|
|
|
|
|
|
|
আপনার সাহায্যে... |
|
মুড়ি-মুড়কির মতো ওষুধ কিনে খাবেন না |
কিডনির সর্বনাশ হবে। সতর্ক করলেন ডা. শৈবাল রক্ষিত। |
কেউ কেউ নিজেরাই দোকান থেকে মুড়ি-মুড়কির মতো ওষুধ কিনে খাচ্ছেন। তাতেই নাকি কিডনির সর্বনাশ হচ্ছে?
হ্যাঁ ।
তাই?
হচ্ছেই তো। সবাই এত ‘স্ট্রেসড লাইফে’ থাকছে। সেই সঙ্গে জাঙ্ক ফুড। ফলে কম বয়সেই রক্তের চাপ বেড়ে যাচ্ছে। ডায়াবেটিস ধরা পড়ছে। সেগুলো ঠেকাতে ইচ্ছে মতো বাজার থেকে ওষুধ কিনে খাচ্ছেন। আর কিডনিরও বারোটা বাজছে।
তা হলে?
দু’দিন জ্বর হল। অমনি নিজেই ইচ্ছে মতো অ্যান্টিবায়োটিক কিনে খেলেন। এটা বন্ধ করতে হবে।
অ্যান্টিবায়োটিক কিডনি খারাপ করে দেবে?
শুধু অ্যান্টিবায়োটিক কেন, প্রায় সব ধরনের ওষুধ লাগাম-ছাড়া ভুলভাল খেলে কিডনির ক্ষতি হতে পারে। তবে বয়স বেশি হলে অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যাপারে সাবধান। ডায়াবেটিস, হার্ট, লিভার ও কিডনির কোনও রকম সমস্যা থাকলে তো নয়ই।
ওই সব সমস্যা থাকলে কি অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়া বন্ধ?
দরকারে তো খেতে হবে। কিডনির সমস্যা আছে কি না দেখে ডাক্তার ডোজ ঠিক করে দেবেন।
অ্যান্টিবায়োটিক তো বুঝলাম। আর কী ধরনের ওষুধের ব্যাপারে সতর্ক হব?
সব ওষুধ। এই ধরুন একটু-আধটু ব্যথা হল। না জেনেই পেন কিলার খেয়ে ব্যথা কমালেন। সঙ্গে কিডনিরও দফারফা হল।
ব্যথার ওষুধ খেয়ে কিডনি ফেলিওর হয়েছে, আবার চিকিৎসা করে ভাল হয়ে গেছেন। এমনও তো হয়?
ওই আশায় থাকবেন না। এ সব রোগীকে হাসপাতালে রেখে ডায়ালিসিস করতে হয়। প্রয়োজনে স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধও দিতে হতে পারে। |
|
ছবি: ওঙ্কারনাথ |
সামান্য গা-হাত-পা ব্যথা বা মাথাব্যথা হলেও ছুটতে হবে ডাক্তারের কাছে?
প্যারাসিটামল বা ট্রেমাডল জাতীয় ব্যথার ওষুধ দু’চার দিন খেয়ে দেখবেন। না কমলে ডাক্তার দেখাতেই হবে।
মাইগ্রেন বা আর্থ্রারাইটিসের ব্যথাও সহ্য করব?
পেন থেরাপির ডাক্তার দেখাবেন। টেনশন কম করবেন। দরকারে যোগা, ফিজিওথেরাপি করবেন। ভাল হোমিওপ্যাথি ট্রিটমেন্টও করতে পারেন। তবে গাছ-গাছড়ার দ্বারস্থ হবেন না।
গাছ-গাছড়া কী ক্ষতি করল?
প্রকৃতি থেকে নেওয়া মানেই ভালএমনটা ঠিক নয়। শেকড়-বাকড়ে থাকা খনিজ পদার্থ অনেক সময় কিডনির ক্ষতি করে ফেলে। কিডনির সমস্যা আছে, অথচ না জেনেই রক্ত বাড়াবার জন্য কুলেখাড়া খাচ্ছেন। এতে উল্টে কিডনির ক্ষতি হতে পারে।
তবে কি শাক পাতা খাব না?
শাক পাতার কথা তো বলিনি। কিডনির সমস্যা থাকলে কোনও রকম হার্বাল মেডিসিন খাবেন না। স্বাভাবিক মানুষেরও হার্বাল মেডিসিন খেয়ে কিডনি খারাপের প্রমাণ আছে। বিশেষ করে রোগা হওয়ার জন্য।
কিডনির খারাপ হচ্ছে বুঝব কী করে?
প্রথম দিকে খেতে ইচ্ছে করবে না। বমি বমি ভাব, দুর্বলতা, গা হাত পা ব্যথা, চুলকানি হতে পারে। সঙ্গে চোখের পাতা আর পা ফুলে যেতে পারে। প্রস্রাব কম হবে। নিঃশ্বাসের কষ্ট হতে পারে।
অ্যাসপিরিন নিয়মিত খেলেও নাকি কিডনি খারাপ হয়?
সম্ভাবনা আছে।
কিন্তু হৃদরোগের জন্য তো অনেক সময় অ্যাসপিরিন খেতে বলে?
দরকারে খেতে বলা হয়।
এ দিকে হার্টের জন্য অ্যাসপিরিন খেতে হবে, ও দিকে খেলে কিডনি খারাপ হবে। এ তো দু’দিকেই বিপদ।
সেটা ডাক্তার বুঝবেন। দরকারে ওষুধ বদলে দেবেন। আসলে কিডনির সমস্যা হলে অনেক রকম ওষুধ দেওয়া যায় না। এমনকী অ্যাঞ্জিওগ্রাফি বা সিটি স্ক্যানের জন্য ডাই দিতে বারণ করা হয়।
ধরুন কিডনির সমস্যা আছে। আবার অ্যাঞ্জিওগ্রাফি করতে হবে। তখন?
কিডনি অল্প খারাপ থাকলে ফ্লুইড, বিশেষ ধরনের ওষুধ আর কম ডাই দিয়ে পরীক্ষা করা যায়। বেশি খারাপ থাকলে কিডনি ফেলিওর হতে পারে। লাগতে পারে ডায়ালিসিস।
খারাপ কিডনির জন্য ডায়ালিসিসই ভরসা?
দরকারে তো করতেই হবে।
সে তো ভারী কষ্টের?
না। সূচ ফোটানোর কষ্টটুকু হজম করতে হয়। তা ছাড়া এখন তো ডায়ালিসিস বাড়িতেই করা যায়। অফিসে কাজকর্মের ফাঁকেও করে নিতে পারেন। তবে বাড়িতেই হোক বা হাসপাতালে ক্রনিক রেনাল ফেলিওর হলে ডায়ালিসিসটা করে যেতে হবে।
কিডনি ভাল রাখব কী করে বলুন তো?
প্রচুর জল খাবেন। দিনে দু’-তিন লিটার। প্রস্রাবের বেগ চেপে রাখবেন না। প্রেসার ও সুগারকে বশে রাখবেন। |
সাক্ষাৎকার: রুমি গঙ্গোপাধ্যায়
যোগাযোগ ৯৮৩০১৬৮৭৪৮ অথবা ২২৮৩-৭৪০৭
|
সংশোধন
গত সপ্তাহে প্রকাশিত ডা. মনোজ খন্নার যোগাযোগ
নম্বরটি ভুল ছিল। হবে ৯৮৩০০৮৫৫০৬। |
|
|
|
|
|
|