|
|
|
|
|
ছুঁয়ে যাওয়ার পার্বণ |
ভিতর থেকে আপনার শরীর যদি তরতাজা থাকে, তা হলে সে জৌলুস ঠিকরে বেরবে, নিশ্চিত। আর তখনই তো
একে একে কত্ত তারিফ, পরি, তিলোত্তমা, স্বপ্ন...সে সূত্র ধরালেন রূপ বিশেষজ্ঞা থৃতি ইরানি, সোমি গুপ্তা |
নিজেকে মনে করে কী? হেলেন? দেখুন, ইলিয়াডের যুগ থেকে সুন্দরী সম্বন্ধে এই উক্তি চলে আসছে। ট্রয়-এর যুদ্ধ শুরু হয় হেলেনের জন্য আবার রাম-রাবণের যুদ্ধের কারণও তো সীতা। ক্লোজার টু হোম, অহনাকে নিয়ে বড়দা-ছোড়দার মনকষাকষি, আর টেপির জন্য দু’পাড়ায় পেটো ছোড়াছুড়ি এ’ও তো রোজকার ঘটনা। সুতরাং রূপের বশ সবাই, এ কথা মানতেই হচ্ছে।
সুতরাং, পুজোর কিছু দিন আগে থেকেই মেয়ে-বউদের দ্রুত পার্লার পরিক্রমা চালু। কে কত সুন্দরী হয়ে উঠবে।
|
ত্বক সোনা হবে... |
স্কিন থেরাপিস্ট থৃতি ইরানি মনে করেন যে, ত্বকের ঔজ্জ্বল্য কোনও ছোট ছেলের হাতের মোয়া নয় যে চাইলেই পাওয়া যাবে। এর জন্য দরকার নিয়মানুবর্তিতা ও শৃঙ্খলাবদ্ধ জীবনযাপন। কর্মব্যস্ত মেয়েদের জন্য থৃতি জানালেন, ত্বকের ঔজ্জ্বল্য আসে মূলত ডায়েট থেকে এবং পরের ধাপ, ত্বকের যত্ন। সুতরাং, এক নম্বর পরামর্শ সামনের এক মাস নিরামিষাশী হয়ে যান। খাওয়া-দাওয়ার একটা রুটিন তৈরি করে ফেলুন। সকালে সিরিয়াল জাতীয় কিছু খান। ওট হলে খুব ভাল, কারণ ওট সহজে খিদে পেতে দেয় না। দিনে তিন বার টোনড মিল্ক, দই খান। দুপুরে হালকা খাওয়ার চেষ্টা করুন আর দিনে একটা ফল অন্তত খান। সমস্ত ভাজাভুজি, মিষ্টি, নরম পানীয়, বাইরের খাবার সব ভুলে গেলেই ভাল। আট ঘণ্টা ঘুমিয়ে চোখের কালি তুলে ফেলুন। দেখবেন, ত্বক সোনা হয়ে উঠেছে।
প্রথমত, ত্বকের ধরন অনুযায়ী ত্বককে ভাল ভাবে পরিষ্কার করুন। কোনও স্কিন টনিক বা অ্যাস্ট্রিনজেন্ট লাগানোর পর ময়শ্চারাইজার ব্যবহার করবেন, যদি ত্বক তৈলাক্ত না হয়। এর পর সানস্ক্রিন মেখে বাইরে বেরতে হবে। প্রতি দিন যে-কোনও একটি স্ক্রাবার ব্যবহার অবশ্যই কর্তব্য, তবে ব্রন থাকলে একদম ঘষবেন না। স্ক্রাবার তৈরি করতে বেসন, আটা, মুসুর ডাল, চালের গুঁড়োর যে কোনও একটি, ডিমের সাদা অংশের সঙ্গে মিশিয়ে নেবেন। তৈলাক্ত ত্বকের জন্য বাড়তি লাগবে চন্দন।
পুজের চার দিন সবাই অল্পবিস্তর মেক-আপ করতে চান। মেক-আপের আগে ফ্রিজের ঠান্ডা জলে অথবা শশা’র রসে তুলো ডুবিয়ে মুখে বুলিয়ে নিন। শুকিয়ে গেলে মেক-আপ করে ফেলুন। তবে বরফ সরাসরি মুখে দেবেন না।
আমরা মুখের যত্ন নিয়ে খুব সচেতন, কিন্তু হাত-পায়ের দিকে নজর দিই না। অথচ কথা বলতে আরম্ভ করলে হাতটি সব থেকে প্রথমে চোখে পড়ে। প্রতি দিন রাত্রিবেলায় শোবার আগে হাতে ক্রিম লাগান। সপ্তাহে তিন দিন অল্প গরম জলে লিকুইড সাবান দিয়ে ডুবিয়ে রাখুন দশ মিনিট। নখের পাশগুলিতে একটু লেবু ঘষুন। যাঁদের হাতে কম সময়, তাঁরা পার্লারে গিয়ে অন্তত দু’বার ম্যানিকিয়োর করিয়ে নিন, তবেই একটি সুন্দর আংটি আঙুলে মানাবে। পায়ের যত্ন করতে আরও বেশি খাটতে হবে। প্রতি দিন স্নান করার সময় পিউমিস স্টোন ও ব্রাশ দিয়ে ঘষে মৃত কোষগুলিকে তুলে ফেলুন এবং পরে ময়শ্চারাইজার বা ক্রিম লাগান। |
ট্যান সরে গ্লো |
বিউটি কনসালটেন্ট সোমি গুপ্তা পুজোর আগে চকিতে চমক আনতে আরও কয়েকটি উপায় জানাচ্ছেন। প্রতিটি মানুষকে বিভিন্ন কাজে বাইরে বেরোতেই হয়, সুতরাং ট্যানের সমস্যা থেকেই যাচ্ছে। ট্যান চলে গেলেই ত্বকের ঔজ্জ্বল্য অনেকটাই ফিরে আসবে। কস্তুরী হলদি, চন্দন, ডিমের সাদা অংশ (তৈলাক্ত ত্বকের জন্য) মিশিয়ে একটি প্যাক তৈরি করে রাখুন। দেখবেন, ত্বক সাত দিনেই শাইন করছে। যাঁরা নিরামিষাশী, তাঁরা ওট সেদ্ধ ও কস্তুরী হলদি মিশিয়ে ব্যবহার করুন। বাসি রুটি দুধে বা জলে গুলে সমস্ত শরীরে লাগান, সাবানের পরিবর্তে। এটি খুব ভাল স্ক্রাবার। পিঠ ও হাতের কালো দাগ দূর করতে গাজর ও টমেটোর মিশ্রণ সব থেকে ভাল। সুন্দর হল্টার নেক ব্লাউজের সঙ্গে কালো পিঠ একেবারেই বেমানান। এ ছাড়া প্রায় প্রতিটি মেয়ের আর একটি সমস্যা হল ‘কালো গলা’। অর্থাৎ, মুখের রঙের সঙ্গে গলার রঙের তফাত। আমরা সারা দিনে যা-যা খাই, তার টক্সিনটি আমাদের গলায় জমে। যাঁরা মোটা, তাঁদের ক্ষেত্রে এটি স্পষ্ট ভাবে বোঝা যায়। সুতরাং, ওজন কমাতে হবে ও খাবারের দিকে নজর দিতে হবে। কলেজপড়ুয়াদের জন্য সব থেকে ভাল বাঁধাকপিসেদ্ধ জল। এতে ট্যান দূর হয় এবং গ্লো আসে।
মুখের ফেশিয়াল শুধু মাত্র ত্বকে গ্লো আনতে পারে না। এর জন্য প্রয়োজন বডি স্পা। সমস্ত শরীর রিল্যাক্সড হলেই ক্লান্তি দূর হয়। এর জন্য দরকার ডিটক্সিফায়িং বডি স্পা। এর মাধ্যমে শরীরের সমস্ত টক্সিন ও জমা ল্যাকটিক অ্যাসিড কমে যায়। এটির বিশেষত্ব, একটি হাতে গরম স্টোন ও অন্য হাতে ঠান্ডা স্টোন থাকে। মাসাজের সময় দু’টি হাত সমান্তরাল ভাবে চলে। এই স্পা’টি সম্পূর্ণ হলে মনে হয় শরীরের ওজন কমে গেছে। আসলে তা নয়। জমা টক্সিনটি বেরিয়ে যায়। একটু বয়স বাড়লে ভারতীয় মহিলাদের যে ব্যথার সমস্যা হয়, সেটি একেবারেই চলে যাবে নিয়মিত এই স্পা’টি করালে।
|
চটজলদি গ্লো প্যাক |
অ্যালোভেরা গাছ ভাঙলে একটু জেল বেরোয়। এই জেল-এর সঙ্গে মধু মিশিয়ে পুজোর চার দিন মেক-আপ করার আগে মাখুন। দেখবেন, ত্বক চকচকে হয়ে উঠেছে।
|
সাক্ষাৎকার: কস্তুরী মুখোপাধ্যায় ভারভাদা |
|
|
|
|
|