এক বছর আগের কথা। ‘সন্দেহভাজন’ মাওবাদীদের খোঁজে তার গ্রামে গিয়েছিল যৌথ বাহিনী। উঠেছিল পুলিশি অত্যাচারের অভিযোগ। জঙ্গল-লাগোয়া চিলগোড়া গ্রামের স্কুলছাত্র রঞ্জিত সোরেন সে দিন যৌথ বাহিনীর হাতে মার খেয়েছিল।
সে সব এখন অতীত। ‘যন্ত্রণা’ ভুলে রঞ্জিত শুক্রবার পুলিশের ফুটবল ম্যাচে দাপিয়ে বেড়াল!
রঞ্জিতের কথায়, “পুলিশের সেই অত্যাচার ভুলে যাওয়ারই চেষ্টা করি। তখন পরিস্থিতি এক রকম ছিল। এখন অন্য রকম। পুলিশের অত্যাচারও কমেছে।” পাশাপাশি তাঁর মন্তব্য, “পুলিশের এই উদ্যোগ গ্রামে গ্রামে সাড়া ফেলেছে।” |
অতীত ভুলে জীবনের ছন্দে ফিরতে চাইছে গোটা জঙ্গলমহল। রঞ্জিত সোরেন, নীলকমল সিংহরা চাইছেন শান্তি। সঙ্গে এলাকার সার্বিক উন্নয়ন। পুলিশের উদ্যোগে ক’দিন আগেই শুরু হয়েছে ‘জঙ্গলমহল কাপ’। মাওবাদী প্রভাবিত এলাকায় রোজই ফুটবলের আসর বসছে। স্থানীয় যুবকরাই বল পায়ে মাঠে নামছেন। শুক্রবার এমনই একটি ম্যাচ হয়ে গেল মেদিনীপুর সদর ব্লকের চাঁদরা হাইস্কুলের মাঠে। সকাল থেকেই মাঠে উৎসাহীদের ভিড়। মেদিনীপুর কোতোয়ালি থানা এলাকার মোট ২০টি দল জঙ্গলমহল কাপে অংশ নিচ্ছে।
এ দিন প্রথম খেলায় মুখোমুখি হয় চিলগোড়া আদিবাসী সঙ্ঘ ও নয়াগ্রাম একাদশ। চিলগোড়া একাদশের হয়ে খেলল রঞ্জিত, নীলকমল, শুকদেব দাসরা। ওরা সকলেই চাঁদরা হাইস্কুলের ছাত্র। দশম শ্রেণির ছাত্র শুকদেবের কথায়, “এমন ফুটবল ম্যাচ প্রতি বছর হলেই ভাল। আমাদের মতো ছেলেরা খেলার সুযোগ পাবে।” একই মত নীলকমলের। সে বলে, “ভাবতেই পারছি না আমরা এমন ফুটবল টুর্নামেন্টে খেলছি, যেখান থেকে সেরারা জার্মানিতে গিয়ে প্রশিক্ষণ নেবে।” নয়াগ্রাম একাদশের অজয় চালকও পুলিশের প্রশংসায় পঞ্চমুখ।
কেতোয়ালি থানা এলাকায় ‘জঙ্গলমহল কাপে’র সূচনা উপলক্ষে চাঁদরা হাইস্কুল মাঠে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। উপস্থিত ছিলেন মেদিনীপুরের (সদর) মহকুমাশাসক সুরজিৎ রায়, আইসি পবিত্র বন্দোপাধ্যায় প্রমুখ। ছিলেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর কর্তারা। |