|
|
|
|
জগদ্ধাত্রী পুজোর আলোয় উঠে এল সতর্কতার বার্তা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • রামপুরহাট |
এলাকায় রয়েছে রেলগেট, ওভারব্রিজ। কয়েক বছর আগে মালগাড়ির ধাক্কায় ওভারব্রিজ ভেঙে যায়। কিন্তু নতুন ওভারব্রিজ বা বিকল্প কিছু ব্যবস্থা না করে দেওয়ায় ঝুঁকি নিয়ে মানুষ যাতায়াত করছেন। বিপদের ব্যাপারে মানুষকে সচেতন করতে উদ্যোগী হয়েছে রামপুরহাটের স্থানীয় ইয়ুথ ইউনিট ক্লাব।
তারা এ বার জগদ্ধাত্রী পুজোয় আলোকসজ্জা ও মাইকে ঘোষণার মাধ্যমে মণ্ডল লাগোয়া রেলগেট ও রেললাইন পারাপার করার ব্যাপারে মানুষকে সচেতন করছেন।
রামপুরহাট পুরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের চিলড্রেন পার্কে ইয়ুথ ইউনিটি ক্লাবের জগদ্ধাত্রী পুজো রামপুরহাট-সহ আশপাশ এলাকার মানুষের মধ্যে বিশেষ জায়গা করে নিয়েছে। সুউচ্চ মণ্ডপ, আলোকসজ্জা, আতসবাজির প্রদর্শনী, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সব দিক দিয়েই এখানকার জগদ্ধাত্রী পুজো আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে। এ বারও পুজোর আয়োজনে কোনও খামতি নেই। এ বার তৈরি হয়েছে গির্জার আদলে ৪০ ফুট মণ্ডপ। মণ্ডপের সামনে ইলামবাজারের মুকাভিনয় শিল্পী বিনোদ মণ্ডল কখনও সাঁওতাল রমণী, শিব, রামকৃষ্ণ সাজছেন। আর তাঁকে ঘিরে ভিড় জমিয়েছেছেন দর্শনার্থীরা। |
|
রামপুরহাটে গির্জার আদলে মণ্ডপ। নিজস্ব চিত্র। |
আর মণ্ডপের ভিতরে মাটি থেকে ৮ ফুট উচ্চতায় রয়েছে পাঁচটি সিংহ। ওই সিংহগুলিকে বাহন করে থাকা জরির সাজে সজ্জিত জগদ্ধাত্রী মূর্তিকে যাতে দর্শন করতে পারেন সে জন্য মণ্ডপের দু’টিকে দু’টি সুউচ্চ সিঁড়ি আছে। সেই সঙ্গে আলোর মাধ্যমে ফুটে উঠছে রেললাইন পারাপার করার সাবধানতার বার্তা। সেখানে কোনও বোর্ডে মোবাইল কানে রাস্তা পারাপার, কোথাও মোটরবাইকে অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে পারাপারের সতর্কতার বার্তা আছে।
উদ্যোক্তাদের পক্ষে সভাপতি অচিন্ত্য চক্রবর্তী বলেন, “পুলিশ বিশেষ করে রামপুরহাট থানার আইসি অরুণাভ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে এ বছর এই সতর্কতার বার্তা আলোর মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে। তেমনি মাইকেও প্রচার করা হচ্ছে। শুক্রবার থেকে সোমবার পর্যন্ত নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। বিসর্জনের দিন মুর্শিদাবাদের কারিগরের তৈরি শব্দবাজি পোড়ানো হবে।” ১৪ নম্বর ওয়ার্ডেই ৩৫ বছর ধরে হয়ে আসছে দু’টি সর্বজনীন জগদ্ধাত্রী পুজো। রেলপাড় আরজিপার্টি এ বারে মানুষের সামাজিক জীবনে ধৈর্য্য, কর্তব্য, আনন্দ, সৌন্দর্যের প্রয়োজনীয়তাকে তুলে ধরেছেন এই পুজোয়। অন্যটি রেলকলোনির পুজো। এ ছাড়া, উল্লেযোগ্য পুজোগুলির মধ্যে রয়েছে দশেরপল্লি, শ্রীফলা মোড়ের সার্বজনীন জগদ্ধাত্রী পুজো, ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের মুখোপাধ্যায় বাড়ির পুজো, বিবেকানন্দ রোডের মিতালি সঙ্ঘের পুজো।
সর্বজনীন পুজোর পাশাপাশি ১০০ বছরের পুরনো শ্রীফলা রোডে হেমগোপাল মুখোপাধ্যায়ের বাড়ির জগদ্ধাত্রী পুজোর এলাকায় নামডাক আছে। পুজোর বর্তমান ধারক রামপুরহাট বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি স্বপনকুমার মুখোপাধ্যায় বলেন, “আগে জাঁকজমক সহকারে পুজো হত। বংশের এই পুজো মায়ের ইচ্ছানুসারে ১৯৭৪ সাল থেকে রামপুরহাটে হয়ে আসছে। এর আগে নলহাটি থানার দেশনবগ্রামে ১৯৫৫ সাল পর্যন্ত হয়ে এসেছে। পরে ১৯৭৩ সাল থেকে মুরারইয়ে গুসকিরা গ্রামে এই পুজো হয়।” এলাকার প্রাচীন পুজোগুলির মধ্যে অন্যতম বেলে গ্রামের ভট্টাচার্যবাড়ির পুজো। ১০৮ নরমুণ্ডের দেবীতে জগদ্ধাত্রী পুজো হয়। দেড়শো বছরের এই প্রাচীন পুজোর চার শরিক। এক শরিক সত্য ভট্টাচার্য বলেন, “একই বেদীতে দুর্গা ও জগদ্ধাত্রী পুজো হয়।” সব মিলিয়ে দুর্গাপুজোর মতো রামপুরহাটে জমে উঠেছে জগদ্ধাত্রী পুজো। |
|
|
|
|
|