ঠিক হয়েছিল, সিঁড়ির জায়গায় বসবে এসক্যালেটর। তাই ভেঙে ফেলা হয় দু’টি সিঁড়িই। কিন্তু কয়েক লক্ষ টাকা ব্যয় এবং প্রায় সাত মাস ধরে যাত্রীদের চূড়ান্ত হয়রানির পরে দেখা গেল, নকশা তৈরির ক্ষেত্রেই গলদ রয়ে গিয়েছে। দমদম জংশন স্টেশনের এক নম্বর সাবওয়েতে তাই এখন ভেঙে ফেলা সেই সিঁড়িই ফের গড়ে তুলতে হবে। কারণ, এত দিনে ইঞ্জিনিয়ারেরা বুঝতে পেরেছেন, একটি জায়গায় যান্ত্রিক সিঁড়ি বা এসক্যালেটর বসানোই সম্ভব নয়।
|
দমদম স্টেশনে এখানেই চলছিল এসক্যালেটর বসানোর কাজ। ছবি:অর্কপ্রভ ঘোষ |
পূর্ব রেল সূত্রের খবর, প্রায় সাত মাস আগে দমদম স্টেশনের সাবওয়ের দু’টি সিঁড়ি ভেঙে এক নম্বর ও তিন নম্বর প্ল্যাটফর্মে ওঠার জন্য এসক্যালেটর বসানোর পরিকল্পনা করা হয়। সেই মতো ভেঙে ফেলা হয় সিঁড়ি দু’টি। কিন্তু এসক্যালেটর তৈরির সময়ে দেখা যায়, এক নম্বর প্ল্যাটফর্মে এসক্যালেটর বসাতে গেলে লাগোয়া মেট্রো রেলের প্ল্যাটফর্মও ভাঙতে হবে। তাতে বিপর্যয়ের আশঙ্কা রয়েছে। তাই পরিকল্পনা বাতিল করে ওই জায়গায় ফের সিঁড়ি তৈরির তোড়জোড় শুরু করেছেন পূর্ব রেল-কর্তৃপক্ষ। সাত মাস ধরে কাজ চলার ফলে অফিসের ব্যস্ত সময়ে চরম ভোগান্তি হয়েছে নিত্যযাত্রীদের। প্রতি দিন ধুলো আর প্রচণ্ড আওয়াজের মধ্যে যাতায়াত করতে হয়েছে বলে অভিযোগ। কংক্রিটের সিঁড়ি ভাঙার পরে কাদা-জল বার করার জন্য সাবওয়ের মধ্যে বসানো হয় লম্বা পাইপ। সেই পাইপ মেট্রো স্টেশনে যাওয়ার রাস্তার মধ্যে দিয়ে আনা হয় প্ল্যাটফর্মের বাইরে। অভিযোগ, ওই পাইপে পা আটকে পড়ে বহু যাত্রীর জখম হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। যাত্রীদের আরও অভিযোগ, বারবার বলা সত্ত্বেও রেল-কর্তৃপক্ষ পাইপের উপর দিয়ে চলাচলের জন্য কোনও ‘কভার’ তৈরি করেননি।
|
ভাবিয়া করিও কাজ |
পরিকল্পনা |
খরচ |
ফল |
দমদম-বিমানবন্দর লাইন |
৭০ কোটি |
যাত্রী নেই |
দোতলা ট্রেন |
৫০ কোটি |
চালানো যাচ্ছে না |
কালনাগিনী নদীর উপরে সেতু |
১৫ কোটি |
ভাঙতে হয়েছে |
|
বিশরপাড়া-কোদালিয়ার বাসিন্দা, বৃদ্ধ বসন্ত ভট্টাচার্যের কথায়, “পাইপে পা আটকে পড়ে গিয়ে আমি মারাত্মক চোট পাই। অস্ত্রোপচারের পরে প্রায় এক মাস হাসপাতালে শুয়ে থাকতে হয়। ঘটনাটি রেল-কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। তবু পাইপ সরানো হয়নি। এখন ওই সাবওয়ে দিয়ে যাতায়াত করতে রীতিমতো ভয় হয়।”এই গলদ সম্পর্কে পূর্ব রেলের কর্তারা জানান, দু’নম্বর প্ল্যাটফর্মে এসক্যালেটর ঠিকই বসছে। কিন্তু গোলমাল হয়েছে এক নম্বর প্ল্যাটফর্মের সিঁড়িটি নিয়ে। রেলের এক পদস্থ কর্তা বলেন, “কাজ শুরুর পরে মেট্রো-কর্তৃপক্ষ তাঁদের ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজারের ভবন তৈরির কথা জানানোয় সিঁড়ির জায়গাটি পরিবর্তন করতে হচ্ছে।” কিন্তু কাজ শুরুর আগে এ কথা জানা গেল না কেন? এর উত্তর অবশ্য এড়িয়ে গিয়েছেন ওই কর্তা। তবে এ প্রসঙ্গে মেট্রো-কর্তৃপক্ষ জানান, তাঁদের ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজারের কোনও পদ নেই। তাই ভবন তৈরির কোনও প্রশ্নও ওঠে না। |