|
|
|
|
আচমকা বৃষ্টিও বাঁচাতে পারল না ধোনিদের |
অশোক মলহোত্র |
ম্যাচটায় শেষ পর্যন্ত ইংল্যান্ড জিতলেও, খুব জরুরি তথ্য হল, শেষ পাঁচ ওভারে ভারত তুলেছিল ৬০ রান। কারণ জাডেজা আর অশ্বিন। তবু বলব, ২৩৪ ভদ্রস্থ স্কোর হতে পারে, ম্যাচ জেতার পক্ষে যথেষ্ট ছিল না। কারণ উইকেট ব্যাটিংয়ের পক্ষে খুব ভাল, বল তেমন সুইংও করছে না। তার উপর ভারতের বোলিং একেবারেই পাতে দেওয়ার মতো নয়। দ্বিতীয় পাওয়ার প্লে শেষ হওয়ার সময় শুধু কুককে হারিয়ে ইংল্যান্ড ছিল ১৫ ওভারে ৭৯-১। এরপর হঠাৎ বৃষ্টি নামে। তখন ইংল্যান্ড ৯৫-৩। আবার যখন খেলা শুরু হয়, তখন ডাকওয়ার্থ লুইস নিয়ম অনুযায়ী ইংল্যান্ডের পরিবর্তিত লক্ষ্য হয়, ৪৩ ওভারে ২১৮। ওই রানটা তুলতে ইংল্যান্ডের কোনও অসুবিধে হয়নি। হাসতে হাসতেই ম্যাচ বের করে নিয়ে গেল কুকরা। |
|
ভারতকে জেতার রাস্তায় ফেরানোর চেষ্টা জলে গেল অশ্বিন ও জাডেজার। শুক্রবার ওভালে। |
কিন্তু এই যে ভারত ৫৮-৫ থেকে স্কোরটা এই জায়গায় পৌঁছেছিল, তার পিছনে জাডেজা (৮৯ বলে ৭৮) আর অশ্বিন। বিশেষ করে অশ্বিন (১৯ বলে ৩৬ নট আউট) যে ইনিংসটা খেলল, তার তুলনা হয় না। এমনিতেই ওয়ান ডে টিম থেকে ওকে বাদ দেওয়া কঠিন, তার উপর ব্যাটিংটা যদি এত ভাল করতে পারে তো কথাই নেই। শুধু উঁচুতে মেরে ছক্কার চেষ্টা নয়, স্লগ ওভারে অসম্ভব মাথা খাটিয়ে ব্যাটিংটা করল। সাত নম্বরে নেমে ১০৩ বলে করা ধোনির ৬৯ নিয়ে কয়েকটা কথা। ইংরেজিতে যাকে বলে পার্সেন্টেজ ক্রিকেট, এটা হল সেই ধরনের ক্রিকেট। মোটামুটি একটা চলনসই ইনিংস খেলে বুঝিয়ে দেওয়া যে আমার কাজটা তো আমি করেছি। আসলে ক্রমাগত হারতে থাকা ক্যাপ্টেনকে এই সিরিজে বেশ অসহায় লাগছে। বিশ্বকাপের সময় ‘ক্যাপ্টেন কুল’ থাকা ধোনি মাত্র পাঁচ মাসে কী করে ‘ক্যাপ্টেন ভুল’ হয়ে গেল, বুঝতে পারছি না। এ কোন ধোনিকে দেখছি? প্ল্যান এ ফেল করলে কোনও প্ল্যান বি-র অস্তিত্বই তো দেখছি না। প্রথম কথাই হল, বিশ্বকাপের সময় যদি ব্যাটিং অর্ডারে চার নম্বরে আসতে পারে, এখানে কেন আসবে না? কীসের সমস্যা? কেন সাত নম্বরে নামছে ধোনি? ও যত বল খেলতে পারবে, তত টিমের লাভ। অথচ সেটাই হচ্ছে না।
বলা যেতেই পারে, প্রথম দশ ওভারে পাঁচটা উইকেট (৫৮-৫) চলে যাওয়ার পরে ধোনিকেই ইনিংসটা ধরতে হয়েছে। তর্কের খাতিরে ব্যাপারটা যদি মেনেও নিই, বলতেই হবে, এই ভারতকে দেখে মনে হচ্ছে, কবে সফরটা শেষ হবে। ওই যে বলে না, ক্যাপ্টেন ততক্ষণই ভাল, যতক্ষণ তার টিম ভাল। এখানেও তাই হচ্ছে। সচিন, সহবাগ, গম্ভীর, যুবরাজ, জাহির, হরভজন নেই---সঙ্গে সঙ্গে বোঝা যাচ্ছে ভারতের ওয়ান ডে টিমের রিজার্ভ বেঞ্চের কী অবস্থা। কেন অমিত মিশ্র খেলছে না বা মুনাফ পটেল ১২০ কিলোমিটার গতি নিয়ে দিনের পর দিন খেলে যাচ্ছে, সেই প্রশ্নও তো তোলা যায়। |
|
উড়ান। জাডেজার শট বাউন্ডারি পৌঁছনোর পথে রাস্তা ছেড়ে দিচ্ছে পায়রারাও। শুক্রবার ওভালে। |
সুরেশ রায়নার কথায় আসি। এ বারের ইংল্যান্ড সফর ওর সীমবদ্ধতাটা একেবারে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে। টেস্টে খেলতে পারেনি, টেকনিকে সমস্যা মানা গেল। কিন্তু ওয়ান ডে-তে তো খেলবে। টিমের ভাইস ক্যাপ্টেন এত দায়িত্বজ্ঞানহীন হতে পারে, ভাবতে পারছি না। মোটেই নতুন নয়, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পাঁচ-ছয় বছর হয়ে গেল, ওকে সিনিয়র ক্রিকেটার হিসেবেই ধরতে হবে। কিন্তু যে শটটা খেলে আউট হল, তার কোনও ক্ষমা নেই।
বরং ক্লিক করে গেল জাডেজা। সেই তুলনায় মনোজের ভাগ্য খারাপ। দেশ থেকে উড়ে গিয়ে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে একটা ম্যাচে নেমে পড়তে হয়েছিল। সেখানে বেশি বল খেলার সুযোগই পায়নি মনোজ। নেমেই চালাতে হয়েছিল। আর রবীন্দ্র জাডেজা এই ম্যাচটায় ওর জায়গায় নামল এবং দামি ইনিংস খেলে দিল। কপাল ছাড়া কী বলা যায় একে? অবশ্য জাডেজা বোলিংটাও পারে, এটা ওর পক্ষে গিয়েছে।
|
ছবি: রয়টার্স
|
স্কোর
ভারত |
পার্থিব বো অ্যান্ডারসন ৩
রাহানে ক ট্রট বো অ্যান্ডারসন ০
দ্রাবিড় রান আউট ২
কোহলি ক কেইসওয়েটার বো অ্যান্ডারসন ৭
রায়না ক কেইসওয়েটার বো ব্রড ২১
ধোনি ক কুক বো ব্রেসনান ৬৯
জাডেজা ক বেল বো ডার্নবাচ ৭৮
অশ্বিন ন: আ: ৩৬
প্রবীণ ন: আ: ১
অতিরিক্ত ১৭
মোট ২৩৪-৭ (৫০ ওভারে)
পতন: ১, ৯, ১৩, ২৫, ৫৮, ১৭০, ২২৯
বোলিং: অ্যান্ডারসন ৯-১-৪৮-৩, ব্রেসনান ১০-২-৩২-১, ডার্নবাচ ১০-১-৫৩-১,
ব্রড ৯-১-৪৭-১, সোয়ান ১০-০-৩১-০, বোপারা ২-০-১৬-০।
|
ইংল্যান্ড |
কুক এলবিডব্লিউ মুনাফ ২৩
কেইসওয়েটার বো জাডেজা ৫১
ট্রট বো অশ্বিন ১১
বেল ন:আ: ১৮
স্টোকস ন:আ: ৭
অতিরিক্ত ৩
মোট ২৩ ওভারে ১১৩-৩
পতন: ৬৩, ৮৭, ৮৯
বোলিং: প্রবীণ ৪-০-২০-০, আরপি ৫-০-২৫-০, মুনাফ ৪-০-২৭-১,
জাডেজা ৫-০-২৩-১, অশ্বিন ৫-০-১৯-১।
|
(স্কোর অসম্পূর্ণ) |
|
|
|
|
|
|
|