ্কের ছোট মুখ বন্ধ করা ছিল। ভিতরে ছিল কাঠ-বাঁশ ও নোংরা জল। বন্ধ অবস্থায় ট্যাঙ্কের ভিতরে কাঠ-বাঁশ পচে ও নোংরা জলের মিশ্রণে বিষাক্ত গ্যাস তৈরি হয়েছিল। প্রাথমিক তদন্তে দমকলের অনুমান, ট্যাঙ্কের ভিতরে ঢুকে ওই বিষাক্ত গ্যাসেই মারা যান লালচাঁদ। বাকি দু’জনও অসুস্থ হয়ে পড়েন। তবে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত মৃত্যুর প্রকৃত কারণ সম্পর্কে স্পষ্ট হওয়া যাচ্ছে না।
এ দিকে, ছেলেকে হারিয়ে শোকস্তব্ধ লালচাঁদের বাবা শেখ সাহাজান। তাঁর কথায়, “সংসারে অভাবের কারণে বছর দুয়েক থেকে আমার ছেলে সিউড়িতে রাজমিস্ত্রির জোগাড়ের কাজ করছে। এমন যে হতে পারে, স্বপ্নেও ভাবিনি। বাড়ি ফিরে ওর মাকে কী বলব, তাই ভাবছি।” জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, “একটি ঠাকাদার সংস্থা বরাত পেয়ে বাড়িটি তৈরি করছিল। এখনও পর্যন্ত এ ব্যাপারে কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। তবে পুলিশ ঘটনার তদন্ত করছে।” |
|
|
|
|
|