শনিবারের নিবন্ধ
বন্য হোন এ বার পুজোয়

তোমার সোজা, লম্বা, খোলা চুল মুখে এসে পড়ার মুহূর্তটাই আমার পুজোর সেরা মুহূর্ত।
ঠিক কী না?
ভুল ভুল।
তোমার পার্ম করা কোঁকড়া চুলটা কপালে এসে পড়ার মুহূর্তে তোমাকে কাছে টেনে আনাই আমার পুজোর সেরা মুহূর্ত।


প্রথমটায় কী রকম একটা মিষ্টি মিষ্টি নিরামিষ রোম্যান্টিকতা। আর দ্বিতীয়টায় বন্য চাওয়ার উদ্দামতা।
ঠিক জেন এক্স যা চায়!
যে জেন এক্সের কাছে শিউলি ফুল, নীল আকাশের পেঁজা তুলোর মতো মেঘের রোম্যান্টিকতা বড্ড সেকেলে!
তাদের কাছে পুজো মানে পাঁচ দিনের দেদার ফুর্তি। নির্ভেজাল আড্ডা। খানাপিনা এবং অবশ্যই তাক লাগিয়ে দেওয়া সাজে বন্ধুদের এবং আশেপাশে আরও অনেকের মাথা ঘুরিয়ে দেওয়া।
এই পাঁচ দিন তাদেরও ৩৬০ দিনের এক ঘেয়েমি থেকে দে ছুট। কলেজ-ক্লাস-টিউশন থেকে নিস্তার। ৩৬০ দিনের একঘেয়ে সাজগোজ থেকেও। নিজের সব কিছু অন্তত পাঁচটা দিনের ৫০টা মুহূর্তের জন্য আমূল বদলে ফেলা। যার জন্য দরকার একটা তাক লাগানো মেকওভার।

প্রিয়ঙ্কা বঢরা
কী ভাবে?
রাতারাতি নিজেকে বদলে নেওয়ার সব চেয়ে সহজ দাওয়াই তো একটাই। হেয়ারস্টাইল পাল্টে ফেলা। ব্যস, তা হলেই দেখবেন পুরো চেহারাটাই অন্য রকম হয়ে গিয়েছে। তবে শুধু চুলের রং পাল্টে বা স্ট্রিকিং না করিয়ে আর একটু অ্যাডভেঞ্চারাস হতে চান?
রাস্তা একটাইচুলটা নাটকীয় ভাবে পার্ম করিয়ে নিন।

পার্মিংই কেন, কেন নয় স্ট্রেটনিং?
পাঁচ জনের মধ্যে তিনটে মেয়ের চুলই এখন ইস্ত্রি করা চাদরের মতো পিঠে লেপটে থাকে। ওটাই তো ফ্যাশনের শেষ কথা!
আরে কী বোরিং ব্যাপার সেটা! সবাই যা করে আপনিও তাই করলে আর আলাদা হওয়া হল কীসে?
ভাল মেয়ে মানেই কানের পাশ দিয়ে পেতানো চুলএই ভাবনা থেকে বেরিয়ে নিজের মধ্যে একটু বন্য আবেদন এনে দেখুনই না? চুল ছোট হোক বা লম্বা। পার্ম করিয়ে এমন একটা পরিবর্তন নিয়ে আসুন চেহারায় যে, পাশের বাড়ির মিষ্টি মেয়ে ইমেজটা এক
ঝটকায় হয়ে যাক ‘ওয়াইল্ড বিউটি’র। যাকে দেখলেই পাড়ার রকেতে রকেতে হাঁটুর ঠোকাঠুকি। যে ঠোকাঠুকি ন্যাকা ন্যাকা প্রেমের আবেশ চায় না। চেহারায়, আবেদনে, বন্যতা এবং বাঁধ না মানার এক অমোঘ স্টেটমেন্টই তার কাছে বেশি কাঙ্ক্ষিত। কলেজ পড়ুয়া অন্বেষা রায় যেমন বলছে, “পার্ম করা চুলের অ্যাপিলটা অনেক বেশি। আমি দেখেছি আমার ছেলে বন্ধুদের কোঁকড়া চুলের কঙ্গনা রনৌতকে নিয়ে কী রকম হ্যাংলামো করতে। আমিও সেই অ্যাটেনশনটা চাই। এ বার পুজোয় তাই পামির্ং করাচ্ছিই।”

প্রিয়ঙ্কা থেকে লিন্ডসে লোহান
আরও কারণ চান চুলে বন্য কুঞ্চন আনার? তা হলে শুনুন, পার্মিং এখন ভীষণ ভাবে ফিরে এসেছে ফ্যাশন দুনিয়ায়। প্রিয়ঙ্কা বঢরা থেকে লিন্ডসে লোহানসবার মাথায়ই এখন কোঁকড়া চুলের বাহার। তা ছাড়া পাতলা চুলে ভলিউম আনার সেরা উপায়ও পার্মিং। চুল অনেক বেশি ঘন, অনেক বাউন্সি দেখাবে। পার্ম করিয়ে নিলে কোনও বিশেষ হেয়ারস্টাইল না করলেও চিন্তা নেই। খোলা চুলেই আপনাকে দারুণ ফ্যাশনেব্ল দেখাবে। কিংবা চুলের পাশে আটকে নিতে পারেন একটা পাথর বসানো ক্লিপ। ব্যস। চুলের সাজ কমপ্লিট। আপনারও। সঙ্গে শাড়ি চলবে, চলবে ছোট ঝুলের ড্রেসও।
কর্পোরেটের কর্মী সুস্মিতা বসুর কথায়, “আমার লম্বা চুলের পার্মে টেনে খোঁপা করে বড় টিপ আর তাঁতের শাড়িও যেমন যায়, তেমনি চুলটা জাস্ট খোলা রেখে শর্ট ড্রেসেও দারুণ ভাবে নিজেকে সাজিয়ে নিই।” তা হলে, আর কী চাই? হাওয়ায় সোজা চুল না উড়িয়ে এ বার কপালে পড়ে থাকা এক থোকা কোঁকড়া চুলের বন্য আবেদনে আবেগের ঢেউ উঠুক চার দিকে।
আর আপনার পুজো শরতের কাশ বনের একঘেয়ে রোম্যান্টিকতা ছাড়িয়ে আছড়ে পড়ুক বন্য উদ্দামতায়।

পার্মের হিসেব-নিকেশ
পার্মানেন্ট বা দীর্ঘস্থায়ী পার্ম না করিয়ে টেম্পোরারি মানে কয়েক সপ্তাহের জন্য পার্ম করিয়ে রাতারাতি যে চেঞ্জটা চাইছেন সেটা এনে ফেলতে পারেন।
যাদের চুল লম্বা, তারা স্পাইরাল পার্ম ট্রাই করুন। চুলকে স্ক্রুর মতো দেখাবে। আশির দশকে জনপ্রিয় এই হেয়ারস্টাইল এখন খুব একটা চোখে না পড়লেও আপনি হারিয়ে যাওয়া ট্রেন্ড ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করুন।
জেন এক্স-এর অনেক মেয়ে আবার চান নরম, ন্যাচারাল কার্লস। এতে বন্যতার সঙ্গে একটা মিষ্টত্ব আসে চেহারায়। হলিউডের মেঘ রায়ানের মতো। ছাড়া ছাড়া হাল্কা ঢেউ খেলানো চুল যাদের পছন্দ, তারা স্পাইরাল

কঙ্গনা রনৌত
পার্ম না করিয়ে এ রকম পার্ম করে দেখতে পারেন। এ ক্ষেত্রে চুল কতটা লম্বা তা দিয়ে কিছু যায় আসে না। প্রিয়ঙ্কা গাঁধীর মতো ছোট চুলেও যেমন এই পার্ম চলে আবার কঙ্গনা রনৌতের লম্বা চুলেও।
মনে রাখবেন, মুখের গঠন অনুযায়ী পার্মের স্টাইল বেছে নিতে হবে। যাঁদের মুখ লম্বাটে, তাঁরা মাথার দু’পাশের চুলে ভলিউম আনা পার্ম করাবেন। কক্ষনো উপরের দিকে নয়। এতে মুখটা আরও লম্বাটে দেখাবে। সেটা নিশ্চয়ই আপনি চান না।
রং করা চুলে পার্ম একেবারেই না। আগে পার্ম করিয়ে নিন, তার পর কালারিংয়ের কথা ভাবুন।
আর এ সব কিছুই করুন ভাল কোনও পার্লার থেকে। ভাল হেয়ার স্টাইলিস্টের পরামর্শ অনুযায়ী।

সাজগোজের পার্ম
“পার্মিং তো এ বারের পুজোয় অন্যতম ট্রেন্ড হতে যাচ্ছে,” বলছেন মেক-আপ আর্টিস্ট অনিরুদ্ধ চাকলাদার। আর সেই সঙ্গে তাঁর পরমার্শ, “মনে রাখবেন, পার্ম করা চুলের সঙ্গে দু’ধরনের মেক-আপ যায়। একটা, ‘নুড’ বা ন্যাচারাল লুক। হাল্কা লিপস্টিক, চোখে একটু কাজলের ছোঁয়া। চুলের পাশে একটা অর্কিড লাগিয়ে নিন। কোঁকড়া চুলটাই এখানে আপনার সব চেয়ে নজর-কাড়া অ্যাক্সেসরি। ব্যস, সাজ শেষ।” ছোট ড্রেস বা বড় ঘেরের ছোট স্কার্টের সঙ্গে এই মেক- আপ করে দেখুন। কেউ চোখ ফেরাতে পারবে না!
আর অন্যটা? “স্মোকি লুক। যেটা কোঁকড়া চুলের আবেদনের পারদটা আরও চড়িয়ে দেবে। চোখে ঘন স্মাজ করা কাজল, মাসকারা, গাঢ় লিপস্টিক আর খোলা চুল।” শাড়ি বা ককটেল ড্রেসের সঙ্গে ট্রাই করলে পাড়ার প্যান্ডেলে আপনিই চুম্বক!


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.