রাজ্য প্রশাসনের সদর দফতর মহাকরণ। সেখানে অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা ঢেলে সাজতে বেসরকারি সংস্থার দ্বারস্থ হচ্ছে রাজ্য সরকার। আগুনের সঙ্গে লড়াই করতে মহাকরণে একটি ছোট দমকল স্টেশন তৈরি করা হচ্ছে। ওই ভবনের দু’নম্বর গেটে দমকলের একটি ইঞ্জিন মোতায়েন রাখা হবে। প্রতিটি শিফ্টে থাকবেন এক জন অফিসারও। সোমবার থেকেই এই ব্যবস্থা চালু হয়ে যাবে। অগ্নি নির্বাপণের ব্যবস্থা জোরদার করতে সিসিটিভি বসানোরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সেই সঙ্গেই ফ্রি স্কুল স্ট্রিটে দমকলের মূল ভবনের সামনের রাস্তা ‘নো পার্কিং জোন’ করা হবে। মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, দমকলের গাড়ি যাতে তাড়াতাড়ি বেরোতে পারে, সেই জন্য সব সময় রাস্তা পরিষ্কার রাখতে হবে। সেই কথা মেনেই দমকল তাদের সদর দফতরের সামনের রাস্তাকে সারা ক্ষণ যানজটমুক্ত রাখার চেষ্টা করছে।
বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর বৃহস্পতিবার একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করে। দমকলের ডিজি-সহ বিভিন্ন আধিকারিকের সঙ্গে সেখানে সবিস্তার আলোচনা করেন দমকলমন্ত্রী জাভেদ আহমেদ খান। বৈঠকে ঠিক হয়েছে, মহাকরণের অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা ঢেলে সাজতে বেসরকারি সংস্থাকে দিয়ে সমীক্ষা করানো হবে। মহাকরণের ‘হেরিটেজ’ বা ঐতিহ্যবাহী চারিত্র বজায় রেখে অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে আরও ভাল ভাবে। পূর্ত দফতরের সহযোগিতায় এই কাজ করবে দমকল বিভাগ। মহাকরণে যত্রতত্র সিগারেট খাওয়া বন্ধ করতে ‘স্মোকিং জোন’ তৈরিরও সিদ্ধান্ত নিয়েছে ওই দফতর। মন্ত্রী বলেন, “অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা ঢেলে সাজার সঙ্গে সঙ্গে কোথায় কী হচ্ছে, সিসিটিভি-র মাধ্যমে তার উপরে নজর রাখা হবে। সেই জন্য দু’টি কন্ট্রোল রুম খোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।” একটি কন্ট্রোল রুম খোলা হবে মহাকরণে এবং অন্যটি লালবাজারে। মন্ত্রী জানান, আগুন লাগা, সিগারেট খাওয়ার ঘটনা সবই ধরা পড়বে সিসিটিভি-তে। তেমন কিছু দেখতে পেলে মহাকরণে দমকল বিভাগের কর্মী ও পুলিশ এই ব্যাপারে লোকজনকে সতর্ক করতে পারবেন।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে সরকারের রাজস্ব বাড়ানোর কথা আগেই বলেছেন। সেই লক্ষ্যে বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর এ বার রাজ্যের প্রতিটি ক্ষুদ্র শিল্পতালুক এলাকায় গিয়ে শিবির করে অগ্নি নির্বাপণের লাইসেন্স দেওয়ার ব্যবস্থা করবে। পুজোর
আগেই এই ধরনের শিবির করা হবে কসবার শিল্পতালুকে। দমকলমন্ত্রী বলেন, “ওই শিবির থেকে প্রাথমিক ভাবে তিন বা ছ’মাসের জন্য লাইসেন্স দেওয়া হবে। স্থায়ী লাইসেন্সের জন্য আবেদন করতে হবে পরে। কেউ যদি তা না-করে, আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” এতে কী কাজ হবে?
এর ফলে দু’টি কাজই হবে বলে মনে করছেন দমকলমন্ত্রী। তিনি বলেন, “লাইসেন্স দেওয়ার জন্য সরকারের রাজস্ব আসবে। আবার আগুন লাগার বিপদ থেকেও অনেকটা রক্ষা পাওয়া যাবে।’’ |