|
|
|
|
শ্রীরামপুর কলেজ |
ছাত্র সংঘর্ষে পঠনপাঠন লাটে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • শ্রীরামপুর |
ফের ছাত্র সংঘর্ষের ঘটনা ঘটল শ্রীরামপুর কলেজে। শুক্রবার ছাত্রীদের কটূক্তি করা নিয়ে কলেজের এসএফআই এবং তৃণমূল ছাত্র পরিষদের (টিএমসিপি) মধ্যে বিবাদ থেকে হাতাহাতি বাধে। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামলায়। বিঘ্নিত হয় পঠনপাঠন।
শুধু শুক্রবারই নয়, এর আগে পর পর দু’দিন দুই ছাত্র সংগঠনের মারামারিতে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে কলেজ। এই পরিস্থিতিতে পঠনপাঠন লাটে উঠেছে বলে অভিযোগ অভিভাবকদের। পরিস্থিতি এমনই, প্রায় প্রতিদিনই পুলিশকে কলেজে যেতে হচ্ছে গোলমাল থামাতে। কলেজের পরিবেশ নিয়ন্ত্রণে রাখতে কর্তৃপক্ষ ব্যর্থ বলেও অভিযোগ।
পুলিশ ও কলেজ সূত্রের খবর, শুক্রবার দুপুর ৩টে নাগাদ দু’পক্ষের বচসায় উত্তেজনা ছড়ায় কলেজ চত্বরে। বাইরে সিপিএম এবং তৃণমূলের লোকজন জড়ো হয়েছিলেন। গোলমাল বাড়তেই তাঁরা ভিতরে চলে আসে। গোলমাল আরও বাড়ে। বচসা থেকে শুরু হয় হাতাহাতি। মারামারিতে ছাত্রীরাও জড়িয়ে পড়েন। কলেজের ভিতরে মারপিটের জের ছড়িয়ে পড়ে বাইরেও। সেখানেও দু’দলের ছেলেদের মধ্যে হাতাহাতি বাধে। এই পরিস্থিতিতে বেগতিক বুঝে শ্রীরামপুর থানায় খবর দেওয়া হয়। পুলিশ এসে গোলমালকারীদের নিরস্ত করে।
জেলা পুলিশের এক কর্তা জানান, ভবিষ্যতে ‘এমন আচরণ আর করবেন না’ বলে, দু’পক্ষের সদস্যেরাই লিখিত প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তিনি বলেন, “বহিরাগতরা কলেজ চত্বরে ঢুকে পড়ছে। তাতে গোলমাল আরও বাড়ছে। আমরা কর্তৃপক্ষকে বলেছি, বহিরাগতদের কলেজ চত্বরে প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ করতে।” প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবারেও এসএফআই এবং টিএমসিপি সমর্থকদের মধ্যে গোলমাল হয় কলেজে। একই কাণ্ড ঘটেছিল বুধবারেও। কিছু দিন আগেই কলেজের মেন হলে নবাগত ছাত্রছাত্রীদের জন্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বহিরাগতদের ঢোকা নিয়েও উত্তেজনা ছড়িয়েছিল।
কলেজের ছাত্র সংসদ দীর্ঘদিন ধরেই এসএফআইয়ের দখলে রয়েছে। বছর দু’য়েক ধরে অবশ্য টিএমসিপি একটু একটু করে নিজেদের অস্তিত্ব বাড়িয়েছে। কলেজ সূত্রের খবর, বেশ কিছুদিন ধরেই ছোটখাটো নানা বিষয়ে গোলমাল লেগেই থাকছে দু’টি সংগঠনের মধ্যে। সম্প্রতি গণ্ডগোলের মাত্রা বেড়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কলেজের একাধিক শিক্ষকের আশঙ্কা, যা চলছে, তাতে পঠনপাঠনের ক্ষতি হচ্ছে। এখনই কড়া ব্যবস্থা না নেওয়া হলে সমস্যা আরও বাড়বে।
কলেজের উপাধ্যক্ষ (কলা-বাণিজ্য-বিজ্ঞান) অমলকুমার দত্তের দাবি, “কলেজের ভিতরে মারামারির কোনও ঘটনাই ঘটেনি। যা হয়েছে বাইরে।” তিনি বলেন, “কলেজের ভিতরে ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হতে পারে। এর বেশি কিছু নয়।” দুই ছাত্র সংগঠনই গোলমালের দায় পরস্পরের উপরে চাপিয়েছে, এসএফআইয়ের হুগলি জেলা সম্পাদক অনিন্দ্য ভট্টাচার্য বলেন, “কলেজের ভিতরে-বাইরে বিশৃঙ্খলা করছে টিএমসিপি-র ছেলেরা। ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি করে অন্যায় ভাবে সংসদের দখল নিতে চাইছে। বহিরাগতদের এনে মারধর করছে আমাদের সমর্থকদের।” অভিযোগ অস্বীকার করে টিএমসিপি-র জেলা সম্পাদক শুভজিৎ সাউয়ের দাবি, “ওই কলেজে ক্রমশই আমদের সংগঠন শক্তিশালী হচ্ছে। এতেই ভয় পেয়ে এসএফআইয়ের ছেলেরা আমাদের সমর্থকদের উপর হামলা করছে। বহিরাগতদের ওরাই আনছে, আমরা নয়।” |
|
|
|
|
|